মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫, ১৬ আষাঢ় ১৪৩২

ইসরাইলি বিমান হামলায় জ্বলছে গাজা উপত্যকা 

রাতের আকাশে বিস্ফোরণের আলো, আগুনের লেলিহান শিখা, ঘন ধোঁয়ার কুণ্ডলী।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  ৩০ জুন ২০২৫, ১৮:২৩
আপডেট  : ৩০ জুন ২০২৫, ১৯:৫৮
ইসরাইলি বিমান হামলায় জ্বলছে গাজা উপত্যকা 
সংগৃহীত

গাজা উপত্যকার বিভিন্ন এলাকায় ইসরাইলি বিমান বাহিনীর ব্যাপক হামলায় শত শত ফিলিস্তিনি পরিবার ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে। স্থানীয় সূত্র ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, বিমান হামলায় অন্তত ৫ জন নিহত এবং বহু মানুষ আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে অনেককে গাজা সিটির আল-আহলি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়েছে।

এই হামলা এমন এক সময়ে চালানো হলো, যখন ইসরায়েলি সেনাবাহিনী উত্তর গাজার বিস্তীর্ণ অংশে বসবাসকারীদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল- যা মার্চ মাসে যুদ্ধ পুনরায় শুরু হওয়ার পর অন্যতম বৃহৎ স্থানত্যাগের নির্দেশনা।

গাজা সিটির পূর্বাংশে অবস্থিত শুজাইয়া, তুফাহ এবং জাইতুন এলাকায় ব্যাপক বিমান হামলার খবর পাওয়া গেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওগুলোতে দেখা গেছে, রাতের আকাশে বিস্ফোরণের আলো, আগুনের লেলিহান শিখা এবং ঘন ধোঁয়ার কুণ্ডলী।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জাইতুন এলাকার একটি স্কুলে বিমান হামলা চালানো হয়, যেখানে বহু বাস্তুচ্যুত মানুষ আশ্রয় নিয়েছিল। নিহতদের মধ্যে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে আল-শাতি শরণার্থী ক্যাম্পে চালানো এক হামলায়।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী (IDF) আগেই উত্তর গাজার অনেক এলাকার বাসিন্দাদের সতর্ক করে সরে যেতে বলেছিল, কিন্তু অধিকাংশ মানুষ দক্ষিণে যাওয়ার পরিবর্তে গাজা সিটির পশ্চিমাংশে সরে আসে।

জাইতুন থেকে পালিয়ে আসা সাত সন্তানের মা আবির তালবা বলেন, “আমরা সবকিছু ফেলে চলে এসেছি। ফোনে আরবিতে বার্তা এসেছিল—এটা এখন যুদ্ধক্ষেত্র, অবিলম্বে ছেড়ে যেতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “এই নিয়ে সাতবার আমাদের ঘর ছাড়তে হলো। এখন আমরা আবার রাস্তায়, না আছে খাবার, না পানি। আমার সন্তানরা ক্ষুধায় কাঁদছে। মৃত্যুই হয়তো এর চেয়ে সহজ।”

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নতুন করে এই স্থানত্যাগের নির্দেশ ও লাগাতার বিমান হামলা ইসরায়েলের স্থল অভিযান আরও গভীরে সম্প্রসারণের ইঙ্গিত দিতে পারে।

তবে ইসরায়েলি গণমাধ্যমের মতে, কিছু জেনারেল এখন মনে করছেন, গাজায় সামরিক লক্ষ্যের বেশিরভাগই অর্জিত হয়েছে। সাবেক সামরিক কর্মকর্তারাও আশঙ্কা করছেন, এই যুদ্ধ যদি গেরিলা যুদ্ধের রূপ নেয়, তবে তা আরও বেশি জিম্মি, বেসামরিক নাগরিক এবং সেনা সদস্যের মৃত্যুর কারণ হতে পারে।

প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ এখন নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। যদিও তিনি এখনো যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া ও হামাসকে পরাজিত করার পক্ষেই রয়েছেন, তবুও ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক চাপ ক্রমেই বাড়ছে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির চুক্তি করার জন্য।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে