বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন বাতিলের হাইকোর্ট রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিলের রায় ঘোষণা করা হবে আগামীকাল রোববার (১ জুন)। আপিল বিভাগের রবিবারের কার্যতালিকায় মামলাটি এক নম্বরে রাখা হয়েছে। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ রায় ঘোষণা করবেন।
এর আগে ১৪ মে, চার দিনের শুনানি শেষে আপিল বিভাগ রায়ের জন্য ১ জুন দিন ধার্য করে। জামায়াতের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী এহসান এ সিদ্দিক এবং মোহাম্মদ শিশির মনির। নির্বাচন কমিশনের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন আইনজীবী তৌহিদুল ইসলাম।
শুনানির দিন আদালতে জামায়াতের শীর্ষস্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন, যাদের মধ্যে ছিলেন ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মাছুম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জোবায়ের, অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন হেলাল, নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসাইনসহ ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখার নেতারা।
২০০৮ সালের ৪ নভেম্বর জামায়াতে ইসলামীর সাময়িক নিবন্ধন দেয় নির্বাচন কমিশন। ২০০৯ সালে বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, জাকের পার্টি ও সম্মিলিত ইসলামী জোটের নেতৃবৃন্দ জামায়াতের নিবন্ধনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন।
২০১৩ সালের ১ আগস্ট হাইকোর্ট জামায়াতের নিবন্ধনকে অবৈধ ঘোষণা করে। রায়ে বলা হয়, নিবন্ধনটি আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত। জামায়াত আপিলের অনুমতি পেলেও আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি একই বছরের ৫ আগস্ট জামায়াতের আবেদন খারিজ করেন। পরবর্তীতে ২ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হলে জামায়াত আপিল করে।
২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর আপিল বিভাগ সেই আপিল খারিজ করে দেয়। শুনানির সময় জামায়াতপক্ষে আইনজীবীরা অনুপস্থিত থাকায় মামলা ‘ডিসমিস ফর ডিফল্ট’ হিসেবে খারিজ হয়। পরে আদালতের অনুমতিতে মামলাটি পুনরুজ্জীবনের আবেদন করা হয়।
২০২৪ সালে আওয়ামী লীগ সরকার পুনরায় নির্বাচিত হওয়ার পর, কোটা বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সূত্র ধরে রাজনৈতিক অস্থিরতা শুরু হয় এবং ১ আগস্ট সরকার জামায়াতে ইসলামীসহ তাদের অঙ্গসংগঠন নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।
তবে ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের সময় ২৮ আগস্ট সেই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়। এরপর জামায়াত আপিল বিভাগে নিবন্ধন সংক্রান্ত মামলাটি পুনরুজ্জীবনের আবেদন করে। আদালত বিলম্ব মার্জনা করে ২২ অক্টোবর আবেদন মঞ্জুর করেন।