মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১

জল্লাদ শাহজাহানের কষ্ট বুঝলো না টিকটকার তরুণী

যাযাদি ডেস্ক
  ০২ এপ্রিল ২০২৪, ১৪:৪১
আপডেট  : ০২ এপ্রিল ২০২৪, ১৪:৫০
-ফাইল ছবি

৪৪ বছরের কারাগারে থেকে যে কষ্ট পাননি জল্লাদ শাহজাহান, মুক্ত জীবনে এসে তার চেয়ে বেশি কষ্ট পেয়েছেন। কারাগারে একের পর এক ফাঁসির আসামীদের ফাঁসি কার্যকর করা এই জল্লাদ এক টিকটকার তুরুনীর প্রেমে পড়ে ফেঁসে গেছেন। তার চেয়ে ৩৫ বছরের ছোট মেয়েকে বিয়ে করে তিনি বুঝতে পেরেছেন কাজটা ঠিক হয়নি। কারণ বয়সের এতো ব্যবধান মানিয়ে নেয়া যায় না।

যাকে তিনি মনেপ্রাণে ভালোবেসে বিয়ে করে সব উজাড় করে দিয়েছেন সেই টিকটকার তরুণী তাকে ফাঁকি দিয়ে চলে গেছেন। তার নামে করেছেন মামলা।

জানা যায়, কারাগারে একের পর ফাঁসি কার্যকরে অংশ নিয়ে পরিচিত মুখ হয়ে ওঠেন জল্লাদ শাহজাহান ভূঁইয়া। দীর্ঘ ৪৪ বছর কারাভোগের পর ২০২৩ সালের ২৮ জুন মুক্তি পান তিনি। পরে একটি চায়ের দোকান দিয়ে ফেরেন স্বাভাবিক জীবনে। এসময় এক টিকটকার তরুণীর সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

সেই সম্পর্ক গড়ায় বিয়েতে। কিন্তু এই বিয়ে করেই সর্বস্ব হারিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।

গতকাল সোমবার (০১ এপ্রিল) সংবাদ সম্মেলনে আয়োজন করে জল্লাদ শাহজাহান এ দাবি করেন।

তিনি ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, একদিন কেরানীগঞ্জের কদমতলি থেকে যাওয়ার পথে সিএনজি অটোরিকশার মধ্যে একটি ভ্যানিটি ব্যাগ পাই। ব্যাগে থাকা কাগজপত্র থেকে পাওয়া ফোন নম্বরে কল করে আমি ব্যাগটি নিয়ে যেতে বলি। ব্যাগের মালিক সাথী আক্তার ফাতেমা, ওরা যে এত বড়ো একটা প্রতারক চক্র তা জানতাম না। ওদের চক্রে কয়েকজন নারী ও পুরুষ আছে। তারাই বিয়ের সময় সাক্ষী হয়েছে এবং আমার বিরুদ্ধে করা মামলায়ও সাক্ষী হয়েছে।

জল্লাদ শাহজাহান বলেন, এতো কষ্ট সইবো কি করে। যাকে ভালোবাসলাম সে চলে গেলো। আমি একা হয়ে গেলাম।

শাহজাহান অভিযোগ করে বলেন, সাথী আক্তার ফাতেমার আগেও পাঁচ জায়গায় বিয়ে হয়েছে বলে শুনেছি। ব্যাগ নিতে আসার পর মেয়ে ও তার মায়ের সঙ্গে আমার পরিচয়। পরে মেয়েটির সঙ্গে আমি বেশ কয়েকবার কথা বলি। এক পর্যায়ে মেয়ে ও তার মা জুরাইন থেকে গোলামবাজার চলে আসে। তার মা আমার বাসায় রান্নার কাজ নেন।

শাহজাহান আরও বলেন, পরিচয়ের দেড় মাস পর ২১ ডিসেম্বর পাঁচ লাখ টাকা দেনমোহরে আমার বিয়ে হয়। তবে মা-মেয়ে বিয়ের আগেই নানা কৌশলে আমার থেকে দেড় লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। আর বিয়ের দিন একশত টাকার তিনটি স্ট্যাম্পে একটি অঙ্গীকারনামা স্বাক্ষর করে আমার আরও দশ লাখ টাকা নিয়ে নেয়।

এরপর বিয়ের দুই মাসের মাথায় আমার স্ত্রী নগদ সাত লাখ টাকা ও স্বর্ণ অলংকার নিয়ে পালিয়ে যান। আমি এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ করতে গেলে তারা নেয়নি, পরে জানতে পারি ১৫ ফেব্রুয়ারি সাথী আক্তার ফাতেমা আমার বিরুদ্ধে ঢাকার আদালতে মামালা করেছে।

প্রসঙ্গত, প্রতারণার অভিযোগে স্ত্রী সাথী আক্তার ফাতেমা ও শাশুড়ি শাহিনুর বেগমসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন জল্লাদ শাহজাহান ভূঁইয়া। গত রোববার (৩১ মার্চ) ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এ. কে. এম. রকিবুল হাসানের আদালতে এ মামলা করেন তিনি। মামলার অন্য আসামিরা হলেন শাহজাহানের শ্বশুর বাড়ির স্বজন দীন ইসলাম, আজিদা বেগম, রাসেল ও বাবলু।

আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে অভিযোগেরে বিষয়ে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্ত করে ২৭ জুন প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে