ভারতের কলকাতায় খুন হওয়া বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারকে খুনের পর প্রথম তার দেহ থেকে হাড়-মাংস আলাদা আলাদা করা হয়। তারপর সেগুলোর মধ্যে বিভিন্ন পাউডার জাতীয় দ্রব্য মিশানো হয়। এরপর মাংস ও দেহের হাড়গুলোকে কেটে টুকরো টুকরো করা হয়। পরে এসব মাংস ও হাড় ওজন দেয়া হয়। তারপর প্যাকেট করা হয়।
জানা যায়, আনারের দেহের মাংস ও হাড় আলাদা করে ফেলে কসাই জিহাদ ও তার সঙ্গী সিয়াম। এরপর তার সঙ্গে থাকা ছোট ওজনযন্ত্রে মাংসের টুকরো গুলো ওজন করে দেখে নিয়েছিল জিহাদ। একেকটি মাংসের টুকরা ছিল ৭০ থেকে ১০০ গ্রাম।
সূত্রের বরাত দিয়ে সোমবার ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সংবাদমাধ্যম সংবাদ প্রতিদিন সোমবার রাতে এক বিশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, সংসদ সদস্য আনারের হলুদমাখা দেহের টুকরা একটি ট্রলিতে করে হস্তান্তর হয়েছিল নিউ টাউনের একটি পাবলিক টয়লেটে। খুনের মূল অভিযুক্ত আমানুল্লাহ ওই পাবলিক টয়লেটেই তার সঙ্গী জিহাদ হাওলাদারের হাতে তুলে দিয়েছিল ওই ট্রলি। সোমবার জিহাদকে সঙ্গে নিয়েই ওই পাবলিক টয়লেটে হানা দিয়েছিল বাংলাদেশের গোয়েন্দা কর্মকর্তরা।
সে সময় কসাই জিহাদকে সঙ্গে নিয়ে নিউ টাউনের ফ্ল্যাটসহ ঘটনাস্থল ও ভাঙড় এলাকার বেশ কয়েকটি জায়গায় গিয়ে আনোয়ারুল আজিম আনার খুন ও তার দেহাংশ পাচারের ঘটনার পুনর্গঠন করে পুলিশ।
মঙ্গলবার সকালে ঝড়বৃষ্টির মধ্যেই জিহাদকে নিউ টাউনের অভিজাত বহুতলের ফ্ল্যাটে নিয়ে যান গোয়েন্দারা। আনারকে খুনের পর তার দেহের মাংস ও হাড় আলাদা করে ফেলে এই জিহাদ ও তার সঙ্গী সিয়াম। পেশায় কসাই জিহাদ আন্দাজে মাংস কেটে তার সঙ্গে থাকা ছোট ওজনযন্ত্রে কয়েকটি মাংসের টুকরা ওজন করে দেখেও নিয়েছিল। একেকটি মাংসের টুকরা ছিল ৭০ থেকে ১০০ গ্রাম। আজিমের মাথা আধখানা করে তা-ও টুকরা টুকরা করে দেওয়া হয়। জিহাদের দাবি, মাথার টুকরা অন্য দুই অভিযুক্ত মোস্তাফিজুর ও ফয়জল অন্য টুকরার সঙ্গে আলাদা ট্রলিতে পুরেছিল। ওই টুকরাগুলো দু’জন বনগাঁ সীমান্তের কাছে যশোর রোডের উপর ফেলে দেয়।
প্রসঙ্গত, ১২ মে চিকিৎসার জন্য ভারতের পশ্চিমবঙ্গে যান সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার। সেখানে তিনি প্রথমে বরাহনগরে স্থানীয় বন্ধু গোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে ওঠেন। ১৩ মে তিনি গোপালের বাসা থেকে বেরিয়ে নিউটাউনের একটি ফ্ল্যাটে যান। ওই ফ্ল্যাটটি আনোয়ারুল আজিমের বন্ধু আক্তারুজ্জামান ভাড়া করেছিলেন। সেখানেই তাকে হত্যা করা হয়।
যাযাদি/ এস