শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫, ৬ আষাঢ় ১৪৩২

‘ড. ইউনূসের উপদেষ্টারা ঘর থেকে বের হন না’ 

যাযাদি ডেস্ক
  ২০ জুন ২০২৫, ১৩:০২
‘ড. ইউনূসের উপদেষ্টারা ঘর থেকে বের হন না’ 
ছবি সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের মন্ত্রীরা (উপদেষ্টারা) ঘর থেকে বের হন না বলে মন্তব্য করেছেন নিউ এইজ পত্রিকার সম্পাদক নূরুল কবীর।

তিনি বলেছেন, ‘ড. ইউনূসের সরকারের মন্ত্রীরা নিয়মিত রাজনৈতিক সরকারগুলোর মতো ভাষণ দেন না। তার মন্ত্রীরা ঘর থেকে বের হন না। তারা সারা দিন সকাল-সন্ধ্যা অফিস করেন। আর সন্ধ্যার পর কিছু ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে কী সব ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করেন। জনগণের সামনে ভাষণ দিতে দেখি না।’

বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল আই-এর টক শো তৃতীয় মাত্রার অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন নূরুল কবীর।

নূরুল কবীর আরো বলেন, ‘সারা পৃথিবীর ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নানা অবিচার-অত্যাচার সত্ত্বেও জনগণের জন্য তারা যুগের পর যুগ ধরে কতগুলো অধিকার নিশ্চিত করতে পেরেছে, যেটা আমরা এখনো করতে পারিনি। এ রকম একটা সময় গেলে হয়তো বাংলাদেশও এমন একটা সিস্টেম প্রবর্তন করতে পারে। তাই এখন পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার হোয়াইট হাউসের সঙ্গে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থা আর ইউএসের ইন্টেরিম অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের তুলনা করে লাভ নেই।’

তিনি বলেছেন, ‘ড. ইউনূস সরকারের একটা অন্যতম কীর্তি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, শেখ পরিবারের নামে প্রায় দেড় হাজার স্থাপনার যে নাম ছিল তা তারা বদলেছেন। শেখ পরিবারের নামে হাজার প্রতিষ্ঠানের নাম থাকা অন্যায়। নিশ্চয়ই অন্যায় কাজ হয়েছিল এবং সেটা তখনও দৃষ্টিকটু ছিল। ইতিহাসের পাতায়েও দৃষ্টিকট হিসেবে লেখা থাকবে। একটা সরকার দলীয়করণ পারিবারিকীকরণ ব্যক্তিকরণ কোন পর্যায়ে গেলে একটা পরিবারের আত্মীয়স্বজন পর্যন্ত এক রাষ্ট্রীয় দেড় হাজার প্রতিষ্ঠানের নাম হতে পারে সেটা নিশ্চয়ই নিন্দনীয়।’

তিনি আরো বলেছেন, ‘কিন্তু এটা যখন কলমের খোঁচায় আপনি বদলে দেবেন তখন দলীয় রাজনীতি মাথায় না রেখে যারা ভিশনারি যারা ইউনূসের কাছ থেকে মানুষ আশা করে তা বিবেচনার দরকার ছিল। যেমন ধরুন, বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের নাম ছাড়া আপনি ইতিহাস লিখতে পারবেন না। সেখানে সামগ্রিকভাবে দেখবার ব্যাপার আছে।’

নূরুল কবীর বলেছেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর সমাজতন্ত্রের নামে একদলীয় প্রতিষ্ঠার ব্যবস্থা বিভিন্ন মতামতকে দমন করবার জন্য নানা ধরনের আইনি ও বেআইনি ব্যবস্থা গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন ভিন্ন মতাবলম্বীদের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে রাষ্ট্রীয় সংশ্লিষ্টতা আওয়ামী লীগের সংশ্লিষ্টতা এগুলো যেমন নিন্দনীয়। এগুলোর জন্য যেমন শেখ মুজিব এবং তৎকালীন রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব সারাজীবন ধরে ইতিহাসে নিন্দিত হবেন এটা যেমন সত্য এটাও তো সত্য যে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দেশের শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে আন্দোলনকে ধীরে ধীরে যারা স্বাধীনতা সংগ্রামের দিকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন সেখানে তার অবদান অন্যতম। তিনি তো বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামকে ৭০ সালের নির্বাচনের পর ৭১ সালের মার্চ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে স্বাধীনতা যুদ্ধের দ্বার প্রান্ত পর্যন্ত নিয়ে গেছেন। সেটাকে আপনি উপেক্ষা করবেন কেন? শেখ হাসিনার সরকার যদি দেড় হাজার না করে শেখ মুজিবের নামে পাঁচটা বড় বড় প্রতিষ্ঠান রাখতেন শেখ হাসিনার রাজনীতি, রাজনৈতিক দর্শন ও রাজনৈতিক আচরণের বিরুদ্ধে মানুষ যতই ক্ষিপ্ত হোক না কেন এটা নিয়ে কোনো প্রতিবাদ করত না। একজন ভিশনারি হিসেবে তার উচিত ছিল কয়েকটা নাম রেখে দেওয়া।’

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে