শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫, ৬ আষাঢ় ১৪৩২

চট্টগ্রামে শেখ হাসিনাসহ ১৬৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা

চট্টগ্রাম ব্যুরো
  ২০ জুন ২০২৫, ১৮:২৭
চট্টগ্রামে শেখ হাসিনাসহ ১৬৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা
-ফাইল ছবি

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে হামলার শিকার হয়ে দৃষ্টিশক্তি হারানো এক মাদরাসা ছাত্র চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। এতে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকসহ ১৬৭ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৭ জুন) রাতে ঢাকা সরকারি আলিয়া মাদরাসার আলিম বিভাগের ছাত্র সাইফুদ্দীন মুহাম্মদ এমদাদ মামলাটি দায়ের করেছেন। তবে শুক্রবার (২০ জুন) বিষয়টি জানা গেছে।

বাদী সাইফুদ্দীন এমদাদ জুলাই আন্দোলন চলাকালীন আলিমের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার বাড়ি সন্দ্বীপ উপজেলায়। কাচিয়াপাড় গ্রামের মো. বেলালের ছেলে তিনি। এজাহারে সরকারি প্রজ্ঞাপনের ২০২ নম্বরে তার নাম ‘জুলাইযোদ্ধা’ হিসেবে উল্লেখ আছে বলে জানিয়েছেন এমদাদ।

মামলায় সাবেক মন্ত্রী-এমপিদের মধ্যে আরও আছেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, সাবেক সংসদ সদস্য এম এ মোতালেব, নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারি, আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দীন নদভী ও এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী ও এম মনজুর আলম, সাবেক কাউন্সিলর জহরলাল হাজারী, শৈবাল দাশ সুমন ও বিজয় কিষাণ চৌধুরীর নামও আছে আসামির তালিকায়।

মামলায় কয়েকজন শিল্পপতিকেও আসামি করা হয়েছে। এরা হলেন- হামীম গ্রুপের চেয়ারম্যান ও সাবেক সংসদ সদস্য এ কে আজাদ, পিএইচপি গ্রুপের চেয়ারম্যান সুফী মুহাম্মদ মিজানুর রহমান ও তার ছেলে আমির হোসেন সোহেল, ইকবাল হোসেন চৌধুরী ও আকতার পারভেজ চৌধুরী, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি মাহবুবুল আলম ও তার মেয়ে রাইসা মাহবুব এবং জিপিএইচ ইস্পাত লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলমাস শিমুল।

চারজন সাংবাদিকের নামও আছে আসামির তালিকায়। এরা হলেন- একুশে টেলিভিশনের সাবেক আবাসিক সম্পাদক রফিকুল বাহার, দৈনিক আমাদের সময়ের ব্যুরো প্রধান হামিদ উল্লাহ ও জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মো. মহিউদ্দিন এবং ডিবিসি টেলিভিশনের ব্যুরো প্রধান মাসুদুল হক। তবে মামলার এজাহারে এদের সাংবাদিক পরিচয় উল্লেখ করা হয়নি।

এছাড়া জাতীয় পার্টির নেতা সোলায়মান আলম শেঠকেও আসামি করা হয়েছে। মামলার অন্যান্য আসামিরা আওয়ামী লীগ ও এর বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী।

মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় নিয়মিত সক্রিয় অংশগ্রহণ করায় ১৫ জুলাই রাজু ভাস্কর্য এলাকায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের টার্গেটে পরিণত হন তিনি। ২৮ জুলাই পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকায় পালিয়ে চট্টগ্রামে আন্দোলনকারীদের সাথে যোগাযোগ করে আন্দোলনে সহায়তা করেন। ৪ আগস্ট চট্টগ্রাম নগরের নিউমার্কেটে আন্দোলনে অংশ নিলে সেখানে আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের আক্রমণে ‘গুলিবিদ্ধ’ ও ‘কোপজখম’ হন। তবে সেই সময় আওয়ামী ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা পাহারা দেওয়ায় তিনি হাসপাতালে না গিয়ে আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী চিকিৎসক, নার্স ও ইর্টার্ন চিকিৎসকদের কাছ থেকে নিরাপদ স্থানে চিকিৎসা গ্রহণ করেন। চিকিৎসকরা তার বুক ও ডান পায়ের ছররা গুলির কিছু অংশ বের করে কোনো রকমে রক্তক্ষরণ বন্ধ করলেও বাকি গুলিগুলো রয়ে যায়। এমনকি তার ডান চোখের দৃষ্টি ফিরে আসেনি।

খুলশী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আফতার হোসেন বলেন, ‘গত বছরের আগস্টে আন্দোলনের সময় হামলার শিকার এক যুবক বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। এতে ১৬৭ জনের নাম আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তদন্ত করে এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে