আবরার ফাহাদ, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতে আলোচিত এক নাম। এই নামের সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাংলাদেশ প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থীর আবেগ। আবরার ফাহাদ বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিকস প্রকৌশল বিভাগের ছাত্র ছিলেন।
গত ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করে ছাত্রলীগের কর্মীরা। ওই হত্যাকাণ্ডের পর ছাত্র আন্দোলনের মুখে বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। ওই ঘটনার ৪ বছর অতিবাহিত না হতেই আবারও বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি ফিরতে যাচ্ছে। তবে, সেখানে নতুন করে ছাত্ররাজনীতি চালুর বিপক্ষে মত দিয়েছেন সেই আবরার ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ।
সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ বলেন, ছাত্ররাজনীতি শুরু হলে এখন বুয়েটের যে পরিবেশ আছে তা বিঘ্নিত হবে। আমি আমার এক ছেলেকে হারিয়েছি। আরেক ছেলেকে সেখানেই (বুয়েটে) ভর্তি করেছি। আমি ব্যক্তিগতভাবে চাই না বুয়েটে আবারও ছাত্ররাজনীতি চালু হোক। আমার স্ত্রী ও জীবত যে ছেলে আছে তারও দাবিও একই।
আবরারের ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) যন্ত্রকৌশল বিভাগে ভর্তি হয়েছেন । ঈদের ছুটিতে এসে কুষ্টিয়া শহরের বাড়িতে অবস্থান করছেন তিনি। গতকাল সোমবার (১ এপ্রিল) বিকেল তার সাথে কথা হয় স্থানীয় সাংবাদিকদের।
বুয়েটে আবারও ছাত্ররাজনীতি চালুর তোড়জোড় চলছে, ছাত্র হিসেবে আপনি কি চান? এমন প্রশ্নের জবাবে আবরার ফাইয়াজ বলেন, ‘পঞ্চাশজন ছাত্ররাজনীতি চাই না, আর পাঁচজন চাই। অথচ এই পাঁচ জনের মতামতকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। যারা ক্যাম্পাসে রাজনীতি চাচ্ছেন, তারা কি আর কাউকে মারার আগে দ্বিতীয়বার ভাববে, ভাববে না।
ছাত্ররাজনীতির অনুমতি দেওয়া মানে তাদেরকে এক ধরনের ইনডেমনিটির ব্যবস্থা করে দেওয়া। যাতে এরপর থেকে আর কেউ প্রতিবাদ করার সাহস না পাই।’ আবরার ফাহাদ ছিলেন ফাইয়াজের একমাত্র ভাই। তাদের বাড়ি কুষ্টিয়া শহরে। তাদের বাবা বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। আবরার ফাহাদ বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিকস প্রকৌশল বিভাগের ছাত্র ছিলেন।
২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর বুয়েটের শেরেবাংলা হল থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার হয়। এ ঘটনায় আবরারের বাবা বাদী হয়ে চকবাজার থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় ছাত্রলীগের ২০ নেতাকর্মীকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সাজাপ্রাপ্তরা সবাই বুয়েটের ছাত্র ছিলেন।
যাযাদি/ এস