প্রিয় নেতা এমপি আনোয়ারুল আজিম আনারের অপেক্ষায় হাজার হাজার নেতাকর্মী। নেতার মরদেহ শেষবারের মত দেখার জন্য দু’দিন ধরে অপেক্ষা করছেন। ঝিনাইদহ-৪ (কালীগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার ভারতে একটি এ্যাপার্টমেন্টে খুন হয়েছে। ভারত যাওয়ার ১০ দিন পর বুধবার (২২ মে) সকালে কলকাতার নিউটাউন এলাকার হোটেল সঞ্জিভা গার্ডেন একটি ভাড়া ফ্লাটে খুন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সেদেশের পুলিশ। তবে এখনো পর্যন্ত তার মরদেহ উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। তার মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনে ভারতের একাধিক পুলিশ ও গোয়েন্দা টিম কাজ করছে।
বুধবার তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে হাজার হাজার নেতাকর্মী কালীগঞ্জ উপজেলা শহরের ভূষণ সড়কস্থ দলীয় কার্যালয়ে ভীড় জমায়। ভারতে তার মরদেহ উদ্ধারের সংবাদ পাওয়ার পর তার দলীয় কার্যালয়ে উপস্থিত অনেকে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। অনেকে নেতার স্বৃতিচারণ করতে গিয়ে কান্নায় মুর্ছা যান। তারা কোনভাবেই মিলাতে পারছে না তাদের নেতা আনারকে কেন নুসংশভাবে হত্যা করা হলো।
ভারতের স্বাধীনতার ৭৭ বছরে বাংলাদেশের কোনো নির্বাচিত এমপি এই প্রথম এভাবে হত্যাকাণ্ডের শিকার হলেন কলকাতার মাটিতে।
প্রসঙ্গত, গত ১২ মে চিকিৎসার জন্য ভারতের গেদে বন্দর পার হয়ে পশ্চিবঙ্গে যান এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার। ১৬ মে দিল্লি যাওয়ার কথা বলে নিখোঁজ হন এমপি। ২২ মে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বিধাননগরের নিউটাউন এলাকায় সঞ্জিভা গার্ডেনে খুন হয়েছে বলে সংবাদ আসে। পরে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তার মৃত্যুর সংবাদ জানিয়ে বিবৃতি দেন।
আনার ভারতীয় সীমান্ত এলাকা ঝিনাইদহ-৪ আসনের টানা তিনবারের সংসদ সদস্য (এমপি) ও কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। সংসদ সদস্য হলেও চলাচলের সময় কোন পুলিশ প্রটোকল ব্যবহার করতেন না। একা একা চলতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করতেন। সবথেকে আলোচিত বিষয় তার নির্বাচনী এলাকায় যে কোন ব্যক্তি মারা গেলে তার বাড়িতে যেয়ে শোকার্ত পরিবারকে শান্তনা দিতেন। বিভিন্ন সেবামূলক কাজের জন্য তার সুনাম আকাশছোয়া। ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকার গ্রামে গ্রামে গিয়ে মানুষের সাথে দেখা করে সমস্যা শুনতেন এবং সমাধান করতেন।
সেখানে পৌছে পশ্চিমবঙ্গে বরাহনগর থানার অন্তর্গত মন্ডলপাড়া লেনে গোপাল বিশ্বাস নামে পরিচিত এক ব্যক্তির বাড়িতে ওঠেন। পরের দিন ১৩ মে ডাক্তার দেখানোর জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। ১৫ মে বরাহনগরের বাসিন্দা গোপাল বিশ্বাসের হোয়াটস এ্যাপে ম্যাসেজ করে জানান তিনি দিল্লি যাচ্ছেন। ১৬ মে এমপির ব্যক্তিগত গাড়ি চালক তরিকুল ইসলামের ব্যক্তিগত মুঠোফোনেও একটি ম্যাসেজ পাঠিয়ে জানান দিল্লি যাওয়ার কথা। এরপর থেকে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়ে যান আনোয়ারুল আজিম আনার। এরপর থকে পরিবার ও রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। তাকে ফোনে বা কোনো মাধ্যমে না পেয়ে বিষয়টি সরকারের ঊর্ধ্বতন পর্যায়ে জানান উদ্বিগ্ন এমপি পরিবার। এমপি আনোয়ারুল আজিম আনারের সাথে যোগাযোগ করতে না পেরে ১৮ মে থানায় একটি মিসিং ডাইরি করেন এমপি’র পরিচিত ভারতের বরাহনগরের বাসিন্দা গোপাল বিশ্বাস।
যাযাদি/ এস