বাংলাদেশ জুড়ে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে যে বিক্ষোভ চলছে, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোতে তা বেশ গুরুত্বের সঙ্গে উঠে এসেছে। বার্তা সংস্থা এএফপি, রয়টার্স ও এপি, আল-জাজিরা, বিবিসিসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম এ ঘটনা গুরুত্বের সঙ্গে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
আল-জাজিরায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে পুলিশের বরাত দিয়ে জানানো হয়, বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দলের সহযোগী ছাত্র সংগঠন ও সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে কয়েকদিন ধরে মারাত্মক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে কমপক্ষে ছয়জন নিহত এবং অন্তত ৪০০ জন আহত হয়েছেন। প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, সমালোচকদের দাবি, এই ব্যবস্থায় (কোটা) সরকার-সমর্থকদের সন্তানরাই বেশি সুবিধা পাচ্ছেন।
মার্কিন সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসে (এপি) গত মঙ্গলবার বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলন পরিস্থিতি নিয়ে প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সরকার দলীয় ছাত্র সংগঠন ও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে রাতভর সংঘর্ষ হয়। এতে পুলিশ টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ ও আন্দোলনকারীদের লাঠিপেটা করে। কয়েক ঘণ্টা ধরে চলা সহিংসতায় আহত অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয় বলে জানান হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তা আলী বিন সোলায়মান।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা 'রয়টার্স' তাদের প্রতিবেদনে উলেস্নখ করেছে, বাংলাদেশে কোটাবিরোধী সহিংস বিক্ষোভে নিহত ৫। আহত হয়েছেন আরও অনেকে। সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ দমাতে পুলিশ টিয়ার গ্যাস ও রাবার বুলেট ছোড়ে। অন্যদিকে, বিক্ষোভকারীরাও পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাথর নিক্ষেপ করেছেন।
বাংলাদেশ পুলিশের উদ্ধৃতি দিয়ে সংবাদ সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়, কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী এবং ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ-সমর্থিত শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। ইট-পাথর নিক্ষেপ এবং লাঠি ও রড নিয়ে পাল্টাপাল্টি সংঘর্ষ হয়। কারও হাতে ছিল চাপাতি, কেউ নিক্ষেপ করেছেন পেট্রল বোমা।
'বাংলাদেশ সরকার কেন শিক্ষার্থীদের আন্দোলন থামাতে পারছে না' শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করেছে 'দ্য ডিপেস্নামেট'। সংবাদমাধ্যমটির খবরে বলা হয়, বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজারো শিক্ষার্থী সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে সড়কে আন্দোলন করছেন। ক্ষমতাসীন দল ও পুলিশের হুমকি-ভয়ভীতি উপেক্ষা করে বিক্ষোভ অব্যাহত আছে।