আগামী ২০ জানুয়ারি নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিষেক অনুষ্ঠানের আগেই তাইওয়ানসহ এশীয় অঞ্চলে উত্তেজনা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে তাইওয়ান, দক্ষিণ চীন সাগরসহ অন্যান্য বিষয়ে মার্কিন-চীনা উত্তেজনা দেখা গেছে। তথ্যসূত্র : রয়টার্স
গত ৫ নভেম্বরের নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিজয়ের দুই সপ্তাহের মধ্যে অস্ট্রেলিয়া ও এশিয়া সফর করছিলেন মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিন। তিনি সবাইকে এই বার্তাটিই দিতে চেয়েছিলেন যে, আমেরিকা জোট ছাড়ছে না, আমেরিকার আঞ্চলিক মিত্ররা ওয়াশিংটনের সঙ্গে ও একে-অপরের মধ্যে সম্পর্ক দ্বিগুণ ঘনিষ্ঠ করছে এবং প্রেসিডেন্টের ক্ষমতার স্থানান্তরের সময় চীনের তাইওয়ান আক্রমণ করা একটি খারাপ সময় হবে।
ট্রাম্পের জয়ের পর থেকে যদিও মিডিয়া সাধারণভাবে ইউরোপ ও ইউক্রেন ইসু্যটিতে বেশি আলোকপাত করছে। এর মধ্যে রয়েছে ট্রাম্পের একটি শান্তিচুক্তির অঙ্গীকার, আমেরিকার তৈরি দূরপালস্নার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারে ইউক্রেনের ওপর থেকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের পূর্ববর্তী বিধিনিষেধের প্রত্যাহার এবং আগে ক্রমবর্ধমান অস্থিতিশীল যুদ্ধক্ষেত্রে রুশ আক্রমণকারী বাহিনীর অগ্রগতির বিষয়গুলো।
উদ্বেগের একটি বৃহত্তর ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে তেল-উৎপাদনকারী মধ্যপ্রাচ্যও। গ্রীষ্মের শেষ ও শরতের শুরুর দিকে ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে গুরুতর উত্তেজনার আশঙ্কার মধ্যেই দুটি মার্কিন বিমানবাহী জাহাজ আটকে পড়েছিল।
তবে উভয় অঞ্চল নিয়ে ক্রমবর্ধমান আতঙ্ক সত্ত্বেও পেন্টাগন-এশিয়া নিয়ে একেবারে শীর্ষস্থানীয়দের মধ্যে বিশেষ উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। ঊর্ধ্বতন মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, ২০২৭ সাল নাগাদ তাইওয়ান আক্রমণের জন্য চীন ভালোভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছে বলেই মনে হচ্ছে। মার্কিন গোয়েন্দারা বলছে, চীনা নেতা শি জিনপিং দেশটির সামরিক বাহিনীকে ওই বছরের মধ্যেই দ্বীপরাষ্ট্রটি দখলের জন্য প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। তবে এই ধরনের পদক্ষেপের আদেশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত এখনো নেননি তিনি।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে আরও মার্কিন-চীন উত্তেজনা দেখা গেছে এবং আগামী সপ্তাহগুলোতে আরও উত্তেজনা তৈরি হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এ জন্য প্রতিটি পক্ষই অবশ্য একে-অপরকে দোষারোপ করছে। আর ২০ জানুয়ারিতে ট্রাম্প ক্ষমতা নেওয়ার পর সে প্রবণতা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আপাতত এই উত্তেজনা রক্তপাতহীন থাকবে বলে মনে হলেও উভয় পক্ষের ভাবভঙ্গি দ্ব্যর্থহীনভাবে সামরিক শক্তি প্রদর্শন ও একটি বড় যুদ্ধে লড়াই করার বাস্তবসম্মত ক্ষমতারই ইঙ্গিত দিচ্ছে।