বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ১৭ বৈশাখ ১৪৩২
পালাচ্ছে মানুষ

বিদ্রোহীদের দখলে যাচ্ছে সিরিয়ার একের পর এক বড় শহর

বিদ্রোহীরা আশ্চর্যজনকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। এমনকি কিছু কিছু এলাকায় বাধার মুখেই পড়ছে না
যাযাদি ডেস্ক
  ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
বিদ্রোহীদের দখলে যাচ্ছে সিরিয়ার একের পর এক বড় শহর
বিদ্রোহীদের দখলে যাচ্ছে সিরিয়ার একের পর এক বড় শহর

সিরিয়ায় হঠাৎ করেই বিদ্রোহীদের দখলে চলে যাচ্ছে একের পর এক বড় শহর। এমন পরিস্থিতিতে সেখান থেকে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছেন বাসিন্দারা। কারণ সরকারি বাহিনীও সামনের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। গত সপ্তাহে বিদ্রোহীরা সিরিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর আলেপ্পো দখল করে। এরপর বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) তারা হামা শহরও দখলে নেয়। যেখানে ১০ লাখের বেশি মানুষের বসবাস। তথ্যসূত্র : বিবিসি, আল-জাজিরা, এএফপি, রয়টার্স

হামার দক্ষিণে মাত্র ৪০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত হোমস নগরীটি বৃহস্পতিবার বিদ্রোহীরা দখল করে নেয়। তবে এই দুটি শহর দখল করেও থেমে নেই বিদ্রোহীরা। তারা এখন হোমস শহরের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। যেটি কৌশলগত কারণে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

বিদ্রোহীরা আশ্চর্যজনকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। এমনকি কিছু কিছু এলাকায় তারা বাসার আল-আসাদ বাহিনীর কোনো বাধার মুখেই পড়ছে না। জানা গেছে, হোমস শহর বর্তমানে বিদ্রোহীদের প্রধান লক্ষ্যবস্তু। কারণ এটি দেশটির রাজধানী দামেস্ককে উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে যুক্ত করেছে। এমন পরিস্থিতিতে সিরিয়ায় অবস্থিত রুশ দূতাবাস নিজেদের নাগরিকদের দ্রম্নত দেশটি ছাড়ার আহ্বান জানিয়েছে।

হোমস ছেড়ে পালাচ্ছে হাজার হাজার মানুষ

ইসলামপন্থি গ্রম্নপ হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস)-এর বিদ্রোহীদের অগ্রসর হওয়া অব্যাহত থাকার আশঙ্কায় প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সংখ্যালঘু শিয়া আলাভি মতানুসারীসহ হাজার হাজার মানুষ বৃহস্পতিবার সিরিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম নগরী হোমস থেকে পালিয়ে যাচ্ছে। যুদ্ধ পর্যবেক্ষক সংস্থা 'সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস' এ খবর দিয়েছে।

ইসলামপন্থি গ্রম্নপ হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস)-এর নেতৃত্বে যোদ্ধারা নগরীর দামেস্ক ও ভূমধ্যসাগরীয় উপকূলে অবস্থিত আলাভি মতানুসারীদের কেন্দ্রস্থলের এক গুরুত্বপূর্ণ সংযোগস্থলের দিকে অগ্রসর হবে বলে বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন।

যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক যুদ্ধ পর্যবেক্ষক সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানায়, 'হোমসের আশপাশের এলাকা থেকে আলাভিদের ব্যাপক বিতাড়ন ও বিদ্রোহীদের অগ্রগতির ভয়ে হাজার হাজার মানুষ সিরিয়ার উপকূলের দিকে পালিয়ে যাচ্ছে।' নগরীর উপকণ্ঠে বসবাসকারী খালেদ বলেন, 'উপকূলীয় তারতুস নগরীর দিকে তাদের যাত্রার সড়কটি শত শত গাড়ির আলোয় ঝলমল করছিল।'

২০১৪ সালের এপ্রিলে হোমসে আলাভি-প্রধান এলাকাকে লক্ষ্য করে দুটি হামলায় কমপক্ষে ১০০ জন নিহত হয়, যাদের বেশিরভাগই ছিল বেসামরিক নাগরিক। আল-কায়েদার সিরিয়ান শাখা 'আল-নুসরা ফ্রন্ট' ওই হামলার দায় স্বীকার করে। বর্তমানে হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস)-এর নেতা আবু মোহাম্মদ আল-জাওলানি দলটির নেতা ছিলেন। ২০১৬ সালে জাওলানি জিহাদিদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করা ঘোষণা দেন এবং পরের বছর আল-নুসরা দলটি বিলুপ্ত করা হয়। আল-নুসরার মূল ভাবনা নিয়ে গঠিত হয় এইচটিএস।

আলাভি-প্রধান এলাকায় বসবাসকারী ৩৭ বছর বয়সি হায়দার বলেন, বর্তমানে হোমস আতঙ্কের নগরীতে পরিণত হয়েছে। তিনি বলেন, 'আমরা অত্যন্ত ভীত-সন্ত্রস্ত, জানি না এক ঘণ্টার মধ্যে কী ঘটতে চলেছে।' তিনি তার বাবা-মাকে তারতুসে পাঠাতে পারলেও গাড়ির অত্যন্ত সংকট থাকায় তার স্ত্রীকে নিয়ে যাওয়ার জন্য এখনো পর্যন্ত কোনো গাড়ি জোগাড় করতে পারেননি।

তিনি জানান, একটি গাড়ি পেলে তারা যত দ্রম্নত সম্ভব তারতুসের পথে রওনা দেবেন। সিরিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম বন্দর নগরী তারতুসে আসাদের মিত্র রাশিয়া পরিচালিত একটি নৌঘাঁটি রয়েছে। ১৩ বছরের যুদ্ধের পরও নগরীটি নিরাপদ রয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে