ভয়াবহ পেস্নন দুর্ঘটনায় দেড় শতাধিক মানুষের প্রাণহানির ঘটনায় মাথা নত করে ক্ষমা চেয়েছেন জেজু এয়ারলাইনের প্রধান নির্বাহী এবং অন্যান্য কর্মকর্তারা। সংক্ষিপ্ত এক সংবাদ সম্মেলনে ওই কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কিম ই-বে এবং অন্যান্য কর্মকর্তাদের মাথা নুইয়ে ক্ষমা চাইতে দেখা গেছে।
কিম ই-বে জানিয়েছেন, এখন হতাহতের পরিবারগুলোকে সব ধরনের সহায়তা দেওয়ার বিষয়টিকেই সবচেয়ে গুরুত্ব দিচ্ছেন তারা। পেস্নন দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৭৯ জনের মৃতু্যর খবর পাওয়া গেছে। এয়ারলাইনের পক্ষ থেকেও ক্ষমা চেয়ে বার্তা দেওয়া হয়েছে। এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মুয়ান বিমানবন্দরে দুর্ঘটনায় যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের প্রত্যেকের কাছে আমরা জেজু এয়ার মাথা নত করে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।
এই দুর্ঘটনার পর আমরা যা পারি সব ধরনের সহায়তা দিয়ে যাব। এই দুর্ঘটনার জন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত। জেজু এয়ারের ইতিহাসে এটাই প্রথম এ ধরনের হতাহতের ঘটনা। এটি দক্ষিণ কোরিয়ার সবচেয়ে বড় কিন্তু কম বাজেটের এয়ারলাইন্স। দেশটির দমকল বিভাগের ধারণা পাখির আঘাত এবং খারাপ আবহাওয়ার কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তবে প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের প্রধান লি জিয়ং-হুন।
বলা হচ্ছে, সবচেয়ে ভয়াবহ পেস্নন দুর্ঘটনার সাক্ষী হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। দুর্ঘটনার পর পেস্ননটি থেকে দুজনকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। পেস্ননটিতে দুর্ঘটনার সময় ১৮১ জন আরোহী ছিল। ধারণা করা হচ্ছে ওই দুজন ছাড়া বাকি সবাই নিহত হয়েছে।
স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ৭ মিনিটে দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত মুয়ান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের সময় ওই দুর্ঘটনা ঘটে। বিমানবন্দরের রানওয়ে থেকে ছিটকে গিয়ে পাশের একটি দেয়ালের সঙ্গে ধাক্কা লেগে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। এসময় বিমানটিতে মোট ১৭৫ জন যাত্রী ও ছয়জন ক্রু ছিল।
ধারণা করা হচ্ছে, দক্ষিণ কোরিয়ার মাটিতে এটাই সবচেয়ে মারাত্মক পেস্নন দুর্ঘটনা। এর আগে দেশটিতে সবচেয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটেছিল ২০০২ সালে। সে সময় এয়ার চায়নার একটি পেস্নন বিধ্বস্ত হয়ে ১২৯ জন নিহত হয়।
যাত্রীদের মধ্যে ১৭৩ জন দক্ষিণ কোরিয়ার আর দুজন থাইল্যান্ডের নাগরিক। এক দমকল কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার পর দুজনকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তবে উদ্ধার অভিযান এখনও চলছে বলে জানানো হয়েছে। পেস্ননটি থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংকক থেকে ফিরছিল। এটি রানওয়েতে অবতরণের সময় বিধ্বস্ত হয়েছে।
ওই পেস্ননটি কেন দুর্ঘটনায় পড়লো বা রানওয়ে থেকে ছিটকে গেল তা এখনো জানা যায়নি। তবে পাখির কারণে ল্যান্ডিং গিয়ার অকার্যকর হয়ে এটি হতে পারে বলে ইয়োনহাপের খবরে বলা হয়েছে।