ফিলিস্তিনি ছিটমহল গাজায় জাতিগত নির্মূল এড়ানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পকে পরামর্শ দিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। গাজার ফিলিস্তিনিদের প্রতিবেশী কোনো দেশে পুনর্বাসিত করার পর যুদ্ধবিধ্বস্ত ছিটমহলটি যুক্তরাষ্ট্র দখলে নেবে, ট্রাম্প এমন প্রস্তাব করার পর জাতিসংঘ মহাসচিব এমন পরামর্শ দিলেন। বুধবার জাতিসংঘের এক কমিটির পূর্বনির্ধারিত এক বৈঠকে গুতেরেস বলেন, "সমাধানের সন্ধান করতে গিয়ে সমস্যাকে আরও খারাপ করে তুলতে পারিনা আমরা। যে কোনো ধরনের জাতিগত নির্মূল এড়ানো অপরিহার্য।" তিনি বলেন, "(ফিলিস্তিনের ক্ষেত্রে) দ্বিরাষ্ট্রীক সমাধান আমাদের পুনঃনিশ্চিত করতে হবে।"
'ফিলিস্তিনি জনগণের অবিচ্ছেদ্য অধিকারের অনুশীলন কমিটি'র ওই বৈঠকে গুতেরেস ট্রাম্প বা তার গাজা প্রস্তাবের কথা উলেস্নখ করেননি, কিন্তু তার মুখপাত্র স্তিফান দুজারিক সাংবাদিকদের বলেন, জাতিসংঘ মহাসচিবের মন্তব্যকে 'প্রতিক্রিয়া' হিসেবে দেখা 'ন্যায্য অনুমান' হবে। দুজারিক জানান, ওই বৈঠকের আগে গুতেরেস জর্ডানের বাদশা আব্দুলস্নাহর সঙ্গে গাজা ও সংলগ্ন অঞ্চলের পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন। জাতিসংঘে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের নিয়োগকৃত ফিলিস্তিনি দূত রিয়াদ মনসুর কমিটির বৈঠকে জানান, আগামী সপ্তাহে ওয়াশিংটন সফরের সময় আব্দুলস্নাহ আরব রাষ্ট্রগুলোর পক্ষ থেকে একটি সমন্বিত বার্তা ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেবেন।
গাজা উপত্যকা থেকে ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে নিয়ে অবরুদ্ধ এই উপত্যকাকে 'দখলের' পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার এমন বক্তব্যের পর ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ফক্স নিউজকে বলেছেন, ট্রাম্পের এই 'উলেস্নখযোগ্য' পরিকল্পনা গ্রহণ করা উচিত। তবে ট্রাম্পের এমন প্রস্তাব নিয়ে বিশ্বজুড়েই নিন্দার ঝড় উঠেছে। সৌদি আরব, চীন, রাশিয়া, স্পেনসহ বিশ্বের বহু দেশ ও সংগঠন এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে। গাজা উপত্যকার ফিলিস্তিনিরা বলছেন, যাই হোক না কেন, আমরা গাজা ছেড়ে যাব না। জাতিসংঘে নিযুক্ত ইসরাইলি দূত ড্যানি ড্যানন বলেছেন, তার দেশ যুক্তরাষ্ট্রের পাশে থাকবে। তারা 'পক্ষপাতদুষ্ট' জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে অংশ নেবে না। মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ বলেছেন, মার্কিন সামরিক বাহিনী গাজায় 'সকল বিকল্পের জন্য প্রস্তুত' রয়েছে। ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের সদরদপ্তর পরিদর্শন এবং হামাসের সঙ্গে যুদ্ধ এবং সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে ঘনিষ্ট মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা করেন। এর আগে হোয়াইট হাউজে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, আমি ইসরাইকে ভালোবাসি আমি সেখানে সফর করবো। আমি গাজা, সৌদি আরব এবং মধ্যপ্রাচ্যের অন্যসব দেশগুলোতেও সফর করবো। তবে তার এই সফরের নির্ধারিত সময়সূচি তিনি উলেস্নখ করেননি। ফিলিস্তিনিদের প্রতিবেশী দেশগুলোতে সরিয়ে গাজার নিয়ন্ত্রণ যুক্তরাষ্ট্রের কাছে চান বলেও জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।