সারাবিশ্ব করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার দিন এখনো শেষ হয়ে যায়নি। দেশে দেশে এখন নতুন করে সংক্রমণ ও মৃতু্য বাড়ছে। দীর্ঘ এক মাস মৃতু্যহীন থাকার পর বাংলাদেশে একজনের মৃতু্য হয়েছে। শ্বাসতন্ত্রের প্রাণঘাতী রোগ করোনায় শুক্রবার বিশ্বজুড়ে আক্রান্ত হয়েছে ৭ লাখ ৬০ হাজার ৪৫৪ জন এবং কোভিডজনিত অসুস্থতায় মৃতু্য হয়েছে ১ হাজার ৩৯৫ জনের। পাশাপাশি, এ দিন করোনা থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৭ লাখ ৫৫ হাজার ৪০২ জন। দৈনিক আক্রান্তের হিসেবে শুক্রবার বিশ্বে শীর্ষে ছিল উত্তর কোরিয়া। এদিন দেশটিতে নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ২ লাখ ৬৩ হাজার ৩৮০ জন এবং কোভিডজনিত অসুস্থতায় মৃতু্য হয়েছে ২ জনের। অন্যদিকে, কোভিডজনিত অসুস্থতায় শুক্রবার সবচেয়ে বেশি মৃতু্য হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। দেশটিতে এদিন ২৪৪ জনের মৃতু্য হয়েছে এ রোগে; আর করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ৯৮ হাজার ৬৬৫ জন। মহামারির শুরু থেকে করোনায় আক্রান্ত-মৃতু্য ও সুস্থতার হালনাগাদ তথ্য প্রদানকারী ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটার্স জানিয়েছে এ সব তথ্য। উত্তর কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও বিশ্বের আরও যে সব দেশে শুক্রবার সংক্রমণ-মৃতু্যর উচ্চহার দেখা গেছে, সে সব হলো- তাইওয়ান (নতুন আক্রান্ত ৮৫ হাজার ৭৬১ জন, মৃতু্য ৪৯ জন), অস্ট্রেলিয়া (নতুন আক্রান্ত ৪৯ হাজার ৯২১ জন, মৃতু্য ৫২ জন), জার্মানি (নতুন আক্রান্ত ৪০ হাজার ৬৫১ জন, মৃতু্য ১৪৫ জন) ও জাপান (নতুন আক্রান্ত ৩৮ হাজার ৮১২ জন, মৃতু্য ৩৬ জন)।
বিশ্বজুড়ে বর্তমানে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা ২ কোটি ৩৯ লাখ ৬৫ হাজার ৬৮০ জন। এই রোগীদের মধ্যে করোনার মৃদু উপসর্গ বহন করছেন ২ কোটি ৩৯ লাখ ২৭ হাজার ৪৩৯ জন এবং গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় আছেন ৩৮ হাজার ২৪১ জন। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে বিশ্বের প্রথম করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। করোনায় প্রথম মৃতু্যর ঘটনাটিও ঘটেছিল চীনে। তারপর অত্যন্ত দ্রম্নতগতিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসটি। পরিস্থিতি সামাল দিতে ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডবিস্নউএইচও)। কিন্তু তাতেও অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় অবশেষে ওই বছরের ১১ মার্চ করোনাকে মহামারি হিসেবে ঘোষণা করে ডবিস্নউএইচও। এ নিয়ে সারা বিশ্ব টালমাটাল অবস্থায় ছিল। এ যুদ্ধে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন ডাক্তার-নার্স ও স্বাস্থ্য বিভাগের সেবকরা। সেবা দিতে গিয়ে উন্নত দেশগুলোতেও অনেক ডাক্তার-নার্স সেবা দিতে গিয়ে মৃতু্যবরণ করেছেন। আমাদের দেশেও শত শত ডাক্তার, নার্সসহ সেবাদানকারী কর্মীরা আক্রান্ত হয়েছে এবং অনেক প্রতিভাবান ডাক্তার মারা গেছেন। সাধারণ মানুষের মৃতু্যর সংখ্যাও নেহাত কম নয়। এখন আবার নতুন করে আক্রান্ত হচ্ছে ও মৃতু্যও হচ্ছে। জনসচেতনতা যদি না বাড়ে তা হলে সার্বিক পরিস্থিতি আবার খারাপের দিকে যেতে পারে। কারণ বলতে গেলে মানুষ মাস্ক পরা ছেড়েই দিয়েছে। এ ব্যাপারে সরকারের বিশেষ নজরদারির প্রয়োজন রয়েছে।