বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

শীতের প্রকোপ

কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে
  ১৫ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
শীতের প্রকোপ

শীতের তীব্রতা বাড়ায় গত কয়েকদিন ধরেই কাঁপছে দেশের বিস্তীর্ণ জনপদ। একদিকে ঘন কুয়াশার কারণে কোথাও কোথাও সারা দিনও মিলছে না সূর্যের দেখা। অন্যদিকে, হাড় কাঁপানো শীতের সঙ্গে ঘন কুয়াশার দাপটও বেড়েছে। আর এর প্রভাবে স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। কয়েকদিন ধরে চলা শীতের তীব্রতার মধ্যে 'মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা' হয়ে আসতে পারে বৃষ্টি- আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এমনটাই জানা গেছে। ফলে সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নেওয়া জরুরি। শীতের তীব্রতা, কুয়াশায় যেভাবে জনজীবনে স্থবিরতা নেমে এসেছে সেটি এড়ানো যাবে না। একইসঙ্গে এটাও বিবেচনা রাখা দরকার, দেশজুড়ে চলা কয়েকদিনের বৈরী আবহাওয়ায় বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। এ ছাড়া শিশু ও বৃদ্ধরা শীতজনিত নানা রোগ নিয়ে ভর্তি হচ্ছেন হাসপাতালে।

উলেস্নখ্য, আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, শনিবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে দিনাজপুরে ৮.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর নওগাঁর বদলগাছীতে রেকর্ড করা হয়েছে ৮.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ ছাড়া নীলফামারীর সৈয়দপুরে ৯ ডিগ্রি, রাজশাহীতে ৯.৬ ডিগ্রি এবং পাবনার ঈশ্বরদীতে ৯.৭ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এ সময়ে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল টেকনাফে ২৬ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অন্যদিকে ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৩.৭ ডিগ্রি, আর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৮.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না, শীতের সময়টাতে এমনিতেই নিম্ন আয়ের মানুষের দুর্ভোগ বাড়ে। কেননা, শীতবস্ত্রের অভাবে, খাদ্যাভাবে পর্যদুস্ত থাকে। আবার বৃষ্টির আশঙ্কাও করা হচ্ছে- ফলে সার্বিক পরিস্থিতি এড়ানোর সুযোগ নেই। এছাড়া এটাও আমলে নেওয়া দরকার, কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, ঠান্ডায় শীতকালীন ফসলের আবাদ ভালো হলেও ঘন কুয়াশায় বোরো বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। কুয়াশার কারণে সড়ক, নৌ ও আকাশপথে যান চলাচল বিঘ্নিত হওয়ার খবরও পাওয়া গেছে। বলা দরকার, শনিবার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছিল, রাজশাহী, পাবনা, নওগাঁ, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলাসহ রংপুর বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। ফলে সৃষ্ট পরিস্থিতি আমলে নেওয়া জরুরি।

একেিদক ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা রয়েছে সূর্য। অন্যদিকে, এমন বৈরী পরিবেশে পাথর-চা শ্রমিক, দিনমজুরসহ নানা পেশার শ্রমজীবী মানুষের কমে গেছে দৈনন্দিন রোজগার। পরিবার-পরিজন নিয়ে কষ্টে দিনযাপন করছেন তারা। প্রয়োজন ছাড়াও অনেকে ঘর থেকে বের না হলেও জীবিকার তাগিদে অনেকেই শীত উপেক্ষা করে কাজে বেরিয়েছেন। একই সঙ্গে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষের মিলছে না প্রয়োজনীয় গরম কাপড়। রাস্তায় চলা ভবঘুরে মানুষরাও পড়েছে শীত দুর্ভোগে। ফলে যখন হতদরিদ্র মানুষ শীতে কাতরালেও শীতবস্ত্রের অভাব এবং বিপর্যস্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে, মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে- তখন সার্বিকভাবে পরিস্থিতি আমলে নিতে হবে।

আমরা মনে করি, দেশে শীতের প্রকোপ বৃদ্ধির ফলে জীবনযাপনে যে দুর্ভোগ নেমে এসেছে- তা আমলে নিয়ে এর পরিপ্রেক্ষিতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করার বিকল্প থাকতে পারে না। অন্যদিকে, শীতার্ত জনগণের জন্য চিকিৎসাসেবাসহ সবকিছুর সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা চ্যালেঞ্জের বিষয়। ফলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দক্ষতার সঙ্গে সৃষ্ট পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে। প্রসঙ্গত আমরা বলতে চাই. সামগ্রিকভাবে শীতের প্রকোপে জনজীবনের দুর্ভোগ ও ঠান্ডাজনিত রোগের বিষয়টি আমলে নিয়ে জনসচেতনতা বাড়ানোও জরুরি। আর সেই লক্ষ্যে প্রচার প্রচারণা চালাতে হবে। সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়নের বিকল্প নেই। শীতের দাপট, এর পাশাপাশি কুয়াশাসহ সার্বিকভাবে আবহাওয়া পরিস্থিতি আমলে নিতে হবে। বৃষ্টির শঙ্কাও উঠে আসছে। ফলে শীতার্ত মানুষের দুর্ভোগকে এড়ানো যাবে না। বিপর্যস্ত জনসাধারণের পাশে দাঁড়াতে হবে।

সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, সৃষ্ট পরিস্থিতি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিশ্চিত করার বিকল্প নেই। পর্যাপ্ত শীতবস্ত্র বিতরণের পাশাপাশি ঠান্ডাজনিত রোগের ক্ষেত্রে চিকিৎসার সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার দিকে লক্ষ্য রাখা অপরিহার্য। শীতের প্রকোপে সৃষ্ট পরিস্থিতি মোকবিলায় সব ধরনের উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে- এমনটি কাম্য।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
X
Nagad

উপরে