শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

মুক্তিপণ না পেয়ে শিশু হত্যা কঠোর পদক্ষেপ নিন

  ১৮ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
মুক্তিপণ না পেয়ে শিশু হত্যা কঠোর পদক্ষেপ নিন

যতই দিন যাচ্ছে, সমাজে শিশু নির্যাতনের হার বাড়ছে। কেবল নির্যাতন নয়, শিশু হত্যার সংখ্যাও বেড়েছে উদ্বেগজনকভাবে। অপহরণ ও ধর্ষণের শিকার হচ্ছে শিশুরা। মুক্তিপণ না পেয়ে শিশুকে হত্যা করা হচ্ছে। এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, গাজীপুর নগরের চান্দনা এলাকায় সাত বছরের শিশুকন্যাকে অপহরণের পর শ্বাসরোধে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। গত সোমবার রাত ৯টার দিকে একটি ঝোপের ভেতর থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে ওই রাতেই এক পরিবহণ শ্রমিককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই ব্যক্তি হত্যার কথা স্বীকার করেছে।

উলেস্নখ্য, গত বছরের ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত ৪৪৯ শিশু হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছে। একই সময়ে ৯৭১ শিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৩৯২ শিশু। বাংলাদেশের শিশু অধিকার পরিস্থিতি ও করণীয় নিয়ে আয়োজিত সংলাপে এসব তথ্য জানানো হয়।

উলেস্নখ্য, সারাদেশে ২০২০ সালে ১ হাজার ৭১৮, ২০২১ সালে ১ হাজার ৪২৬, ২০২২ সালে ১ হাজার ৮৮ এবং ২০২৩ সালে ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত ৯৭১ জন শিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে। ২০২২ সালে ৫১৬ শিশু হত্যাকান্ডের শিকার হয়। ২০২৩ সালে শিক্ষকের দ্বারা নির্যাতনের শিকার হয়েছে ২৩৯ জন শিক্ষার্থী। শিক্ষকের কাছে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছে ২৮ জন শিশু। এ ছাড়াও, এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে এখনো বাল্যবিয়ের শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশ- যা মাতৃস্বাস্থ্য ও শিশুস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। দেশের ৫১ শতাংশ কিশোরী বাল্যবিয়ের শিকার হচ্ছে এবং তাদের ২৭ শতাংশের বিয়ে হচ্ছে ১৫ বছর বয়স হওয়ার আগেই।

বলার অপেক্ষা রাখে না, এ ধরনের বর্বরোচিত নিষ্ঠুর ঘটনা যদি সারা বছরই ঘটতে থাকে, তা হলে এটা এক ধরনের বিপজ্জনক বার্তা। এ ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ না নেওয়ার কারণেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। এ ধরনের জঘন্য প্রবণতা রোধ করতে না পারলে একদিকে যেমন সামাজিক শৃঙ্খলা ভেঙে পড়বে- অন্যদিকে শিশুরাও থাকবে নিরাপত্তাহীন। পাশাপাশি ভবিষ্যতের জন্য ভয়ংকর বিপদ ডেকে আনবে। সুতরাং, সময় থাকতেই সাবধান হওয়া সমীচীন।

এটা সত্য, সমাজের একশ্রেণির বর্বর পাষন্ড মানুষের হাতে অনেকের জীবনই বিপন্ন হয়ে পড়ছে, অবলীলায় জীবন চলে যাচ্ছে। এমনকি শিশুর জীবনও চলে যাচ্ছে। সমাজে শিশুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জরুরি হয়ে পড়েছে। ঠুনকো কারণে শিশুদের হত্যা করা হচ্ছে। আপনজনের হাতেও শিশুর জীবন চলে যাচ্ছে। কেবল তাই নয়- আমাদের কোমলমতি শিশুরা অবলীলায় নির্যাতন-ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। অথচ শিশুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সমাজ তথা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। কারণ আজকের শিশুরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ কান্ডারি। শিশুর সুস্থ বিকাশ কীভাবে হবে, কীভাবে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে- এ ব্যাপারে রাষ্ট্রের নতুনভাবে ভাবা উচিত। পাশাপাশি অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিও নিশ্চিত করতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
X
Nagad

উপরে