মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১

পণ্যবাহী যানবাহনে চাঁদাবাজি

রোধ করতে হবে
নতুনধারা
  ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
পণ্যবাহী যানবাহনে চাঁদাবাজি

পণ্যবাহী যানবাহনে চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটলে, তা কতটা উদ্বেগজনক পরিস্থিতিকে স্পষ্ট করে বলার অপেক্ষা রাখে না। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে উঠে এসেছে- নিত্যপণ্যের দাম কমাতে সরকার চাঁদাবাজ ও সিন্ডিকেট কারবারিদের গ্রেপ্তারে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছে। অন্যদিকে, চলমান অভিযানে পাঁচ দিনের্ যাব ১৯৬ জন চাঁদাবাজকে গ্রেপ্তার করেছে- যা ইতিবাচক বলেই প্রতীয়মান হয়। এক্ষেত্রে জানা যাচ্ছে, গ্রেপ্তাররা সবজি ও নিত্যপণ্যবাহী যানবাহনে চাঁদাবাজি করত। গ্রেপ্তারদের কাছে পাওয়া গেছে চাঁদাবাজির নগদ টাকাসহ নানা সরঞ্জাম। আমরা মনে করি, অভিযান এবং গ্রেপ্তারের বিষয়টি যেমন ইতিবাচক, তেমনি এটাও আমলে নেওয়া দরকার, চাঁদাবাজ গ্রেপ্তারে সাঁড়াশি অভিযান চললেও নিত্যপণ্যের দাম আশাতীত হারে কমেনি। ফলে এটিও সংশ্লিষ্টদের আমলে নিতে হবে।

উলেস্নখ্য, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, সারাদেশে অস্বাভাবিক হারে সবজিসহ নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় জনমনে রীতিমতো অসন্তোষ বিরাজ করছে। পাইকারি ও খুচরা বাজারে দামের ব্যাপক পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। নানা কারণে পণ্যের দাম বাড়ছে বলে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সরকারের কাছে প্রতিবেদন দেয়। আর তারই পরিপ্রেক্ষিতে নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে সংশ্লিষ্টদের কড়া নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিশেষ করে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ার নেপথ্যে সিন্ডিকেট কারবারি ও চাঁদাবাজদের গ্রেপ্তারের নির্দেশনা জারি করেন। এমনকি সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িতরা সরকারদলীয় হলেও তাদের বিরুদ্ধেও আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশনা রয়েছে।র্ যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক জানিয়েছেন, নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে আনতে পরিবহণ সেক্টরের বিশেষ করে সবজি ও নিত্যপণ্যবাহী যানবাহনে চাঁদাবাজিতে জড়িতদের গ্রেপ্তারে সাঁড়াশি অভিযান চলছে। এমনকি নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে না আসা পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানা যাচ্ছে- যা আশাব্যঞ্জক বলেই প্রতীয়মান হয়। এছাড়া ভোক্তা অধিদপ্তর, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভ্রাম্যমাণ আদালত মাঠে রয়েছেন। এটিও সন্তোষজনক।

আমরা বলতে চাই, যে কোনো মূল্যে চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্য রোধ করতে হবে। গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। এর পাশাপাশি সারাদেশে পণ্যবাহী যানবাহন যেন চাঁদবাজমুক্ত হয় সেটিকে সামনে রেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ অব্যাহত রাখতে হবে। এটাও উলেস্নখ করা দরকার, পরিবহণ সেক্টরে চাঁদাবাজির বিষয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতির মহাসচিব বলেছেন, সারাদেশেই পরিবহণ সেক্টরে চাঁদাবাজির অভিযোগ আছে এবং সেই অভিযোগ সত্য। এমনকি পরিবহণ সেক্টরের বিভিন্ন সমিতি বা প্রতিষ্ঠান বা সংগঠনের নামে চাঁদাবাজি হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে এসব সমিতি বা প্রতিষ্ঠান বা সংগঠন পরিবহণ সেক্টরের সঙ্গে সম্পর্কিত নয় বলেও তিনি জানিয়েছেন। আমরা মনে করি, এই বিষয়গুলো আমলে নিতে হবে এবং প্রয়োজনীয় সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়নে সর্বাত্মক পদক্ষেপ নিতে হবে। বলা দরকার, চাঁদাবাজদের কারণে পরিবহণ সেক্টরের দুর্নাম হচ্ছে এটাও আলোচনায় এসেছে। যেখানে বলা হচ্ছে, পুরো পরিবহণ সেক্টরকে কুলষিত করেছে চাঁদাবাজরা। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতির মহাসচিব এটাও বলেছেন, চাঁদাবাজদের কারণে অতিষ্ঠ পরিবহণ মালিক ও শ্রমিকরা। নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে পরিবহণ সেক্টরের চাঁদাবাজি বন্ধে সরকারের আরও কঠোর হওয়া দরকার বলেও জানিয়ে বলেছেন, তাহলে দ্রব্যমূল্যের দাম যেমন কমবে, তেমনি পরিবহণ খাত সংশ্লিষ্টরাও রেহাই পাবেন চাঁদাবাজদের হাত থেকে।

সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, নিত্যপণ্যের দাম অসহনীয় হয়ে উঠলে তার প্রভাব কতটা উদ্বেগের বলার অপেক্ষা রাখে না। বিশেষ করে জনজীবনে এর বিরূপ প্রভাব পড়ে। নিম্ন আয়ের মানুষের জীবনে দিশাহারা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। সঙ্গত কারণেই নিত্যপণ্যের দাম কমাতে সরকার চাঁদাবাজ ও সিন্ডিকেট কারবারিদের গ্রেপ্তারে যে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছে- সেটি আমলে নিতে হবে, দোষীদের আইনের আওতায় আনতে হবে। কেউ বা কোনো চক্র কিংবা কোনো গোষ্ঠী যেন পণ্যবাহী যানবাহনে চাঁদাবাজি করতে না পারে, সেই লক্ষ্যে প্রয়োজনে কঠোর হতে হবে। সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ অব্যাহত থাকবে এমনটি কাম্য।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে