মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১

হঠাৎ অস্থির পেঁয়াজের বাজার

কার্যকর উদ্যোগ নিন
  ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
হঠাৎ অস্থির পেঁয়াজের বাজার

হঠাৎ করেই অস্থির পেঁয়াজের বাজার। মাত্র দু'দিনের ব্যবধানে কেজিতে দাম বেড়েছে ২৫ থেকে সর্বোচ্চ ৩০ টাকা পর্যন্ত। রাজধানীর বাজারে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা দরে। বৃহস্পতিবার যা ছিল ১০০ টাকা। আর গত সপ্তাহে কেজি ছিল ৮০ টাকার মধ্যে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, মুড়ি কাটা পেঁয়াজের মৌসুম শেষ। বেশিরভাগ এলাকার কৃষকরা ওই পেঁয়াজ তুলে ফেলেছেন। আর হালি পেঁয়াজের ভরপুর মৌসুম শুরু হতে কিছুদিন বাকি রয়েছে। মাঝখানের এ সময়ে চলছে সরবরাহ ঘাটতি। যে কারণে বাজারে দাম বাড়ছে। এদিকে, আমদানি না থাকায় কয়েক মাস ধরে আগাম জাতের এ পেঁয়াজ দিয়ে চাহিদা মেটানো হচ্ছে। ফলে দেশীয় এ পেঁয়াজের সরবরাহ প্রায় শেষ পর্যায়ে। ভারতের রপ্তানি পুরোপুরি বন্ধ থাকলেও গত দুই মাসে চীন ও পাকিস্তান থেকে কিছু পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে- যা চাহিদার তুলনায় একেবারেই নগণ্য। ফলে তাতে বাজারে কোনো প্রভাব ফেলতে পারছে না।

এর আগে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের অজুহাতে অস্থির ছিল পেঁয়াজের বাজার। তখন একদিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম বেড়েছিল কেজিতে ৯০ টাকা। ৯০ টাকার ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল ১৮০ টাকা কেজি দরে। এবারো অজুহাত তুলে পেঁয়াজের দাম বাড়ানো হলো। হঠাৎ পেঁয়াজের দাম বাড়ায় বিপাকে সাধারণ ক্রেতারা। হঠাৎ পেঁয়াজের দাম বাড়লেও মাঠপর্যায়ে প্রশাসনের তেমন কোনো তৎপরতা এখানো দেখা যাচ্ছে না। এ অবস্থায় ক্রেতাদের দাবি, যারা সিন্ডিকেট তৈরি করে পেঁয়াজের দাম বাড়িয়েছে তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে বিচার করা হোক। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি সাধারণ ক্রেতাদের।

মূলত দেশের বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে এবং দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার লক্ষ্যে ভারত সরকার আগামী বছরের মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজ রপ্তানি নিষিদ্ধ করেছে। এ ধরনের সিদ্ধান্ত ভারত যে প্রথম নিয়েছে তা নয়। এর আগেও ভারত একাধিকবার পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করেছিল। তখনো এ দেশের বাজার সিন্ডিকেট একই কাজ করেছিল। মূলত তাদের কাজ হচ্ছে জনগণের পকেট কাটা। এবার দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ সংকট দেখিয়ে দাম বাড়ানো হলো। অথচ নতুন সরকার গঠিত হওয়ার পর আমরা সিন্ডিকেট ভাঙার কথা শুনেছি। এখন বাস্তবচিত্র ভিন্ন।

মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশের মাটি ও আবহাওয়া পেঁয়াজ চাষের জন্য বেশ উপযোগী। ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা গেলে প্রয়োজনীয় পেঁয়াজ দেশেই উৎপাদন করা সম্ভব। তখন আর বিদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করতে হবে না। বিপাকে পড়তে হবে না ক্রেতাদের। আমরা দীর্ঘদিন থেকেই লক্ষ্য করে আসছি, আমদানিকৃত পেঁয়াজের আগ্রাসনের কারণে বাংলাদেশের কৃষক পেঁয়াজের ন্যায্যমূল্য পান না। অন্যদিকে, প্রয়োজনীয় সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজের প্রায় শতকরা ৩০ ভাগ পচে নষ্ট হয়ে যায়।

আমরা মনে করি, পেঁয়াজের আমদানি নির্ভরতা কমাতে সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সেদিকেই বিশেষ মনোযোগ দেয়া উচিত। বাজারে পেঁয়াজের প্রচুর সরবরাহ থাকা সত্ত্বেও হঠাৎ দাম বেড়ে যাওয়া একেবারেই অস্বাভাবিক ঘটনা। সরকারের পরিকল্পিত উদ্যোগই কেবল পারে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে