মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

স্বাধীনতা ও সমৃদ্ধি সূচকে অবনতি কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে

নতুনধারা
  ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
স্বাধীনতা ও সমৃদ্ধি সূচকে অবনতি কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে

বৈশ্বিক স্বাধীনতা ও সমৃদ্ধি সূচকে বাংলাদেশের অবস্থানের অবনতি ঘটেছে বলে জানা যাচ্ছে। তথ্য মতে, স্বাধীনতা সূচকে ১৬৪টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৪১তম। আর সমৃদ্ধি সূচকে ৯৯তম। মূলত যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক থিংক ট্যাংক আটলান্টিক কাউন্সিলের স্বাধীনতা ও সমৃদ্ধি কেন্দ্রের ফ্রিডম অ্যান্ড প্রসপারিটি ইন বাংলাদেশ (বাংলাদেশে স্বাধীনতা ও সমৃদ্ধি) শীর্ষক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। মঙ্গলবার ঢাকায় আয়োজিত সমৃদ্ধি ও সুশাসন শীর্ষক সম্মেলনে প্রতিবেদনের বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরা হয়। যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস, ইউএসএআইডি ও দ্য এশিয়া ফাউন্ডেশন যৌথভাবে এ সম্মেলনের আয়োজন করে।

প্রসঙ্গত বলা দরকার, নতুন বৈশ্বিক স্বাধীনতা ও সমৃদ্ধি প্রতিবেদনে স্বাধীনতা সূচকে ২২ বছর ধরে বাংলাদেশের অবনতি হচ্ছে বলেও জানা যায়- যা এড়ানোর সুযোগ নেই। যেখানে ওই সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ১৬৪টি দেশের মধ্যে ১৪১তম আর অধিকাংশ ক্ষেত্রে 'স্বাধীনতাবঞ্চিত' ক্যাটাগরিতে। অন্যদিকে, সমৃদ্ধি সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ১৬৪টি দেশের মধ্যে ৯৯তম আর অধিকাংশ ক্ষেত্রে 'অসমৃদ্ধ' ক্যাটাগরিতে। আমরা মনে করি, এই পরিস্থিতি আমলে নিতে হবে এবং বৈশ্বিক স্বাধীনতা ও সমৃদ্ধি সূচকে অগ্রগতি নিশ্চিত করতে সর্বাত্মক পদক্ষেপ গ্রহণও জরুরি বলেই প্রতীয়মান হয়।

লক্ষণীয়, সূচকে অন্তর্ভুক্ত আছে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও আইনি উপাদান। ফলে যখন ২২ বছর ধরে বাংলাদেশের অবনতি হচ্ছে এই সূচকে তখন তা এড়ানোর সুযোগ নেই। যে উপদানগুলো অন্তর্ভুক্ত সেগুলো বিবেচনায় নিতে হবে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে। এটাও আমলে নেওয়া দরকার, ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেছেন, প্রত্যেক দেশ দুর্নীতির মতো বিষয়ে এবং অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অধিকার সুরক্ষিত রাখার লড়াই করছে। কিন্তু মূল বিষয় হলো- সমস্যা এড়িয়ে যাওয়া নয়, সক্রিয়ভাবে স্বীকার এবং মোকাবিলা করা। এছাড়া জানা যায়, স্বাধীনতা এবং সমৃদ্ধি সূচকের মধ্যে দুটি আলাদা সূচক রয়েছে, যা বিশ্বের ১৬৪টি দেশের স্বাধীনতা এবং সমৃদ্ধির ধরন অনুযায়ী ক্রম বা অবস্থান নির্ধারণ করেছে। অন্যদিকে, এটাও আলোচনায় এসেছে যে, উপাত্ত মতে, যেসব দেশে বেশি স্বাধীনতা রয়েছে, সেসব দেশে অধিকতর সমৃদ্ধিও দেখা যায়। অন্যদিকে, যেসব দেশে কম স্বাধীনতা রয়েছে, সেখানে কম সমৃদ্ধি থাকার প্রবণতা রয়েছে। যেসব দেশ শক্তিশালী আইনি ব্যবস্থাসহ রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বাধীনতাকে উৎসাহিত করে, তারা বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আরও বেশি করে স্বাগত জানায়। এসব দেশ কম স্বাধীনতা থাকা দেশগুলোর তুলনায় উলেস্নখযোগ্য পরিমাণ বেশি বিদেশি বিনিয়োগ পায়। সামগ্রিকভাবে স্বাধীনতা সূচক সুপারিশ করে যে, স্বাধীনতার প্রতি দৃঢ় অঙ্গীকার বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের মূল অনুষঙ্গ।

আমরা বলতে চাই, যেসব দেশে বেশি স্বাধীনতা রয়েছে, সেসব দেশে অধিকতর সমৃদ্ধিও দেখা যায়- এই বিষয়টিক এড়ানো যাবে না। এক্ষেত্রে স্বাধীনতা ও সমৃদ্ধি সূচকে অগ্রগতি নিশ্চিত করতে করণীয় নির্ধারণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়নে প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। দেশ কম স্বাধীনতা থাকা দেশগুলোর তুলনায় উলেস্নখযোগ্য পরিমাণ বেশি বিদেশি বিনিয়োগ পায়- এটা লক্ষ্য করা এবং উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা আবশ্যক বলেই আমরা মনে করি। মার্কিন দূতাবাস জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এই থিংক ট্যাংকের উপাত্ত স্পষ্ট। তা হলো মৌলিক স্বাধীনতার জোরদারকরণ দীর্ঘমেয়াদে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করে। ফলে আমরা মনে করি, সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিতে হবে এবং পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই।

সর্বোপরি বলতে চাই, স্বাধীনতা সূচকে ২২ বছর ধরে বাংলাদেশের অবনতি হচ্ছে এটি আমলে নিতে হবে এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। অন্যদিকে, সূচকে অন্তর্ভুক্ত আছে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও আইনি উপাদান। সঙ্গত কারণেই এসব উপাদান পর্যবেক্ষণ এবং পরিস্থিতি বিচার বিশ্লেষণ করে অগ্রগতি নিশ্চিত করতে উদ্যোগী হতে হবে। বৈশ্বিক স্বাধীনতা ও সমৃদ্ধি সূচকে বাংলাদেশের অবস্থানের অবনতি ঘটেছে- এটি আমলে নিয়ে অগ্রগতি নিশ্চিত করতে সর্বাত্মক উদ্যোগ গ্রহণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়ন হোক এমনটি কাম্য।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে