বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

দেশজুড়ে নাশকতা জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে

  ০৭ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
দেশজুড়ে নাশকতা জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে

শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশত্যাগের পর বিভিন্ন স্থানে হত্যা, বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগে যে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে তাতে উদ্বিগ্ন দেশের শিক্ষাবিদ, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, মানবাধিকার কর্মীসহ বিশিষ্টজনরা। উদ্বিগ্ন দেশের সচেতন মানুষও। দেশে শান্তি ফিরিয়ে আনার তাগিদ দিয়েছেন তারা। তবে নতুন পরিবর্তনকে বিজয় হিসেবে দেখছেন কেউ কেউ। কোটা আন্দোলন থেকে শুরু হওয়া শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীদের আন্দোলন সহিংস রূপ পাওয়ার পর তা সরকার পতনের আন্দোলনের রূপ পায়। এই আন্দোলনের মধ্যে সারাদেশে সহিংসতায় প্রাণ যায় অন্তত ৩০০ মানুষের। এমন পরিস্থিতিতে সোমবার পদত্যাগ করে ছোট বোন রেহানাকে নিয়ে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। সামরিক হেলিকপ্টারে করে তিনি পৌঁছান প্রতিবেশী দেশ ভারতের রাজধানী দিলিস্নতে। ইতোমধ্যে তিনি যুক্তরাজ্যের রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়েছেন বলে খবর এসেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে।

শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর সোমবারের দুপুরের পর থেকে গণভবন, সংসদ ভবনসহ বিভিন্ন জায়গায় শুরু হয় লুটপাট। এ সময় বঙ্গবন্ধুর ৩২ নম্বরের বাড়ি, আওয়ামী লীগের একাধিক কার্যালয়, প্রধান বিচারপতির বাস ভবন, দেশের বিভিন্ন থানাসহ একাধিক স্থাপনায় ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ করা হয়। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পুলিশ, আওয়ামী লীগ সমর্থক নেতাকর্মীর বাসাবাড়িতে হামলা, পিটিয়ে হত্যার ঘটনাও ঘটে। এর ফলে, প্রায় ১০০ মানুষ মারা যায়। এমন পরিস্থিতি নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক। বাংলাদেশের সামনে আইনগত জটিলতার একটি সংকটকাল চলছে। যে অন্তর্র্বর্তী সরকার নিয়ে আলোচনা চলছে তা সংবিধানে নেই। ফলে, এটি কীভাবে সামনে এগোবে, তা দেখতে হবে। সংবিধান অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের সঙ্গে সঙ্গে মন্ত্রিসভাও আর নেই। ইতোমধ্যে রাষ্ট্রপতি জাতীয় সংসদ ভেঙে দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি চাইলে অর্ডিনেন্স জারির মাধ্যমে তত্ত্ববাবধায়ক ব্যবস্থা পুনর্বহাল করতে পারেন।

1

আমরা মনে করি, দেশজুড়ে চলা নৈরাজ্য প্রতিরোধের সাময়িক দায়িত্ব এখন সেনাবাহিনীর, তাদের দায়িত্ব নেওয়া উচিত। ভবনে আগুন, লুটপাট, ভাঙচুর হচ্ছে, সংসদ ভবনও বাদ যাচ্ছে না এগুলো কোনোভাবেই প্রত্যাশিত নয়। এসব যে কোনো মূল্যে বন্ধ করতে হবে। অভিযোগ রয়েছে মন্দিরে, হিন্দুদের ওপর হামলা করা হচ্ছে। দ্রম্নত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। বাংলাদেশের চেয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ পৃথিবীর কোথাও নেই। এটি আমরা অবশ্যই দাবি করতে পারি। আমাদের আশপাশের দেশগুলোর দিকে তাকালে এর প্রমাণ মিলে। বাংলাদেশ ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সাম্প্র্রদায়িক সম্প্রীতির একটি উজ্জ্বল নজির, যেখানে সব ধর্মের লোক যুগ যুগ ধরে শান্তিতে বসবাস করে আসছে। বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ হিসেবে প্রশংসিত। ধর্ম-বর্ণ-গোত্র-সম্প্র্রদায় নির্বিশেষে বাংলাদেশে চমৎকার একটা পরিবেশ বিরাজ করছে বহু বছর ধরে। সবার মাঝে গড়ে উঠেছে সৌ-ভাতৃত্বের বন্ধন। এটা ধরে রাখতে হবে।

বড় দুর্ঘটনা এড়াতে এখনই সেনাবাহিনীকে রাষ্ট্রীয় শৃঙ্খলা রক্ষায় পদক্ষেপ নিতে হবে। দেশের তরুণ প্রজন্ম নতুন স্বাধীনতা নিয়ে এসেছে। এই বিজয় যাতে বেহাত হয়ে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। তাই সবার আগে দেশের জনগণের জানমালের রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে