পাঠ্যপুস্তকে প্রয়োজন দেশীয় গবেষণা
বিশ্ববিদ্যালয় মূলত উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার জায়গা। প্রথম শ্রেণি থেকে শুরু করে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত অর্জিত জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে বিভিন্ন বিষয়বস্তু নিয়ে গবেষণা হওয়া উচিত। কিন্তু আমাদের দেশে ঘটনাটি ঠিক কোনদিকে গড়াচ্ছে, তা বোঝা মুশকিল। স্নাতক-স্নাতকোত্তর পর্যায়ে এসেও একজন শিক্ষার্থী জ্ঞান অর্জন করেই চলেছে। কিন্তু এর অর্জিত জ্ঞানকে ব্যবহার বা কাজে লাগানোর কোনো উপযুক্ত স্থান এ দেশে নেই। একটা বড় অঙ্কের শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষার পর এবং পূর্বেই বিদেশে পারি জমায়। দেশের মেধা বিদেশে চলে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। উচ্চশিক্ষার পর এ দেশে কর্মক্ষেত্রের সংখ্যাও প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। প্রায় সব শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকে আমাদের বিদেশি গবেষণা উদাহরণ হিসেবে পড়তে হয়। আমাদের দেশে কী জনসংখ্যা কম, নাকি শিক্ষিত ব্যক্তি কম? তাহলে আমাদের কেনো বিদেশি গবেষণাগুলোকে উদাহরণ হিসেবে পড়তে হবে? দেশেই কী গবেষণা করা সম্ভব নয়? এতো এতো শিক্ষিত ব্যক্তি, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, বড় বড় ডিগ্রিধারী ব্যক্তিত্ব, তারা কী পারে না গবেষণা পরিচালনা করতে? বিপুলসংখ্যক জনগণকে কী কাজে লাগানোর কোনো উপায় নেই? নাকি শুধু উদ্যোগের অভাব? মূলত গবেষণা করতে যে উপকরণ ও জ্ঞানের প্রয়োজন, তা আমাদের দেশের শিক্ষার্থীদের দেওয়া হয় না। জ্ঞান অর্জন হওয়া উচিত উপভোগের বিষয়। কিন্তু আমাদের দেশে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা গেলানো হয়। অধিকাংশ শিক্ষার্থী শুধুমাত্র পাস করা এবং পাস করার পর একটি চাকরির জন্য পড়াশোনা করে। জ্ঞান অর্জন করে যে জ্ঞানের পরিধিকে বাড়ানো উচিত, এটা অনেকেই আমলে নেয় না। কথায় আছে, গোড়ায় গলদ। শিক্ষাব্যবস্থাই আমাদের পিছিয়ে থাকার একমাত্র মূল কারণ। প্রথমেই আমাদের শিক্ষা পদ্ধতিতে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে হবে। শিক্ষা পদ্ধতি হতে হবে গবেষণাকেন্দ্রিক। শিক্ষার্থী জ্ঞান অর্জন করবে এবং তা বাস্তবে প্রয়োগ করবে ও নতুন কিছু উদ্ভাবনের চেষ্টা করবে। তবেই না বিষয়বস্তু সম্পর্কে আমাদের সম্যক জ্ঞান অর্জন হবে। একজন শিক্ষার্থী গবেষণার মাধ্যমে প্রতিটি বিষয় সম্পর্কে সম্পূর্ণ জ্ঞান আহরণ করতে পারবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা করার প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি সরবরাহ করতে হবে এবং গবেষণা পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় সব জ্ঞান শিক্ষার্থীদের প্রদান করতে হবে। শিক্ষকদের নিজেদেরও এ বিষয়ে আরও জ্ঞান অর্জন করে তা শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিলিয়ে দিতে হবে। দেশেই উচ্চতর গবেষণাকেন্দ্র গড়ে তুলতে হবে, যেখানে সব রকম গবেষণা পরিচালনা করা সম্ভব হবে। দেশে গবেষণা পরিচালনা এবং পাঠ্যপুস্তক থেকে বিদেশি গবেষণা দূর করে দেশীয় গবেষণা অন্তর্ভুক্ত করা এখন সময়ের দাবি।
নাফিজ-উর-রহমান
শিক্ষার্থী, মনোবিজ্ঞান বিভাগ
ঢাকা কলেজ
কক্সবাজারে রাস্তার পাশে অস্বাস্থ্যকর খাবারের দোকান
কক্সবাজার হচ্ছে বাংলাদেশের সমুদ্রপ্রেমীদের জন্য ভালোবাসা, আবেগ ও শান্তির একটি জায়গা। প্রতিদিন হাজারো পর্যটকের ভিড়ে পরিপূর্ণ থাকে এই অপার সৌন্দর্যময় জায়গাটি। এখানে পর্যটকরা সমুদ্রের পাশাপাশি এখানকার খাবারের স্বাদও নিতে আসে। পর্যটকদের খাবারের জন্য এখানে ফাইভ স্টার হোটেল থেকে শুরু করে ফুটপাতের হোটেল পর্যন্ত আছে। কক্সবাজারের সুগন্ধা পয়েন্টের রাস্তার পাশে দৃশ্যমান অনেকগুলো অস্থায়ী হোটেল। হোটেলগুলোতে মেনু কার্ড দেখে খাবার সিলেক্ট করতে হয় না। কারণ সবগুলো খাবার সাজানো থাকে রাস্তার পাশে একটি ভ্যানে। সাজানো খাবারগুলোকে ঢেকে না রাখার ফলে চারপাশের নোংরা ধূলিকনা খাবারের ওপর পড়ে, যা স্বাস্থ্যের জন্য অনেক বেশি ক্ষতিকর। এভাবেই চলে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত জমজমাট ব্যবসা। ফুটপাতের হোটেলগুলোতে ধুলাবালি, মাছি নিত্য দিনের সঙ্গী। নিম্নমানের খাবার অপরিচ্ছন্ন ব্যবস্থাসহ একটি অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ এই হোটেলগুলোতে সর্বদা বিরাজ করে। এখানকার খাবারগুলো দেখতে মনোমুগ্ধকর ও কম দামে পাওয়া গেলেও খাবারগুলো স্বাদহীন ও নিম্নমানের হয়ে থাকে। এইসব খাবার গ্রহণের ফলে বিভিন্ন প্রকার জীবানুবাহিত রোগের দেখা যায়। তাছাড়া পূর্বেকার দিনের খাবারগুলোও গরম করে বিক্রি করা হয়। চোখের সামনে এইসব হোটেল গড়ে উঠলেও প্রশাসনের তদারকির অভাবে তারা জমজমাট ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এইসব হোটেলে ভোক্তা অধিদপ্তর ও প্রশাসনের নিয়মিত তদারকি থাকলে অন্তত খাবারের মান কিছুটা হলেও ভালো পাওয়া যাবে বলে আমরা আশাবাদী। হোটেলগুলোকে ফুটপাতের পাশ থেকে সরিয়ে একটি নির্দিষ্ট স্থানেও নেওয়া যেতে পারে। এতে করে পর্যটক সমুদ্রের বিলাসের সঙ্গে খাবারের ও পূর্ণ স্বাদ নিতে পারবে। এছাড়াও কক্সবাজারের বিভিন্ন অনিয়মের দিকেও প্রশাসনের গভীর দৃষ্টি রাখা উচিৎ বলে আমি মনে করি। ফুটপাতের হোটেল ব্যবসায়িদের ও বিভিন্ন সভা, সেমিনারের মাধ্যমে খাবারের মান ঠিক রাখার জন্য করণীয় ও অস্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণের ক্ষতিকর দিক তাদের সামনে সুন্দরভাবে তুলে ধরতে পারলে। আমি মনে করি, সমস্যা থেকে বের হয়ে আসা সম্ভব।
সাজ্জাদুল ইসলাম ইয়ামিন
\হশিক্ষার্থী, ঢাকা কলেজ