সোমবার, ২৬ মে ২০২৫, ১২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
প্রাথমিক বিজ্ঞান

পঞ্চম শ্রেণির পড়াশোনা

মো. মাসুদ খান, প্রধান শিক্ষক, ডেমরা পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা
  ১৩ মার্চ ২০২১, ০০:০০
পঞ্চম শ্রেণির পড়াশোনা
পঞ্চম শ্রেণির পড়াশোনা

প্রশ্ন: আমাদের দেশে যখন দিন তখন পৃথিবীর কোনো কোনো দেশে রাত হয়- এর কারণ ৫টি বাক্যে লেখ।

উত্তর: পৃথিবীর সম্পূর্ণ পৃষ্ঠে সূর্যের আলো একই সময়ে পড়ে না। কারণ পৃথিবী সর্বদা তার নিজ অক্ষের ওপর আবর্তনশীল। ফলে আমাদের দেশ পৃথিবীর যে অংশে অবস্থিত সে অংশ যখন সূর্যের দিকে থাকে তখন আমাদের দেশে দিন হয়, আবার এর বিপরীত পৃষ্ঠের দেশগুলোয় তখন সূর্যের আলো পৌঁছাতে পারে না বলে সে দেশগুলোয় রাত। একইভাবে আমাদের দেশে যখন রাত হবে তখন সেই দেশগুলো সূর্যের দিকে থাকবে এবং সেখানে দিন হবে।

1

প্রশ্ন: তুমি কী সব সময় আকাশের চাঁদ একই রকম দেখ? উত্তরের কারণ ৫টি বাক্যে ব্যাখ্যা কর।

উত্তর: আমি সব সময় আকাশের চাঁদ একই রকম দেখি না। কারণ, পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করার ফলে কখনো কখনো আমরা চাঁদের আলোকিত অংশের সবটাই দেখতে পাই, তখন চাঁদকে পূর্ণাঙ্গ থালার মতো দেখি। কখনো আবার আলোকিত অর্ধেক গোলকের অংশবিশেষ দেখতে পাই, এর ফলে চাঁদের অন্ধকার অংশ কখনো কখনো পৃথিবীর দিকে থাকে। পৃথিবীর চারদিকে ঘুরতে ঘুরতে এক সময় চাঁদ পৃথিবী ও সূর্যের মাঝখানে চলে আসে, এতে আমরা অমাবস্যা দেখতে পাই। কিন্তু চাঁদ পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করার পরবর্তী পর্যায়ে এর আলোকিত অংশবিশেষ পৃথিবীর দিকে চলে আসে, তখন আমি চাঁদের ফালি দেখতে পাই। এভাবে পর্যায়ক্রমে সাড়ে ২৯ দিন পর চাঁদের পরিক্রমা শেষ করে, তখন চান্দ্রমাস পূর্ণ হয়।

প্রশ্ন: সূর্য নক্ষত্রের বৈশিষ্ট্য লেখ।

উত্তর: সূর্য একটি নক্ষত্র। এর প্রধান প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো-

১. সূর্যের নিজস্ব আলো আছে।

২. সূর্য থেকে আমরা তাপ ও আলো পাই।

৩. এটি সৌরজগতের কেন্দ্রীয় নক্ষত্র।

৪. সূর্যকে কেন্দ্র করেই পৃথিবী নানা গতি লাভ করেছে।

৫. সূর্যের কারণেই পৃথিবীতে দিন-রাতের পরিবর্তন ঘটছে।

৬. সূর্য উজ্জ্বল ও উত্তপ্ত।

৭. এখানে প্রধানত হাইড্রোজেন ও হিলিয়াম গ্যাস আছে।

৮. সূর্যের কারণেই পৃথিবীতে জীবনের উদ্ভব সম্ভব হয়েছে।

প্রশ্ন: দিন-রাতের কারণ ব্যাখ্যা কর।

উত্তর: পৃথিবী তার মেরুরেখার ওপর পশ্চিম থেকে পূর্বদিকে সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘুরছে। এভাবে একবার ঘুরে আসতে সময় লাগে প্রায় ২৪ ঘণ্টা বা ১ দিন। পৃথিবীর এ দৈনিক গতির নাম আহ্নিকগতি। সূর্যের নিজস্ব আলো থাকে। পৃথিবীর আবর্তনের সময় এর যে অংশ সূর্যের দিকে থাকে সে অংশ আলোকিত হয়। অন্য পাশটি আলো পায় না, অন্ধকার থেকে যায়। আলোকিত অংশটিকে দিন এবং অন্য অংশটিকে রাত বলে। এভাবে পৃথিবীর অর্ধেকাংশে দিন এবং বাকি অর্ধেকাংশে রাত চলতে থাকে।

প্রশ্ন: সৌরজগৎ কী? আমাদের জন্য সূর্য এত গুরুত্বপূর্ণ কেন? ৪টি বাক্যে লেখ।

উত্তর: চাঁদ, সূর্য, পৃথিবী এবং অন্যান্য গ্রহ, উপগ্রহ, নানা বস্তু নিয়ে যে জগৎ গঠিত তাকে সৌরজগৎ বলে।

আমাদের নিকটতম নক্ষত্র সূর্য থেকেই আমরা তাপ ও আলো পাই। সূর্যকে কেন্দ্র করেই পৃথিবী নানা গতি লাভ করেছে। সূর্য থেকে আমাদের প্রয়োজনীয় সব শক্তি পাচ্ছি এবং দিন-রাতের পরিবর্তন ঘটছে সূর্যের জন্য। পৃথিবীতে জীবনের উদ্ভব সম্ভব হয়েছে সূর্যের জন্য।

প্রশ্ন: গ্রহ সম্পর্কে ৩টি বাক্যে লেখ। সৌরজগতে ৮টি গ্রহ আছে কিন্তু শুধু পৃথিবীতেই জীবন আছে কেন?

উত্তর: সৌরজগতে মোট ৮টি গ্রহ আছে, এগুলো হলো- বুধ, শুক্র, পৃথিবী, মঙ্গল, বৃহস্পতি, শনি, ইউরেনাস ও নেপচুন। গ্রহগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় বৃহস্পতি এবং সবচেয়ে ছোট বুধ। গ্রহগুলো সূর্যের চারদিকে নির্দিষ্ট কক্ষপথে অনবরত ঘুরছে।

জীবনের বিকাশের জন্য অত্যাবশ্যকীয় উপাদান মাটি, পানি, বায়ু, তাপ, আলো একমাত্র পৃথিবীতে পাওয়া সম্ভব হয়েছে। পৃথিবী ছাড়া অন্য কোনো গ্রহে এসব উপাদান পাওয়া যায় না বলে জীবনের বিকাশও সেখানে সম্ভব হয় না। তাই জীবনও সেখানে সম্ভব নয়।

প্রশ্ন: উপগ্রহ কাকে বলে? ৫টি বাক্যে চাঁদের বৈশিষ্ট্য লেখ।

উত্তর: যেসব জ্যোতিষ্ক গ্রহের চারদিকে ঘোরে তাদের উপগ্রহ বলে।

চাঁদের ৫টি বৈশিষ্ট্য হলো-

১. চাঁদ পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ।

২. এটি আসলে পৃথিবীর মতো কঠিন এক গোলক।

৩. পৃথিবীর চারপাশে ঘোরে।

৪. আয়তন পৃথিবীর পঞ্চাশ ভাগের এক ভাগ।

৫. সূর্যের আলোয় আলোকিত হয়।

প্রশ্ন: বার্ষিক গতি কী? পৃথিবীর বার্ষিক গতির বৈশিষ্ট্য ৪টি বাক্যে লেখ।

উত্তর: পৃথিবী সূর্যের চারপাশে একবার ঘুরে আসতে যে সময় লাগে তাই পৃথিবীর বার্ষিক গতি। নিচে এর বৈশিষ্ট্য ৪টি বাক্যে লেখা হলো-

১. বার্ষিক গতির জন্য প্রতিবারে সময় লাগে ৩৬৫ দিন ৬ ঘণ্টা।

২. এর পথ উপবৃত্তাকার।

৩. এর ফলে সূর্য থেকে পৃথিবীর দূরত্ব কখনো কমে আবার কখনো বাড়ে।

৪. ঘোরার সময় পৃথিবীর মেরু রেখাটি অক্ষের সঙ্গে ৬৬ ডিগ্রি কোণ করে থাকে।

প্রশ্ন: প্রযুক্তি কী? রাতে পড়াশোনা করার সময় তুমি কি কোনো প্রযুক্তি ব্যবহার কর? ৪টি বাক্যে ব্যাখ্যা কর।

উত্তর: মানুষ তার পরিবেশ নিয়ন্ত্রণ ও সমস্যা সমাধানে যেসব যন্ত্রপাতি বা হাতিয়ার উদ্ভাবন করেছে ও ব্যবহার করছে তা হলো প্রযুক্তি।

রাতে পড়াশোনা করার সময় আমি বিভিন্ন ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করি। প্রথমত, রাতে পড়াশোনর সময় ঘরে ব্যবহৃত বৈদু্যতিক বাতি বা ল্যাম্প সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হয়, যা একটি প্রযুক্তি। তা ছাড়া বৈদু্যতিক পাখা, লেখার জন্য ব্যবহৃত কলম, বই সবই প্রযুক্তি।

প্রশ্ন: আমাদের দেশের গ্রামীণ কৃষিতে কি তুমি কোনো প্রযুক্তির ব্যবহার লক্ষ্য করছ? ৫টি বাক্যে লেখ।

উত্তর: আমাদের দেশের গ্রামীণ কৃষিতে আমি বিভিন্ন ধরনের প্রযুক্তির ব্যবহার লক্ষ্য করছি। যেমন-

১। কৃষকরা এখন উন্নতমানের ধান, আলু, গমসহ বিভিন্ন ফসল ফলাচ্ছে।

২। ট্রাক্টরের সাহায্যে খুব সহজেই জমি চাষ করছে।

৩। অধিক ফলনের জন্য বিভিন্ন ধরনের সার ব্যবহার করছে।

৪। পোকামাকড়ের আক্রমণ থেকে ফসল রক্ষার জন্য কীটনাশক ব্যবহার করছে।

৫। উৎপাদিত ফসল সংরক্ষণের জন্যও বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার আমি লক্ষ্য করছি।

প্রশ্ন: আধুনিক কৃষিপ্রযুক্তি না থাকলে আমাদের কী কী অসুবিধা হতো? ৫টি বাক্যে লেখ।

উত্তর: আধুনিক কৃষিপ্রযুক্তি ব্যবহার করে উন্নতমানের ধান, গম, আলু, ফলমূল, শাকসবজি ইত্যাদি উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে। এ প্রযুক্তির মাধ্যমে ফসলের উৎপাদন কয়েক গুণ বাড়ানো সম্ভব হয়েছে, যা দিয়ে অধিক জনসংখ্যার খাদ্য চাহিদা মেটানো যাচ্ছে। আধুনিক কৃষিপ্রযুক্তি না থাকলে উন্নতমানের এবং অধিক ফলনশীল ফসল উৎপাদন সম্ভব হতো না। এতে বাড়তি জনসংখ্যার খাদ্য সমস্যা সমাধান করা অসম্ভব হয়ে পড়ত।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে