সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর
ক. কী ছাই হয়ে গেছে?
খ. 'পৃথিবীর এই সব গল্প বেঁচে রবে চিরকাল' বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?
গ. উদ্দীপকের প্রকৃতি জানার সঙ্গে 'সেই দিন এই মাঠ' কবিতার সাদৃশ্যপূর্ণ দিক ব্যাখ্যা করো।
ঘ. কবিতায় উলিস্নখিত সভ্যতার বিবর্তনের সঙ্গে প্রকৃতির সম্পর্ক উদ্দীপকের আলোকে বিশ্লেষণ করো।
উত্তর:
ক. এশিরীয় ও বেবিলনীয় সভ্যতা ছাই হয়ে গেছে।
খ. 'পৃথিবীর এই সব গল্প বেঁচে থাকবে চিরকাল' বলতে কবি বুঝিয়েছেনে প্রকৃতির বহমানতা চিরকাল বেঁচে থাকবে।
পৃথিবীর প্রবহমানতা চিরন্তন। ব্যক্তিমানুষ এক সময় পৃথিবী ছেড়ে চলে যায়। কিন্তু চালতাফুল আগের মতোই ভিজে শিশিরের জলে, লক্ষ্ণীপেঁচা গান গায়। খেয়া নৌকার যাতায়াত, পৃিথবীর কলরব সবই চলতে থাকে প্রকৃতির নিয়মে। তাই কবি বলছেনে, 'পৃিথবীর এইসব গল্প বেঁচে রবে চিরকাল'। অর্থাৎ পৃথিবীর এই বহমানতা কালক্রমে চলতেই থাকে।
গ. 'সেই দিন এই মাঠ' কবিতার সাথে উদ্দীপকে উলিস্নখিত প্রকৃতির প্রবহমানতার দিকটি সাদৃশ্যপূর্ণ।
\হ'সেই দিন এই মাঠ' কবিতায় বলা হয়েছে, প্রকৃতির চলমানতা অবিনশ্বর। মানুষ এক সময় পৃথিবী ছাড়তে বাধ্য হয়। কিন্তু প্রকৃতিতে থাকে চিরকালের ব্যস্ততা। মাঠে-ঘাটে চঞ্চলতা, চালতা ফুলে পড়ে শীতের শিশির, লক্ষ্ণীপেঁচার ডাক, খেয়া নৌকার ছুটে চলা থেমে যায় না। কোথাও থাকে না ব্যক্তি মানুষের মৃতু্যর রেশ। সত্য হয়ে ওঠে কেবল পৃথিবীর বহমানতা।
উদ্দীপকের অপু, দুর্গাসহ আরও অনেকে প্রকৃতির লালিত সন্তান। প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মে এরা প্রকৃতি থেকে হারিয়ে যায়। কিন্তু প্রকৃতি চিরকালই নানা রূপে-রসে-গন্ধে-বর্ণে বিরাজমান থাকে। সুন্দর নির্মল প্রকৃতি প্রাণবন্ত থাকে। তাই উদ্দীপক ও 'সেই দিন এই মাঠ' কবিতা পর্যালোচনা করলে আমরা প্রকৃতির বহমানতার সাদৃশ্য খুঁজে পাই।
ঘ. প্রকৃতির সাথে মানুষের অস্থায়ী সম্পর্কের মাধ্যমে সভ্যতার বিবর্তন ঘটেছে। এই ধারণা 'সেই দিন এই মাঠ' কবিতায় যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে উদ্দীপকে।
'সেই দিন এই মাঠ' কবিতার কবি জীবনানন্দ দাশ তুলে ধরেছেন প্রকৃতির অবিনশ্বরতার কথা। মানুষ প্রকৃতিরই সন্তান। প্রকৃতির সাথে একাত্ম হয়ে সে গড়ে তোলে নতুন সভ্যতা। মানুষ এক সময় মারা যায়। তাদের নির্মিত সভ্যতাও ধ্বংস হয়ে যায়। কিন্তু প্রকৃতি থাকে অটল, অবিচল।
আলোচ্য উদ্দীপকে প্রকৃতিকে জীবন্ত চরিত্র হিসেবে উলেস্নখ করা হয়েছে। কারণ প্রকৃতির মধ্যে একটা গতিময়তা বিদ্যমান। ফুল ফোটে ঝরে আবার ফোটে। অপু, দুর্গাসহ অনেকেই প্রকৃতির সন্তান হিসেবে জন্ম নেয়। আবার তারা চলেও যায়। আরেক প্রজন্ম এসে তাদের স্থান দখল করে। প্রকৃতিতে যেন ভাঙা-গড়ার খেলা চলতে থাকে। মানুষ মরে যায় কিন্তু প্রকৃতি তার স্বরূপে বিরাজমান থাকে। সব ভাঙা-গড়া, জন্ম-মৃতু্য সবকিছুকেই প্রকৃতি ধারণ করে।
সভ্যতার বিবর্তনের সাথে তাই প্রকৃতির সম্পর্ক বিদ্যমান। সব পরবির্তন বিবর্তনের মধ্যেও প্রকৃতি তার সৌন্দর্যকে ধরে রাখে। মানুষের গড়া বিভিন্ন সভ্যতার নিদর্শনও যেন প্রকৃতির উপাদান হয়ে ওঠে। মানুষের জীবন নতুন নতুন সভ্যতার উন্মেষ ঘটায়। সেগুলোও এ সময় ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। তবু প্রকৃতি থাকে নির্বিকার। আলোচ্য কবিতা ও উদ্দীপক আমাদের সে ইঙ্গিতই দেয়।
১০। পাকসেনারা থানায় ঘাঁটি স্থাপন করলে এলাকার মানুষের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করে। সবাই পালাতে শুরু করলে কলিমদ্দি দফাদার ভিন্ন পরিকল্পনা করেন। তিনি পাকসেনাদের ঘায়েল করার জন্য তাদের সাথে যোগাযোগ শুরু করেন। আর গোপনে সব খবর পৌঁছে দেন, প্রস্তুত থাকতে বলেন। একদিন সুযোগ মতো পাকসেনাদের গ্রামে এনে ভাঙা পুলের গোড়ায় দাঁড় করিয়ে কলিমদ্দি দফাদার তা পার হতে গিয়ে পরিকল্পনা মাফিক জলে পড়ে যান। সাথে সাথে গর্জে ওঠে ওত পেতে থাকা মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র। আর খতম হয় সব কজন পাকসেনা।
ক. বুধা প্রায়ই কী সাজত?
খ. 'আধা-পোড়া বাজারটার দিকে তাকিয়ে ওর চোখ লাল হতে থাকে' কেন?
গ. উদ্দীপকের কলিমদ্দি দফাদারের সাথে 'কাকতাড়ুয়া' উপন্যাসের সাদৃশ্যপূর্ণ চরিত্রটি ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকটি 'কাকতাড়ুয়া' উপন্যাসের সমগ্র ভাবকে ধারণ করে কি? যুক্তিসহ প্রমাণ করো।
উত্তর :
ক. বুধা প্রায়ই কাকতাড়ুয়া সাজত।
খ. হানাদাররা আগুন দিয়ে বাজারটা পুড়িয়ে দিয়েছিল বলে প্রতিশোধের প্রতিজ্ঞায় 'আধ-পোড়া বাজারটার দিকে তাকিয়ে বুধার চোখ লাল হতে থাকে'।
কোনো অন্যায় বা নির্মমতা দেখলে বুধার খুব রাগ হয়। রেগে গেলে তার চোখ লাল হতে থাকে। মুক্তিযুদ্ধকালে পাকহানাদার বাহিনী একদিন বুধাদের গ্রামে ঢুকে বহু মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করে। তারা আদিম নৃশংসতায় আগুন দিয়ে বাজারটা পুড়িয়ে দেয়। এ ঘটনায় বুধা দারুণ ক্রোধে অগ্নিশর্মা হয়ে ওঠে। হানাদারদের প্রতি তার প্রবল ঘৃণা সৃষ্টি হয়। এর প্রতিশোধ গ্রহণ করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয় সে। বুধার লাল চোখ সেই অনুভূতিই প্রকাশ করে।
গ. সুকৌশলে শত্রম্ন নিধনের দিক থেকে উদ্দীপকের কলিমদ্দি দফাদারের সাথে 'কাকতাড়ুয়া' উপন্যাসের বুধা চরিত্রটি সাদৃশ্যপূর্ণ।
'কাকতাড়ুয়া' উপন্যাসের বুধা পিতৃমাতৃহীন অনাথ কিশোর হলেও সে ছিল মেধাবী ও কৌশলী। শক্তি দিয়ে যে কাজটি করা যায় না বুদ্ধি দিয়ে সে কাজটি অনায়াসে করা যায়। বুধার বুদ্ধিমত্তা আমাদের সে কথাই স্মরণ করিয়ে দেয়। সে সুকৌশলে একাধিক রাজাকারের বাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছিল। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মিলিটারিদের বাঙ্কারে মাইন পুঁতে রেখেছিল।
উদ্দীপকের কলিমদ্দি দফাদার পাকসেনাদের ঘায়েল করার জন্য কৌশলী পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। তিনি পাকসেনাদের সাথে মিশে গিয়ে তাদেরই নাস্তানাবুদ করেন। প্রকৃতপক্ষে তিনি ছিলেন একজন মুক্তিসংগ্রামী। মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে হাত মিলিয়ে তিনি হানাদার নিধনে ভূমিকা রাখেন। 'কাকতাড়ুয়া' উপন্যাসের বুধাও তেমনি নানা কৌশলে মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা করেছিল।