রোববার, ১১ মে ২০২৫, ২৮ বৈশাখ ১৪৩২

৯ম শ্রেণির বাংলা ১ম পত্র

মোচ্ছা. রুবিনা খাতুন, সহকারী শিক্ষক, দখিনা রূপকারী উচ্চ বিদ্যালয় বাগাইছড়ি, রাঙামাটি য়
  ০৭ জুলাই ২০২৩, ০০:০০
৯ম শ্রেণির বাংলা ১ম পত্র
৯ম শ্রেণির বাংলা ১ম পত্র

বহিপীর

উত্তর : ক. সূর্যাস্ত আইন প্রণীত হয় ১৭৯৩ সালে।

খ. জমিদারি হারানোর শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে বলে জমিদার হাতেম আলির মনে শান্তি নেই। খাজনা বাকি পড়ে যাওয়ায় হাতেম আলির জমিদারি হাতছাড়া হওয়ার উপক্রম হয়। সূর্যাস্ত আইন অনুযায়ী যথাসময়ে খাজনা পরিশোধে ব্যর্থ হলে জমিদারি নিলামে ওঠে। তখন কর্তৃপক্ষ অন্য কারও কাছে জমিদারি হস্তান্তর করে। জমিদারি বাঁচানোর জন্য অনেক চেষ্টা করেও টাকার জোগাড় করতে পারেন না জমিদার হাতেম আলি। এমনি এক পরিস্থিতিতে হাতেম আলি কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েন। জমিদারি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যাওয়ার ভয়ে তিনি আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। তাই হাতেম আলির মনে শান্তি নেই।

গ. 'বহিপীর' নাটকে হাতেম আলি টাকার বিনিময়ে তার কাছে আশ্রিতার সর্বনাশ করতে রাজি হননি। তার এই চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য উদ্দীপকের মঞ্জুর সাহেবের চরিত্রের সাথে বৈসাদৃশ্যপূর্ণ।

খাজনা বাকি পড়ায় হাতেম আলির জমিদারি নিলামে ওঠে। বন্ধুদের কাছে সাহায্য চেয়েও তিনি পাননি। এতে তিনি অত্যন্ত চিন্তিত ও বিমর্ষ হয়ে পড়েন। বহিপীরের কাছে ঘটনাটি খুলে বললে তাহেরাকে তার হাতে তুলে দেওয়ার শর্তে বহিপীর তাকে জমিদারি বাঁচানোর জন্য অর্থ ধার দিতে চান। এতে তাহেরা রাজি হলেও জমিদার রাজি হননি। কারণ নিজেকে তার হৃদয়হীন ও কসাই মনে হতে থাকে। জমিদারি চলে গেলেও তিনি একটি নিষ্পাপ মেয়ের জীবন বিপন্ন করতে চাননি। উদ্দীপকের মঞ্জুর সাহেবের ভগ্নিপতি মারা গেলে ভগিনী মাজেদাকে নিজের কাছে নিয়ে আসেন। টাকা বাঁচাতে মাজেদাকে তিনি ব্যবসায়ীর দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে বিয়ে দিতে চান। যদিও স্ত্রীর বাধায় তিনি তা করতে পারেননি। মঞ্জুর সাহেব নিজের সুবিধার জন্য ভগিনীর ভবিষ্যৎ চিন্তা না করে এমন একটি অমানবিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু বহিপীর নাটকের জমিদার হাতেম আলি চরম বিপদগ্রস্ত হয়েও আশিধতা তাহেরাকে বিপদের মধ্যে ঠেলে দিয়ে নিজে সুখী হতে চাননি।

ঘ. 'বহিপীর' নাটকের খোদেজা চরিত্রে মাতৃসুলভ সহানুভূতি থাকলেও কুসংস্কারাচ্ছন্নতার কারণে তা পূর্ণরূপে বিকশিত হতে পারেনি। কিন্তু উদ্দীপকের মঞ্জুর সাহেবের স্ত্রীর মাঝে তা পূর্ণরূপে বিকাশ লাভ করেছে।

বহিপীর নাটকে জমিদারপত্নী খোদেজা কুসংস্কারাচ্ছন্ন ও অত্যন্ত ধর্মভীরু। অচেনা মেয়ে তাহেরাকে তিনি বজরায় আশ্রয় দিয়েছেন। মেয়েটি দুঃখের কাহিনী শুনে ব্যথিতও হয়েছেন। কিন্তু যখনই শুনেছেন মেয়েটি একজন পীরের পালিয়ে আসা স্ত্রী তখন তাকে ফিরিয়ে দিতে চেয়েছেন। পীরের বদদোয়া কিংবা অমঙ্গলের চিন্তায় ভীত হয়েছেন।

উদ্দীপকের মঞ্জুর সাহেবের স্ত্রী প্রতিবাদী, সাহসী নারী। তার সঙ্গে মাজেদার বিয়ে হবে এটা তিনি মেনে নিতে পারেননি। ব্যবসায়ীর দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে একটা দায়সারা গোছের বিয়ে দিয়ে তিনি মাজেদার জীবনটাকে সংকটাপন্ন করতে চাননি। তাই তিনি সচেতনভাবে জোরালো ভূমিকা রেখেছেন এবং বিয়েটি বন্ধ করে দিয়েছেন। তার এই সাহসী কর্মকান্ডে তার মধ্যে মানবিকতাপূর্ণ ও মহতী হৃদয়ের পরিচয় পাই।

'বহিপীর' নাটকে খোদেজা চরিত্রে মাতৃসুলভ সহানুভূতি বিদ্যমান। জমিদারপত্নী খোদেজার কন্যাসন্তান ছিল না। তাই তিনি তাহেরাকে অনেকটা মেয়ের মতোই দেখেছেন। বিপদে ঠাঁই দিয়েছেন। সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। তাহেরা পানিতে ঝাঁপ দিতে গেলে হাশেম তাহেরাকে বাঁচানোর উদ্যোগ নেয় সেখানেও তার সম্মতি ছিল। আবার বহিপীরের কর্মকান্ডে হাশেম মার্জিত প্রতিবাদ করলে খোদেজা তা বারণ করেছে কিন্তু পুত্রের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেননি। অন্যদিকে মঞ্জুর সাহেবের স্ত্রীর মধ্যে ও মাতৃসুলভ সহানুভূতি কাজ করেছে। মাজেদাকে তিনি সতীনের ঘর করতে দিতে চাননি। তিনি নিশ্চিতই বুঝেছিলেন মাজেদা সেখানে শান্তিতে থাকবে না। মাতৃসুলভ সহানুভূতির পাশাপাশি তার মধ্যে ছিল ন্যায়-অন্যায় বোধ। সমুন্নত ছিল বিবেক ও ব্যক্তিত্ববোধ।

কিন্তু নাটকের খোদেজা বহিপীরের বদদোয়ার ভয়ে মাতৃস্নেহের বিষয়টিকে অগ্রাহ্য করতে চেয়েছেন। খোদেজার ইচ্ছা ও ভবিষ্যতের কাছে গুরুত্ব পেয়েছে ধর্মীয় চিন্তা। তাই উদ্দীপকের মঞ্জুর সাহেবের স্ত্রী

চরিত্রটি বহিপীর নাটকের খোদেজা চরিত্র নয়।

৩. সুমির বাবা দিনমজুর। যৌতুকের টাকার অভাবে সুমির বাবা বৃদ্ধ মোড়লের সাথে তার বিয়ে ঠিক করে। সুমি রাজি না হয়ে কর্মের সন্ধানে বেরিয়ে পড়তে গেলে সবাই মিলে তাকে ধরে জোর করে বিয়ে দিতে চায়। তখন রাহুল প্রতিবাদ করে এ বিয়ে ঠেকায়। অবশেষে সে নিজেই বিনা যৌতুকে তাকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেয়।

ক. নৌকার সঙ্গে কিসের ধাক্কা লেগেছিল?

খ. এমন মেয়েও কারও পেটে জন্মায় জানতাম না- এ কথাটি বুঝিয়ে বলো।

গ. উদ্দীপকের সুমি চরিত্রটি 'বহিপীর' নাটকের কোন চরিত্রের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ- তা তুলে ধরো।

ঘ. প্রতিবাদের প্রতীক চরিত্র হিসেবে উদ্দীপকের রাহুল ও 'বহিপীর' নাটকের হাশেম আলি অভিন্ন- মূল্যায়ন করো।

উত্তর : ক. নৌকার সঙ্গে বজরার ধাক্কা লেগেছিল।

খ. তাহেরার দুঃসাহস লক্ষ্য করে 'বহিপীর' নাটকে বর্ণিত জমিদারের স্ত্রী খোদেজা তাহেরার উদ্দেশে উক্তিটি করেছেন।

'বহিপীর' নাটকে তাহেরাকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে পীরের সাথে বিয়ে দিলে সে ঘর ছেড়ে পালায়। তাহেরা কিছুতেই একজন বুড়ো পীরকে স্বামী হিসেবে মানতে চায় না। পীরের হাত থেকে রক্ষা পেতে সে মরিয়া হয়ে ওঠে, আত্মহত্যার ভয় দেখায়। কিন্তু কোনো মেয়ের বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর স্বামীর ঘর করবে না এটা মেনে নিতে পারছিলেন না

জমিদারের স্ত্রী খোদেজা। বিশেষত স্বামী যখন একজন পীর তখন কোনো মেয়ের পক্ষে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া খোদেজার কাছে অকল্পনীয়। তাই খোদেজা এমন উক্তি করেছেন।

গ. অসম বিয়েতে রাজি না হওয়ার দিক থেকে উদ্দীপকের সুমী চরিত্রটি 'বহিপীর' নাটকের তাহেরা চরিত্রের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। 'বহিপীর' নাটকে তাহেরা এক প্রতিবাদী চরিত্র। কিশোরী তাহেরাকে মা-

বাবা তার অমতে একজন বুড়ো পীরের সাথে বিয়ে দিলে সে বাড়ি ছেড়ে পালায়। কারণ একজন অপছন্দের মানুষের সাথে সে সারা জীবন কাটাতে চায় না। নিজের ভবিষ্যৎ ভেবে তাই সে পালাতে বাধ্য হয়। দরিদ্র দিনমজুরের মেয়ে হলেও উদ্দীপকের সুমি এক স্বাধীনচেতা তরুণী। যৌতুকের টাকার অভাবে তার বাবা তাকে এক বৃদ্ধ মোড়লের সাথে বিয়ে দিতে চায়। সুমির এতে ঘোর আপত্তি থাকায় নিজের পায়ে দাঁড়ানোর জন্য কাজের সন্ধানে বের হওয়ার উদ্যোগ নেয়। 'বহিপীর' নাটকের তাহেরাও জোর করে বিয়েতে বাধ্য করায় সে ঝুঁকি নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়ে।

হ পরবর্তী অংশ আগামী সংখ্যায়

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে