বৃহস্পতিবার, ০৮ মে ২০২৫, ২৫ বৈশাখ ১৪৩২

পঞ্চম শ্রেণির বিজ্ঞান

আরিফ আনজুম, সহকারী শিক্ষক, আমতলী মডেল স্কুল, বগুড়া
  ২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
পঞ্চম শ্রেণির বিজ্ঞান
পঞ্চম শ্রেণির বিজ্ঞান

প্রশ্ন: উদ্ভিদ কীভাবে প্রাণীর উপর নির্ভরশীল? ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : উদ্ভিদ তার খাদ্য তৈরি, বৃদ্ধি, পরাগায়ন ও বীজের বিস্তরণের জন্য প্রাণীর উপর নির্ভরশীল। উদ্ভিদ খাদ্য তৈরির জন্য প্রাণীর ত্যাগ করা কার্বন ডাইঅক্সাইড ব্যবহার করে। পুষ্টি উপাদানের জন্যও উদ্ভিদ প্রাণীর ওপর নির্ভরশীল। প্রাণীর মৃত দেহ প্রাকৃতিক সারে পরিণত হয়। এ সার পুষ্টি হিসেবে ব্যবহার করে উদ্ভিদ বেড়ে উঠে। পরাগায়নের ফলে উদ্ভিদের বীজ সৃষ্টি হয়। এই বীজ থেকে আবার নতুন উদ্ভিদ জন্মায়। বিভিন্ন প্রাণী যেমন- পাখি, মৌমাছি ইত্যাদি এই পরাগায়নে সাহায্য করে। মাতৃউদ্ভিদ থেকে বিভিন্ন স্থানে বীজের ছড়িয়ে পড়াই হলো বীজের বিস্তরণ। বীজের বিস্তার নতুন নতুন উদ্ভিদ আবাস গড়ে তুলতে সাহায্য করে। আর এই বিস্তরণেও প্রাণীর ভূমিকা অনস্বীকার্য। এভাবেই পরিবেশে উদ্ভিদ প্রাণীর উপর নির্ভর করে।

প্রশ্ন: প্রাণী ও উদ্ভিদ কীভাবে জড় বস্তুর উপর নির্ভর করে? ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : সকল প্রাণীর বেঁচে থাকার জন্য বায়ু, পানি ও খাদ্যের মতো জড় বস্তুর প্রয়োজন হয়। আবার মাটি ও পানি অনেক প্রাণীর বাসস্থান। যেমন : অনেক পোকা-মাকড়, কেঁচো ইত্যাদি মাটিতে বাস করে। আবার মাছ পানিতে বাস করে। অন্যদিকে উদ্ভিদও বেঁচে থাকার জন্য জড় বস্তুর উপর নির্ভরশীল। যেমন : সূর্যের আলো, মাটি, পানি বায়ু ইত্যাদি জড় বস্তু ছাড়া উদ্ভিদের বেঁচে থাকা অসম্ভব। উদ্ভিদ সূর্যের আলো, পানি ও কার্বন ডাইঅক্সাইড ব্যবহার করে নিজের খাদ্য নিজেই তৈরি করে। পানি আবার বিভিন্ন উদ্ভিদের আবাসস্থল। যেমন : শাপলা, কচুরিপানা ইত্যাদি। এভাবেই মানুষের মতো অন্যান্য প্রাণী ও উদ্ভিদ বেঁচে থাকার জন্য জড় বস্তুর উপর নির্ভর করে।

প্রশ্ন: মানুষ কীভাবে জড় বস্তুর উপর নির্ভরশীল?

উত্তর : পরিবেশের অন্যতম উপাদান হলো জড়। মাটি, পানি, বায়ু, গাড়ি, চেয়ার, টেবিল ইত্যাদি হলো জড় বস্তু। মানুষ বেঁচে থাকার জন্য এসব জড় বস্তুর উপর নির্ভর করে। যেমন মানুষের শ্বাস গ্রহণের জন্য বায়ু, পান করার জন্য পানি এবং প্রয়োজনীয় পুষ্টির জন্য খাবার প্রয়োজন। ফসল ফলানো ও বাসস্থান তৈরির জন্য মানুষের মাটি প্রয়োজন। এ ছাড়াও জীবন যাপনের জন্য বাসস্থান, আসবাবপত্র, পোশাক, যন্ত্রপাতি ইত্যাদি প্রয়োজন। যার সবই জড়বস্তু। আর এভাবেই মানুষকে বেঁচে থাকতে হলে জড় বস্তুর উপর নির্ভর করতে হয়।

প্রশ্ন: শ্বাসকার্য পরিচালনায় উদ্ভিদ ও প্রাণী একে অপরের উপর নির্ভরশীল কেন?

উত্তর : শ্বাসকার্যের আবশ্যকীয় উপাদান অক্সিজেন, উদ্ভিদের খাদ্য উৎপাদন প্রক্রিয়ায় তৈরি হয় বলে শ্বাসকার্য পরিচালনায় উদ্ভিদ ও প্রাণী একে অপরের উপর নির্ভরশীল। সকল জীবিত বস্তুর শ্বাসকার্য অক্সিজেন প্রয়োজন। সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় সবুজ উদ্ভিদ খাদ্য তৈরির পাশাপাশি পরিবেশে অক্সিজেন ছাড়ে। সকল জীব শ্বসন প্রক্রিয়ায় এই অক্সিজেন গ্রহণ করে এবং কার্বন ডাইঅক্সাইড নির্গত করে। সবুজ উদ্ভিদ উক্ত কার্বন ডাইঅক্সাইডকে খাদ্য তৈরিতে ব্যবহার করে। এভাবে উদ্ভিদ ও প্রাণী অক্সিজেন ও কার্বন ডাইঅক্সাইডের আদান-প্রদানের মাধ্যমে শ্বাসকার্য পরিচালনা করে।

পরিবেশ দূষণ

সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর

প্রশ্ন:পরিবেশ দূষণ বলতে কী বোঝ?

উত্তর : পরিবেশের যে পরিবর্তন জীবের জন্য ক্ষতিকর হয় তাকে পরিবেশ দূষণ বলা হয়।

প্রশ্ন:বায়ু দূষণের ফলে কী হয়?

উত্তর : বায়ু দূষণের ফলে পরিবেশের উপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। দূষণের ফলে পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় ও এসিড বৃষ্টি হয় এবং মানুষ ফুসফুসের ক্যান্সার, শ্বাসজনিত রোগসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়।

প্রশ্ন:চার ধরনের পরিবেশ দূষণ কী কী?

উত্তর : চার ধরনের পরিবেশ দূষণ হলো :

১. বায়ু দূষণ, ২. পানি দূষণ, ৩. মাটি দূষণ ও ৪. শব্দ দূষণ।

প্রশ্ন:পরিবেশ দূষণের উৎসসমূহ কী?

উত্তর : পরিবেশ দূষণের উৎস সমূহ হলো : জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার, শিল্পায়ন, জনসংখ্যা বৃদ্ধি ইত্যাদি।

প্রশ্ন:পরিবেশ সংরক্ষণের ৫টি উপায় লেখ।

উত্তর : পরিবেশ সংরক্ষণের ৫টি উপায় হলো :

১. জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমানো।

২. কাজ শেষে বাতি নিভিয়ে রেখে বিদু্যৎ অপচয় রোধ করা।

৩. গাড়িতে চড়ার পরিবর্তে পায়ে হেটে বা সাইকেলে চলাচল করা।

৪. প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যবহার কমিয়ে পুনঃব্যবহার ও রিসাইকেল করা।

৫. কারখানার বর্জ্য ও রাসায়নিক পদার্থ, তেল ইত্যাদি পরিবেশে ফেলার পূর্বে পরিশোধন করা।

প্রশ্ন:মাটি দূষণের কারণ কী?

উত্তর : কৃষি কাজে ব্যবহৃত রাসায়নিক সার ও কীটনাশক, গৃহস্থালি ও হ্রাসপাতালের বর্জ্য, কলকারখানার বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ ও তেল ইত্যাদির মাধ্যমে মাটি দূষিত হয়।

প্রশ্ন:পরিবেশ দূষণ কী?

উত্তর : পরিবেশের যেসব পরিবর্তনের ফলে জীবের বেঁচে থাকা কষ্টকর হয়ে যায়, সেই পরিবর্তনই পরিবেশ দূষণ।

প্রশ্ন:শব্দ দূষণের দুটি উৎসের নাম লেখ।

উত্তর : শব্দ দূষণের দুটি উৎস নিম্নরূপ :র. উচ্চস্বরে গান বাজানো ; রর. যানবাহনের হর্ন।

প্রশ্ন:পরিবেশ সংরক্ষণের একটি উপায় লেখ।

উত্তর : নতুন নতুন গাছ লাগিয়ে ও বনায়ন গড়ে তুলে পরিবেশ সংরক্ষণ করা যায়। এটি পরিবেশ সংরক্ষণের একটি উপায়।

প্রশ্ন:পরিবেশ কীভাবে দূষিত হয়?

উত্তর : বিভিন্ন ক্ষতিকর ও বিষাক্ত পদার্থ পরিবেশে মিশে পরিবেশ দূষিত হয়।

প্রশ্ন:পরিবেশ দূষণের প্রধান কারণ কী?

উত্তর : পরিবেশ দূষণের প্রধান কারণ শিল্পায়ন।

প্রশ্ন:পানি কীভাবে দূষিত হয়?

উত্তর : পানিতে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর পদার্থ মিশ্রিত হয়ে পানি দূষিত হয়।

প্রশ্ন:বাতাসে কীভাবে দুর্গন্ধ ছড়ায়?

উত্তর : যেখানে সেখানে ময়লা ফেলা এবং মলমূত্র ত্যাগের ফলে বাতাসে দূর্গন্ধ ছড়ায়।

প্রশ্ন:পরিবেশ সংরক্ষণ বলতে কী বোঝ?

উত্তর : পরিবেশ সংরক্ষণ বলতে মানুষ ও অন্যান্য জীবের সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য সুস্থ পরিবেশ গড়ে তোলাকে বোঝায়।

প্রশ্ন:বনভূমি ও গাছপালা কমে গেলে কী হয়?

উত্তর : বনভূমি ও গাছপালা কমে গেলে বায়ুম-লের তাপমাত্রা বেড়ে যায়।

প্রশ্ন:দূষিত মাটিতে উৎপন্ন ফসল খাদ্য হিসেবে গ্রহণের ফলে কী হয়?

উত্তর : দূষিত মাটিতে উৎপন্ন ফসল খাদ্য হিসেবে গ্রহণের ফলে মানুষ ক্যান্সারসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়।

হ পরবর্তী অংশ আগামী সংখ্যায়

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে