শুক্রবার, ০২ মে ২০২৫, ১৯ বৈশাখ ১৪৩২

পঞ্চম শ্রেণির বিজ্ঞান

আরিফ আনজুম, সহকারী শিক্ষক, আমতলী মডেল স্কুল, বগুড়া।
  ১১ মার্চ ২০২৫, ০০:০০
পঞ্চম শ্রেণির বিজ্ঞান
পঞ্চম শ্রেণির বিজ্ঞান

প্রশ্ন:তোমার বন্ধু রনি নানারকম সংক্রামক রোগের কারণে প্রায়ই অসুস্থ থাকে। সুস্থ ও রোগমুক্ত থাকার জন্য তুমি রনিকে কী পরামর্শ দিবে?

উত্তর: সংক্রামক রোগ জীবাণুর মাধ্যমে হয়ে থাকে। এসব রোগ থেকে বাঁচার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা এবং রোগের জীবাণু ছড়িয়ে পড়া প্রতিরোধ করা। রনির ক্ষেত্রে আমার পরামর্শ হলো সুষম খাদ্য গ্রহণ, নিরাপদ পানি ব্যবহার এবং হাত জীবাণুমুক্ত রাখার মাধ্যমে সে সুস্থ থাকতে পারে। হাঁচি-কাশির সময় টিসু্য, রুমাল বা হাত দিয়ে মুখ ঢাকা, চারপাশের পরিবেশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা ইত্যাদির মাধ্যমে রনি সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ করতে পারে। বাড়ির আশেপাশে পানি জমতে পারে এমন আবর্জনা যেমন: কৌটা, টায়ার, ফুলের টব ইত্যাদি পরিষ্কার রাখতে হবে তাকে। কারণ এখানে জমে থাকা পানিতে ডেঙ্গু এবং ম্যালেরিয়া রোগের বাহক মশা ডিম পাড়ে। প্রয়োজনীয় টিকা নিয়ে এবং অস্বাস্থ্যকর খাবার পরিহার করেও সে রোগমুক্ত থাকতে পারে।

প্রশ্ন:সংক্রামক রোগ কী? সংক্রামক রোগ প্রতিরোধে তোমার করণীয় কী?

উত্তর: এমন কিছু রোগ আছে যেগুলো একজন থেকে অন্যজনে ছড়ায়, এগুলোকে সংক্রামক রোগ বলে।

সংক্রামক রোগ প্রতিরোধে করণীয় হলো পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকা, নিয়মিত গোসল করা, দাঁত মাজা, হাত পায়ের নখ কাটা। ব্যবহার্য জামা কাপড়, বালিশ, বিছানা, চাদর ইত্যাদি পরিষ্কার রাখা উচিত। এছাড়া যেখানে সেখানে কফ, থুতু ইত্যাদি ফেলা যাবে না। কাশি বা হাঁচি হলে মুখে রুমাল বা হাত দিয়ে ঢাকতে হবে।

প্রশ্ন:বয়ঃসন্ধিকালে ছেলেমেয়েদের কী করা উচিত বলে তুমি মনে কর?

উত্তর: বয়ঃসন্ধিকালে ছেলে ও মেয়েদের নিম্নলিখিত বিষয়গুলো মেনে চলা উচিত :

১. শারীরিক পরিবর্তন দেখে ঘাবড়ে না যাওয়া।

২. দুশ্চিন্তা না করা।

৩. মা-বাবা, বড় ভাইবোনদের সাথে বিষয়টি আলোচনা করা।

৪. এসময় ঘটে যাওয়া পরিবর্তনকে স্বাভাবিকভাবে মেনে নেওয়া।

৫. পড়ালেখাসহ স্বাভাবিক কাজকর্ম করা।

প্রশ্ন:তোমাদের এলাকায় সংক্রামক রোগ দেখা দিয়েছে। এক্ষেত্রে তোমরা কীভাবে এর প্রতিকার করবে?

উত্তর: আমাদের এলাকায় সংক্রামক রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এক্ষেত্রে আমরা নিম্নোক্তভাবে এর প্রতিকার করব :

রোগাক্রান্ত হলে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে, পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে এবং প্রচুর পরিমাণে নিরাপদ পানি পান করতে হবে। এগুলো আমাদের সেরে উঠতে সাহায্য করে। হালকা জ্বর হলে বা সামান্য মাথাব্যথা করলে প্রাথমিকভাবে কিছু ঔষধ গ্রহণ করলে আমরা ভালো বোধ করি। কিন্তু যদি জ্বর ভালো না হয়, ক্রমাগত বমি হতে থাকে এবং মারাত্মক মাথাব্যথা হয় তবে অবশ্যই ডাক্তার দেখাতে হবে।

প্রশ্ন:বয়ঃসন্ধিকালে মেয়েদের শারীরিক পরিবর্তনের ৫টি উদাহরণ দাও।

উত্তর: বয়ঃসন্ধিকালে মেয়েদের বিভিন্ন ধরনের শারীরিক পরিবর্তন রক্ষ করা যায়। যেমন :

১. দ্রম্নত লম্বা হওয়া।

২. মাংসপেশি সুগঠিত হওয়া।

৩. শরীরের গঠন পরিবর্তন হওয়া।

৪. বেশি ঘাম হওয়া, ত্বক তেলাক্ত হওয়া, ব্রন উঠা।

৫. শরীরের ওজন বৃদ্ধি পাওয়া।

\হপ্রশ্ন:সংক্রামক রোগের প্রকারভেদ আলোচনা কর।

উত্তর: সংক্রামক রোগ চার প্রকার। যেমন:১. বায়ুবাহিত রোগ, ২. পানিবাহিত রোগ, ৩. ছোঁয়াচে রোগ, ৪. প্রাণী ও পোকামাকড়বাহিত সংক্রামক রোগ। নিচে এগুলো সম্বন্ধে আলোচনা করা হলো :বায়ুবাহিত রোগ: যে সকল রোগ হাঁচি-কাশি বা কথাবার্তা বলার সময় বায়ুতে জীবাণু ছড়ানোর মাধ্যমে হয়ে থাকে তাদেরকে বায়ুবাহিত রোগ বলে। যেমন : সোয়াইন ফ্লু, হাম, গুটিবসন্ত, যক্ষ্ণা এবং ইনফ্লুয়েঞ্জা ইত্যাদি। পানিবাহিত রোগ: যে সকল রোগ জীবাণুযুক্ত দূষিত পানির মাধ্যমে বিস্তার লাভ করে তাদেরকে বলে পানিবাহিত রোগ। যেমন : ডায়রিয়া, কলেরা, আমাশয় এবং টাইফয়েড। ছোঁয়াচে রোগ: রোগাক্রান্ত ব্যক্তির প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সংস্পর্শে যে সকল রোগ সংক্রমণ হয় তাই ছোঁয়াচে রোগ।যেমন : ফ্লু, ইবোলা, হাম ইত্যাদি।

প্রাণী ও পোকামাকড়বাহিত সংক্রামক রোগ: বিভিন্ন প্রাণী এবং পোকামাকড়ের মাধ্যমে কিছু জীবাণুবাহিত রোগ ছড়ায়। যেমন : কুকুরের কামড়ের মাধ্যমে জলাতঙ্ক রোগ ছড়ায়। মশার কামড়ের মাধ্যমে ম্যালেরিয়া এবং ডেঙ্গু রোগ ছড়ায়।

পরবর্তী অংশ আগামী সংখ্যায়

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে