শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আপাতত বাড়ছে না গ্যাসের দাম

ম যাযাদি রিপোর্ট
  ২০ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০

সব শ্রেণির গ্রাহকের গ্যাসের দাম দ্বিগুণেরও বেশি বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে বিতরণ কোম্পানিগুলো। এ প্রস্তাব বিধিসম্মত না হওয়ায় আমলে নেয়নি বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। বুধবার বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজসম্পদ করপোরেশন (পেট্রোবাংলা) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

বিইআরসির কর্মকর্তারা জানান, গ্যাসের দাম বাড়ানোর আবেদন করতে হলে প্রবিধানমালা মেনে প্রস্তাব জমা দিতে হয়। কিন্তু বিতরণ কোম্পানিগুলো তা মানেনি। নিরীক্ষা প্রতিবেদনসহ প্রয়োজনীয় নথি জমা দেয়নি। তাই তাদের নিয়ম মেনে আবেদন করতে বলা হয়েছে। এর আগে সব শ্রেণির গ্রাহকের গ্যাসের দাম দ্বিগুণেরও বেশি বাড়ানোর প্রস্তাব করে বিতরণ কোম্পানিগুলো।

জানা গেছে, আবাসিক গ্রাহকের ব্যবহৃত প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম ৯ টাকা ৩৬ পয়সা থেকে ২০ টাকা ৩৫ পয়সা এবং শিল্পে ব্যবহৃত প্রতি

ঘনমিটারের গ্যাসের দাম ১০ টাকা ৭০ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ২৩ টাকা ২৪ পয়সা নির্ধারণ করার প্রস্তাব করেছে চার কোম্পানি।

একই সঙ্গে ক্যাপটিভে (শিল্পকারখানায় নিজস্ব বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত গ্যাস) ১৩ টাকা ৮৫ পয়সার স্থলে ৩০ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ৬টি গ্যাস বিতরণ কোম্পানির মধ্যে তিনটি তিতাস, বাখরাবাদ ও পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানি গত সপ্তাহে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনে (বিইআরসি) পৃথকভাবে এই প্রস্তাব জমা দিয়েছে।

বাকি তিন কোম্পানির প্রস্তাব জমা দেওয়ার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এ প্রস্তাব আমলে নিলে আবাসিকে এক চুলা ৯২৫ টাকা থেকে বেড়ে ২ হাজার টাকা এবং দুই চুলার ক্ষেত্রে ৯৭৫ টাকা থেকে বেড়ে ২ হাজার ১০০ টাকা হবে।

এদিকে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে আবারও মানুষের আয় কমে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এমনিতেই গত দুই বছরে করোনার প্রাদুর্ভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য মন্দা ছিল। এ অবস্থায় গ্যাসের দাম বাড়ানো হলে সব শ্রেণির পণ্যের দাম বেড়ে যাবে। একই সঙ্গে আবাসিকে গ্রাহকদের দুর্ভোগ আরও বেড়ে যাবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা যায়, ভর্তুকির চাপ সামলাতে গত বছরের ডিসেম্বরে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে আর্থিক মুদ্রা ও মুদ্রা বিনিময় হারসংক্রান্ত কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিল।

৩ জানুয়ারি জ্বালানি বিভাগ গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব বিইআরসিতে পাঠাতে পেট্রোবাংলাকে নির্দেশনা দেয়। আমদানি করা এলএনজি এবং দেশীয় গ্যাসের দাম, ভ্যাট-ট্যাক্স, বিভিন্ন চার্জ ধরে একটা খসড়া হিসাব পেট্রোবাংলা থেকে বিতরণ কোম্পানিগুলোয় পাঠানো হয়। এরপর বিতরণ কোম্পানিগুলো নিজেদের আয়-ব্যয় হিসাব উলেস্নখ করে দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব কমিশনে জমা দেয়। পাশাপাশি কোম্পানিগুলো নিজেদের পরিচালন ব্যয় বাড়ানোরও প্রস্তাব দিয়েছে।

এ বিষয়ে বিইআরসি চেয়ারম্যান আবদুল জলিল গণমাধ্যমকে বলেন, এখন পর্যন্ত চারটি গ্যাস বিতরণ কোম্পানি গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব পাঠিয়েছে। কমিশনে প্রস্তাব পাঠানোর কিছু নিয়ম রয়েছে। সেসব মেনেই কোম্পানিগুলোকে প্রস্তাব পাঠাতে হবে। সব বিতরণ কোম্পানির প্রস্তাব আসার পর বিশ্লেষণ করে নিয়ম অনুযায়ী গণশুনানির মাধ্যমে দাম নির্ধারণ করবে বিইআরসি।

এর আগে বিইআরসি ২০১৯ সালের ১ জুলাই গ্যাসের দাম বাড়িয়েছিল। তখন বাসাবাড়িতে দুই চুলার দাম ৮০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৯৭৫ টাকা ও এক চুলার দাম ৭৫০ টাকা থেকে ৯২৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে