বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

জেল থেকে বেরিয়ে প্রকাশ্যে তরুণকে কুপিয়ে হত্যা

ম স্টাফ রিপোর্টার, নোয়াখালী
  ২৩ মে ২০২২, ০০:০০

চাঁদা দাবির ঘটনায় থানায় অভিযোগ দেওয়ায় জেল থেকে বেরিয়ে এক তরুণকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করছে একদল সন্ত্রাসী। নোয়াখালীর প্রধান বাণিজ্যকেন্দ্র চৌমুহনীর হোসেন মার্কেটের সামনে শনিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত মো. আইমন (১৮) চৌমুহনী পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের গণিপুরের নুর নবীর ছেলে। হত্যাকান্ডের পর রাতে অভিযুক্ত তিন যুবককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তারা হলো- চৌমুহনী পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের আব্দুল হাই মিলনের ছেলে মো. পাভেল (২১), বাচ্চু মিয়ার ছেলে মো. রাকিব (২০) ও আজাদ মিয়ার ছেলে নিরব (২০)।

বেগমগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান রাজিব জানান, নিহত আইমন চৌমুহনী বাজারে প্রধান সড়কের পাশে খোলা জায়গায় জুতা বিক্রি করতেন। তিন মাস আগে স্থানীয় সন্ত্রাসী রাকিব তার কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। আইমন এ বিষয়ে বেগমগঞ্জ মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। পরে ইয়াবাসহ রাকিবকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিন মাস জেল খেটে গত বৃহস্পতিবার জামিনে মুক্তি পায় সে।

জেল থেকে বেরিয়ে শনিবার রাত পৌনে ৮টার দিকে চৌমুহনী বাজারে রাকিব তার দুই সহযোগী পাভেল ও রিমনকে নিয়ে আইমনের গতিরোধ করে। এ সময় রাকিব তার কারাভোগের জন্য আইমনকে দায়ী করে।

একপর্যায়ে তিনজন মিলে আইমনকে ছুরি দিয়ে জখম করে। বাঁচার জন্য সে পাশের একটি ফার্মেসিতে আশ্রয় নিলে সেখানে গিয়েও তারা আইমনের গলার নিচে ছুরি দিয়ে জখম করে। কিছুক্ষণের মধ্যে তার মৃতু্য হয়। পরে হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পালিয়ে যায় তারা।

এ ঘটনার প্রতিবাদে চৌমুহনী বাজারের ব্যবসায়ীরা প্রায় ৩০ মিনিট চৌমুহনী-ফেনী আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করেন। কিছুক্ষণের মধ্যে আটিয়াবাড়ি পুল এলাকা থেকে পুলিশ অভিযুক্ত তিন যুবককে গ্রেপ্তার করলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। এ সময় হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ছোরাটিও উদ্ধার করা হয়।

রোববার সকালে নিহত আইমনের ভাই জহিরুল হক বাদী হয়ে গ্রেপ্তার তিন যুবকসহ অজ্ঞাত আরও ৭-৮ জনের নামে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। বিকালে তিন আসামিকে জেলার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আসামিরা ম্যাজিস্ট্রেটের খাস ক্যামেরায় রয়েছে। সেখানে তারা অপরাধ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেওয়ার কথা রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে এর আগেও থানায় একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান রাজিব।

এদিকে বিকালে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পর আইমনের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। রাতে জানাজার নামাজ শেষে তার লাশ দাফন করা হয়। তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে চতুর্থ আইমন। তার মৃতু্যর খবরে স্বজনদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে। হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন তারা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে