বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

আ'লীগের মূলনীতি টাকা পাচার-দুর্নীতি

বিএনপির সমাবেশে মির্জা ফখরুল
যাযাদি রিপোর্ট
  ১৯ মার্চ ২০২৩, ০০:০০
শনিবার রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর -স্টার মেইল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, 'সরকারের দুর্নীতির ফিরিস্তি এক দিনে দেওয়া যাবে না, এক মাস লাগবে। বাংলাদেশ সর্বগ্রাসী দুর্নীতিতে নিমজ্জিত। গত প্রায় দেড় দশক ধরে দুর্নীতির এই মহোৎসব চলছে। বালিশ, পর্দা, ঢেউটিন, ক্যাসিনো, ব্যাংক ডাকাতি, শেয়ারবাজার লুট, অর্থ পাচার, মেগা প্রজেক্টের মেগা কেলেঙ্কারি চলছে। আওয়ামী লীগের মূলনীতি- টাকা পাচার আর দুর্নীতি। তাদের দুর্নীতির চিত্র খুব শিগগির প্রকাশ করা হবে।'

শনিবার রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে রাজধানীতে বিএনপি ছাড়াও সমমনা অন্যান্য জোট, দল ও সংগঠন আলাদা আলাদা সমাবেশ করেছে।

বিএনপির সমাবেশ উপলক্ষে দুপুরের আগে থেকে রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নেতাকর্মীরা খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে নয়া পল্টনের সামনে জড়ো হতে থাকেন। তারা সরকারবিরোধী বিভিন্ন সেস্নাগানে মুখর করে রাখেন নয়া পল্টন এলাকা। তারা দ্রব্যমূল্য, বিদু্যৎ, গ্যাসের দাম বাড়ানো ও হজ প্যাকেজে বেশি খরচের প্রতিবাদ এবং আদানির সঙ্গে চুক্তি বাতিল ও শিক্ষা উপকরণের দাম কমানোর দাবিসহ

সরকারের বিভিন্ন সেক্টরে দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরে পস্ন্যাকার্ড বহন করেন। এ সময় বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা ভিন্ন ভিন্ন রঙিন ক্যাপ ও গেঞ্জি পরে সমাবেশস্থলে উপস্থিত হন। সমাবেশের আকার নাইটিঙ্গেল মোড় থেকে ফকিরাপুল পর্যন্ত ছাড়িয়ে যায়।

সুপ্রিম কোর্টের ঘটনা টেনে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, 'দেশের সর্বোচ্চ বিচারালয়ে যে ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে, যা জাতির জন্য, এই দেশের বিচারব্যবস্থার জন্য জঘন্যতম ঘটনা। এই ঘটনাই প্রমাণ করে, বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা কী! দেশে বর্তমানে কোনো গণতন্ত্র তো নেই-ই, আইনের শাসনও নেই। এই দেশে আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। এই ঘটনা নিয়ে যখন প্রধান বিচারপতির কাছে যাওয়া হয়েছে তখন রাষ্ট্রের সংবিধানের অভিভাবক বললেন, তার কিছু করার নেই। পুরো বিচার বিভাগকে ধ্বংস করা হয়েছে। এই রাষ্ট্রকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে আওয়ামী লীগ সরকার।'

এ সময়ে সরকারের দুর্নীতির চিত্র নিয়ে বিএনপি মহাসচিব সেবা খাতে, বিদু্যৎ খাতে, আদানি কোম্পানির সঙ্গে দেশের স্বার্থবিরোধী চুক্তি, টাকা পাচার, বেগমপাড়া ও সেকেন্ড হোম, সুইস ব্যাংক, ইডিএফের আড়ালে ৭০০ কোটি ডলালের দুর্নীতি, মেগা প্রকল্পে মেগা চুরি, পদ্মা সেতু, পাতাল রেল, মেট্রোরেল, রেলওয়ে দুর্নীতি, স্যাটেলাইট প্রকল্পসহ আরও অর্ধশতাধিক সেক্টরের অনিয়ম আর লুটপাটের বিবরণ তুলে ধরেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, 'আওয়ামী লীগ শুধু ভোট চুরি করে না, সব চুরি করে। এই মুহূর্তে থেকে যদি আর কোনো নতুন চুক্তি নাও করা হয় তবুও কুইক রেন্টাল চলবে ২০২৬ সাল পর্যন্ত এবং ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হবে ২০৫১ সাল পর্যন্ত।'

তিনি আরও বলেন, 'আওয়ামী লীগের দুর্নীতি গোটা বাংলাদেশকে একটা ফোকলা অর্থনীতিতে পরিণত করেছে, গোটা দেশ ফোকলা হয়ে গেছে। এরা ভোট চোর, বাংলাদেশের অর্থনীতির চোর। এদের সরিয়ে সত্যিকার অর্থে একটা জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।'

বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'এই দুর্নীতি বন্ধ করতে হলে এই সরকারকে সরাতে হবে, তাদের রেখে এ দেশ টিকে না। একসঙ্গে আওয়াজ তুলতে হবে-আওয়ামী লীগের মূলনীতি- মুদ্রাপাচার, টাকা পাচার আর দুর্নীতি; অলি-গলি ম্যায় শোর হ্যায়, কোন চোর হ্যায়। এ সময়ে নেতাকর্মীরা সমস্বরে স্স্নোগান দিতে থাকেন 'আওয়ামী লীগে চোর হ্যায়'।

মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উলস্নাহ আমানের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আমিনুল হক এবং দক্ষিণের সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুর সঞ্চালনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, জয়নুল আবদিন ফারুক, কেন্দ্রীয় নেতা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি ছাড়াও অঙ্গ সংগঠনের মধ্যে মহিলা দলের আফরোজা আব্বাস, যুবদলের সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, শফিকুল ইসলাম মিল্টন, স্বেচ্ছাসেবক দলের এস এম জিলানি, রাজীব আহসান, ড্যাবের অধ্যাপক হারুন আল রশিদ, ছাত্রদলের কাজি রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, সাইফ মাহমুদ জুয়েল এবং সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের কাদের গনি চৌধুরী ও অধ্যাপক লুতফর রহমান বক্তব্য রাখেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে