বাংলাদেশকে নিজেদের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার মনে করে ইন্দো-প্রশান্ত অঞ্চলকে 'মুক্ত, শান্তিপূর্ণ এবং আরও সমৃদ্ধ' করে তুলতে বাংলাদেশের সমর্থন চেয়েছে এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ দক্ষিণ কোরিয়া। মঙ্গলবার বাংলাদেশের বেসরকারি সংবাদ সংস্থা ইউএনবিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই সমর্থন চেয়েছেন দেশটির উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী চোয়ি ইয়ংস্যাম।
মঙ্গলবার সিউলের হোটেল প্রেসিডেন্টে আয়োজিত 'ওয়ার্ল্ড জার্নালিস্ট কনফারেন্স ২০২৩' নামের একটি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে গিয়েছিলেন ইয়ংস্যাম। সেই অনুষ্ঠানের বিরতিতে ইউএনবিকে সাক্ষাৎকার দেন তিনি।
সাক্ষাৎকারে উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলোর একটি; আর ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলের রাজনীতিতে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো মূল প্রভাবক। গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ও মানবাধিকারের মতো ইসু্যতে বাংলাদেশ এবং দক্ষিণ কোরিয়ার দৃষ্টিভঙ্গি একই এবং বাংলাদেশ আমাদের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার।'
ইন্দো-প্রশান্ত অঞ্চল মূলত একটি বিশাল ও বিস্তৃত জৈব ভৌগোলিক অঞ্চল। ভারত মহাসাগরের সঙ্গে প্রশান্ত মহাসাগরের পশ্চিম ও মধ্যাঞ্চলের সংযোগ ঘটেছে যেসব জায়গায়- সেসব এলাকা এ অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত। বিশাল এই অঞ্চলটি দু'ভাগে বিভক্ত, ইন্দো-প্রশান্ত পশ্চিমাংশ এবং ইন্দো-এশীয় প্রশান্ত অংশ।
ইন্দো-প্রশান্ত অঞ্চলে মোট ৪০টি দেশ রয়েছে। অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডসহ কয়েকটি দেশ পড়েছে ইন্দো-প্রশান্ত পশ্চিমাংশে, আর বাকিগুলোর অবস্থান ইন্দো-এশীয় প্রশান্ত অংশে। দক্ষিণ কোরিয়া ও বাংলাদেশ উভয়ই ইন্দো-এশীয় প্রশান্ত অঞ্চলের দেশ।
আবার এই অঞ্চলে দক্ষিণ কোরিয়ার সবচেয়ে বড় হুমকির নাম উত্তর কোরিয়া। প্রতিবেশী এই দেশটির ঘন ঘন ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ গত বেশ কয়েক বছর ধরে দক্ষিণ কোরিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতির ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। এছাড়া এই অঞ্চলে দক্ষিণ কোরিয়ার আর একটি অস্বস্তির নাম চীন। দক্ষিণ চীন সাগর অঞ্চলে চীনের আধিপত্য বিস্তার এই অস্বস্তির মূল কারণ।
সাক্ষাৎকারে মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার অংশীদারিত্ব এবং সহযোগিতামূলক সম্পর্ক বহু বছরের এবং দুই দেশের মধ্যকার সহযোগিতাপূর্ণ অর্থনৈতিক সম্পর্কের ভিত্তিও বেশ দৃঢ়।
বাংলাদেশের পঞ্চম বৃহত্তম বিনিয়োগকারী দেশ দক্ষিণ কোরিয়া। বাংলাদেশে এই দেশটির বিনিয়োগের পরিমাণ ১৩০ কোটি ডলারেরও বেশি। বাংলাদেশের অবকাঠামো, বিদু্যৎ, ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী, ভোগ্যপণ্যসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ রয়েছে প্রায় ২০০ দক্ষিণ কোরীয় কোম্পানির। সামনের বছরগুলোতে দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে বলে সাক্ষাৎকারে আশা প্রকাশ করেছেন চোয়ি ইয়ংস্যাম।