রাজধানী ঢাকার রামপুরা, বাড্ডা, বনশ্রী, বেইলি রোডসহ কয়েকটি এলাকায় সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে গ্যাসের গন্ধ ছড়ানোর যে অভিযোগ ওঠেছে, তাতে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে বিদু্যৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং তিতাস গ্যাস কোম্পানি।
গ্যাসের চাপ কমিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার কথা জানিয়ে 'নির্বিঘ্নে' চুলা ব্যবহার করতে বলেছে বিদু্যৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়।
মঙ্গলবার মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সোমবার রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে ঢাকার রামপুরা, বাড্ডা, বনশ্রী, বেইলি রোডসহ কয়েকটি এলাকায় গ্যাসের গন্ধ ছড়ানোর অভিযোগ পাওয়া যায়। তাৎক্ষণিকভাবে তিতাস গ্যাসের ১৪টি ইমার্জেন্সি টিম এ সব এলাকা সরেজমিন পরিদর্শন করে এবং জনগণকে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দেন। সেইসঙ্গে যেসব ডিস্ট্রিক্ট রেগুলেশন স্টেশনের (ডিআরএস) মাধ্যমে ঢাকায় গ্যাস সরবরাহ করা হয়, সেসব ডিআরএস থেকে গ্যাসের চাপ কমিয়ে দেওয়া হয়। তৎপ্রেক্ষিতে দ্রম্নত পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে।'
মন্ত্রণালয় বলেছে, ঈদের ছুটিতে শিল্প-কারখানা বন্ধ থাকাসহ স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় গ্যাসের ব্যবহার হ্রাস পাওয়ায় গ্যাস সরবরাহ লাইনে 'চাপ কিছুটা বৃদ্ধি পায়। বর্তমানে গ্যাসের সরবরাহ লাইনে চাপ স্বাভাবিক রয়েছে এবং গ্যাসের সরবরাহ সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। জনসাধারণকে আতঙ্কিত না হয়ে নির্বিঘ্নে গ্যাস ও গ্যাসের চুলা ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।'
ঢাকায় গ্যাস বিতরণকারী কোম্পানি তিতাসের পরিচালক (অপারেশন) সেলিম মিয়া সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, 'পুরো পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আতঙ্কিত হওয়ারও কোনো কারণ নেই।'
তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হারুনুর রশীদ মোলস্না সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, 'আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। নিশ্চিন্তে গ্যাসের চুলা জ্বালাতে পারেন। কিছু এলাকায় সমস্যা হয়েছিল। তার সমাধান হয়ে গেছে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক। গ্যাসে যে গন্ধ দেওয়া হয়, সেটা তো নিরাপত্তার জন্যই দেওয়া হয়। যাতে লিকেজ হলে গন্ধ বের হয়। আমরা সব ঠিক করেছি।'
এর আগে সোমবার দিবাগত রাতে বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্যাসের তীব্র গন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল। অনেকে আতঙ্কিত হয়ে রাস্তায় নেমে আসে। গ্যাসের মেইন সুইচ বন্ধ করে দেয়। এমন প্রেক্ষাপটে জ্বালানি মন্ত্রণালয় ও তিতাস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল- 'ঈদে শিল্প-কারখানায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকায়, সঞ্চালন ও বিতরণ লাইনে গ্যাসের চাপ বেড়ে যাওয়ায় (ওভার-ফ্লো) গন্ধ বাইরে আসছে। তিতাসের জরুরি ও টেকনিক্যাল টিম বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। নগরবাসীকে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দেন তারা।'
পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিস থেকেও বলা হয়েছিল যেসব এলাকায় গ্যাসের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে, আপাতত সেসব জায়গায় কয়েক ঘণ্টা চুলা জ্বালানো থেকে বিরত থাকা নিরাপদ হবে। অনাকাঙ্ক্ষিত অগ্নিকান্ড প্রতিরোধে ফায়ার সার্ভিসের বিভিন্ন ইউনিট রাস্তায় টহলেও বের হয়।
বিদু্যৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ তার ফেসবুক পেজে রাত ১২টার দিকে জানান, ঢাকার বেশ কয়েকটি জায়গায় গ্যাসের গন্ধ পাওয়ার খবরে নাগরিকদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। নগরবাসীকে আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য অনুরোধ করছি। ঢাকার গ্যাস বিতরণ কোম্পানি তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে। পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।