ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) বাংলাদেশের সব দলকে নির্বাচনে অংশ নিতে উৎসাহ দিচ্ছে। বৃহস্পতিবার ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য (এমইপি) ইভান স্টিফেনকে লেখা এক ফিরতি চিঠিতে ইইউর পররাষ্ট্র নীতিবিষয়ক হাইরিপ্রেজেন্টেটিভ জোসেফ বোরেল এ কথা জানান। এর আগে গত মাসে ইভান স্টিফেনসহ ছয় এমইপি সদস্য জোসেফ বোরেলকে লেখা চিঠিতে বাংলাদেশে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের উদ্যোগ নিতে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
জোসেফ বোরেল আসন্ন নির্বাচনের আগে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির বিষয়ে চিঠির জন্য ইভান স্টিফেনকে ধন্যবাদ জানান। বাংলাদেশ পরিস্থিতি তিনি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন বলে আশ্বাস দেন।
এদিকে, বাংলাদেশ তার নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য ইইউকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে উলেস্নখ করে জোসেফ বোরেল লিখেছেন, প্রথম ধাপ হিসেবে ইইউ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ মিশনের কার্যকারিতা, সম্ভাব্যতা ও যৌক্তিকতা যাচাইয়ে একটি অনুসন্ধানী মিশন পাঠাবে। হাইরিপ্রেজেন্টেটিভ জোসেফ বোরেল তাঁর চিঠিতে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।
তিনি আরও লিখেছেন, ইইউ সব দল ও সব নাগরিককে তাদের রাজনৈতিক অধিকার ও সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে উৎসাহিত করে। নির্বাচন প্রক্রিয়ায় আস্থা সৃষ্টির দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট সব অংশীদারের। এগুলোর মধ্যে প্রকৃত অর্থে প্রধান দলগুলোর মধ্যে আলোচনা, নাগরিক সমাজের সুযোগ অন্তর্ভুক্ত থাকা উচিত।
জোসেফ বোরেল লিখেছেন, 'মত প্রকাশ ও সমবেত হওয়ার স্বাধীনতাসহ মৌলিক অধিকারগুলোর সুরক্ষা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অপরিহার্য। অন্যদিকে এই প্রক্রিয়ায় সহিংসতার কোনো স্থান নেই। পরিস্থিতি যাই হোক না কেন সহিংসতা এড়ানো উচিত।'
গণতন্ত্র, মানবাধিকার, আইনের শাসনের মতো ইইউর মৌলিক নীতি ও মূল্যবোধের বিষয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে নিয়মিত আলোচনার কথা উলেস্নখ করেন ইইউ হাইরিপ্রেজেন্টেটিভ। এ বিষয়গুলো বাংলাদেশের কাছে নিয়মিতভাবে তুলে ধরা হয় বলেও জানান তিনি। ইইউর বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধার কথা উলেস্নখ করে ইইউ হাইরিপ্রেজেন্টেটিভ বলেন, এ বছর ইইউ জিএসপি সুবিধা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করবে। সেখানে বাংলাদেশের সঙ্গে বর্ধিত যোগাযোগের মাধ্যমে অর্জিত ফলাফল সম্পর্কেও তথ্য থাকবে।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরিস্থিতি নিয়ে এমইপি ইভানের উদ্বেগের বিষয়ে জোসেফ বোরেল লিখেছেন, ইইউ খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরিস্থিতির দিকে নিবিড় দৃষ্টি রাখছে। সম্ভাব্য সেরা চিকিৎসার সুযোগ পাওয়া খালেদা জিয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ইইউ এ বিষয়ে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। চিঠির শেষাংশে জোসেফ বোরেল লিখেছেন, গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও আইনের শাসনের বিষয়ে ইইউ ও এর সদস্য রাষ্ট্রগুলো বাংলাদেশ সরকার ও সব পক্ষকে জোরালোভাবে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছে।