সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
মন্ত্রিসভার বৈঠক

চার পণ্যের শুল্ক কমাতে নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

দ্রম্নতবিচার আইন স্থায়ী হচ্ছে
যাযাদি রিপোর্ট
  ৩০ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
‘২০২৩ সালে প্রণীত আইনসমূহ’ বই হাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা-ফোকাস বাংলা

এবার রমজানে ভোজ্যতেল, চিনি, খেজুর ও চা চারটি পণ্যে শুল্কহার হ্রাস করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে কী পরিমাণ হ্রাস করা হবে তা রাজস্ব বোর্ড পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবে। সোমবার মন্ত্রিসভা বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এই নির্দেশ দেন। এদিকে, নির্বাচনের পর দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছিলেন। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীদের সমন্বয়ের ভিত্তিতে এটির ওপর কাজও করতে বলেছেন। এদিন বৈঠকে মন্ত্রীদের কাছ থেকে এটির সর্বশেষ অবস্থা জেনেছেন প্রধানমন্ত্রী। মন্ত্রীরা কী কী কাজ করেছেন এবং তাদের অভিজ্ঞতা জানিয়েছেন। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দিয়েছেন। রমজানে যে পণ্যগুলোর দরকার হয়, বিশেষ করে খেজুর, ভোজ্যতেল, চিনি ও চাল- এ চারটি পণ্যের শুল্কহার হ্রাস করার জন্য এনবিআরকে নির্দেশনা দিয়েছেন। সেটি নিয়ে এখন তারা কাজ করছে। কী পরিমাণ শুল্ক কমানো হবে সেটি এনবিআর হিসাব করে দেখবে, যাতে দ্রব্যমূল্যের চাপটা মানুষের ওপর কম থাকে। মাহবুব হোসেন বলেন, মন্ত্রীরা মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের নিয়ে সমন্বিতভাবে কাজ করছেন। বেশ কিছু আইটেমের ওপর ইমপ্যাক্ট আসা শুরু করেছে। আগামী রমজান মাস বিবেচনা করে আরও যাতে নিয়ন্ত্রণে আনা যায়, সেজন্য এই চারটি পণ্যের ওপর থেকে শুল্ক কমানোর নির্দেশনা দিয়েছেন। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনতে মন্ত্রীরা যেসব পদক্ষেপ নিয়েছেন তাতে প্রধানমন্ত্রী সন্তোষ প্রকাশ করেছেন জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, মাঠে যেভাবে কাজ চলছে সেটি কন্টিনিউ করতে বলেছেন। সাপস্নাই যাতে কোনোভাবেই বিঘ্ন না হয়, সেজন্য এলসি ওপেন করে দিচ্ছেন যাতে কেউ কোনো কারসাজি করতে না পারে। তিনি আরও বলেন, 'বাজারে যেন সরবরাহ ও চাহিদার কোনো ঘাটতি না থাকে, প্রধানমন্ত্রী সেই নির্দেশনা দিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে এ ব্যাপারে নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এখন এলসি ওপেনের পরিমাণ অনেক বেশি আছে, খাদ্য মজুতের পরিমাণ অনেক বেশি আছে, এ তথ্যগুলো উপস্থাপন করা হয়েছে।' মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সরবরাহে যেন কোনো ঘাটতি না হয়, সেদিকে সমন্বিতভাবে নজরদারি করতে হবে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানিতে এলসির সমস্যা নেই জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, গত বছরের এ সময়ে ৩৭ হাজার ১০৭ টন খেজুর আমদানির এলসি ওপেন করা ছিল, এবার এখন পর্যন্ত ৪৪ হাজার ৭৩৪ টন এলসি ওপেন করা আছে। গত বছর একই সময় ৯৭ হাজার ২৮৭ টন অপরিশোধিত সয়াবিন তেল আমদানির এলসি করা ছিল। এবার এক লাখ ২৫ হাজার ৩৭৪ টনের এলসি করা আছে। গত বছর ৩ লাখ ৩৮ হাজার ৮৭০ টন অপরিশোধিত চিনির এলসি ওপেন হয়েছিল। এবার ৩ লাখ ৮৭ হাজার ১৩৮ টন চিনি আমদানির এলসি ওপেন করা আছে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, দ্রব্যমূল্য কমাতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পর সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীরা সিরিয়াসলি নিজেদের এঙ্গেজ করেছেন। চালের দামে নিম্নগামী ট্রেন্ড দেখা যাচ্ছে। দ্রম্নতবিচার আইন স্থায়ী হচ্ছে : এদিকে, আলোচিত দ্রম্নতবিচার আইনের মেয়াদ ধাপে ধাপে না বাড়িয়ে এটিকে স্থায়ী করতে যাচ্ছে সরকার। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ২০০২ সালে আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রম্নতবিচার) আইন করার সময় এর মেয়াদ ছিল দুই বছর। পরে কয়েক ধাপে আইনটির মেয়াদ দুই-তিন বছর করে বাড়ানো হয়। আইনটির মেয়াদ ২০২৪ সালের ৯ এপ্রিল শেষ হবে। তিনি আরও বলেন, 'আইনটিকে স্থায়ী আইন হিসেবে গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এখন থেকে আর এর মেয়াদ বাড়াতে হবে না।' মন্ত্রিসভার বৈঠকে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমি আইন-২০২৪ এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন পায়। এছাড়া গত বছর সংসদের মেয়াদ শেষ পর্যায়ে থাকায় মন্ত্রিসভায় অনুমোদন পাওয়া ছয়টি বিল সংসদে পাস করানো যায়নি। বিলগুলো সংসদে পাস করানোর জন্য বৈঠকে আবার অনুমোদন করিয়ে নেওয়া হয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে