বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪, ২৬ আশ্বিন ১৪৩১

আবু সাঈদ হত্যায় দুই পুলিশ সদস্য ৪ দিনের রিমান্ডে

রংপুর প্রতিনিধি
  ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে শতভাগ আবাসিকীকরণ দাবিতে মঙ্গলবার রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা -ফোকাস বাংলা

চাকরির কোটা সংস্কার আন্দোলনে রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থী আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যার মামলায় দুই পুলিশ সদস্যের ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টায় রংপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২ এর বিচারক আসাদুজ্জামান এ আদেশ দেন। পাশাপাশি রিমান্ডে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা প্রতিপালন করার আদেশ দেওয়া হয়।

রিমান্ডে নেওয়া দুই পুলিশ সদস্য হলেন- সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আমির আলী ও কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়।

এর আগে মঙ্গলবার সকালে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আদালতে

\হআনা হয় দুই আসামিকে। প্রথমে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ বু্যরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) রংপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) জাকির হোসেন আদালতে আসামি এএসআই আমির আলী ও কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করেন। পরে আদালত প্রত্যেকের ৪ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

গত ৩ আগস্ট এই দুই পুলিশ সদস্য বরখাস্ত করা হয়েছিল। পিবিআইর কাছে হস্তান্তরের আগে তারা পুলিশলাইনে কড়া নজরদারিতে ছিলেন।

বাদীপক্ষের আইনজীবী শামীম আল মামুন আদালতকে বলেন, 'আসামিরা নিরস্ত্র আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যা করেছে। এই হত্যার পরিকল্পনাকারী ও নির্দেশদাতাসহ সবার নাম-ঠিকানা জানতে তাদের রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন।' এ সময় আদালতে আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন না।

আসামি পুলিশ কনস্টেবল সুজয় চন্দ্র রায় আদালতকে জানান, তারা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ পালন করেছেন। সরাসরি আবু সাঈদকে গুলি করেননি। তারা আন্দোলনকে ছত্রভঙ্গ করতে গুলি ছুড়েছেন বলেও দাবি করেন।

অন্যদিকে আসামি এএসআই আমির আলী আদালতে জানান, ডিসি (ক্রাইম) মারুফ হোসেন, সহকারী পুলিশ কমিশনার আরিফ হোসেন ও আল ইমরান হোসেন এবং তাজহাট থানার ওসি রবিউল ইসলাম ছাত্র-জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে তাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন।

তিনি বলেন, 'ওইদিন ছাত্রলীগের ক্যাডাররা সামনে ছিল। তারা কোটাবিরোধী আন্দোনকারীদের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছিলেন। আবু সাঈদকে সরাসরি গুলি করা হয়নি। তবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আদেশে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করার জন্য গুলি করা হয়েছে।'

এ ঘটনার জন্য তারা দায়ী নন বলে দাবি করে তিনি বলেন, 'পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আদেশ পালন করা হয়েছে।'

এর আগে গত ১৯ আগস্ট নিহত আবু সাঈদের বড়ভাই রমজান আলী রংপুরের অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজু আহমেদের আদালতে একটি হত্যা মামলা করেন।

উলেস্নখ্য, সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে ১৬ জুলাই দুপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পার্ক মোড়ে গুলিবিদ্ধ হন আবু সাঈদ। ২৫ বছর বয়সি আবু সাঈদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে নিরস্ত্র আবু সাঈদের গুলিবিদ্ধ হওয়ার ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে সারাদেশে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এই হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে গতিশীল হয় কোটা সংস্কার আন্দোলন। ওই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ছাত্র-জনতার বিক্ষোভের মুখে ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে