অন্তর্র্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এক ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছেন, ফেসিস্ট দল আওয়ামী লীগকে রোববার বিক্ষোভ করার অনুমতি দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। শনিবার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে শফিকুল আলম এ কথা জানান।
ওই ফেসবুক পোস্টে প্রেস সচিব শফিকুল আলম লিখেছেন, 'আওয়ামী লীগ এখন যে রূপে (কারেন্ট ফর্ম) আছে, তাতে এটি একটি ফ্যাসিবাদী দল। এই ফ্যাসিবাদী দলটিকে বাংলাদেশে বিক্ষোভ করার অনুমতি দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। গণহত্যাকারী এবং স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার নির্দেশে কেউ সমাবেশ, জমায়েত এবং মিছিল করার চেষ্টা করলে তাকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর কঠোর অবস্থানের মুখোমুখি হতে হবে। অন্তর্র্বর্তী সরকার কোনো সহিংসতা কিংবা দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি লঙ্ঘনের কোনো চেষ্টা মেনে নেবে না।'
রোববার (১০ নভেম্বর) বেলা তিনটায়
শহীদ নূর হোসেন দিবসে রাজধানীর জিরো পয়েন্টে শহীদ নূর হোসেন চত্বরে বিক্ষোভ-মিছিলের ডাক দিয়েছে আওয়ামী লীগ। অগণতান্ত্রিক শক্তির অপসারণ এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবিতে দলটি এই কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে। দলটির ফেসবুক পেজে প্রকাশিত সংবাদ
বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে।
ছাত্রলীগ করলে টিকিট টু হ্যাভেন : অন্যদিকে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন
হ পৃষ্ঠা ২ কলাম ২
ছাত্রলীগকে ফ্যাসিবাদের 'মূল ফুটসোলজার' বলেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
শনিবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে 'নিরাপদ বাংলাদেশ চাই' আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি বলেন, 'অনেকে ছাত্রলীগ কেন ব্যান হলো, সেটা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে চায়। আপনি দেখেন, কী মহৎ একটা আন্দোলন এই ক্যাম্পাসের ছেলেমেয়েরা শুরু করল। বাংলাদেশের এই রকম মহৎ আন্দোলন কয়টা হয়েছে? যদি পিছনে ফিরে তাকান, নব্বইয়ের যে আন্দোলন ওইটাও মহৎ ছিল।
'কিন্তু, এবারের যে আন্দোলন, এটার যে ব্যাপ্তি, এটা মানুষকে যে নাড়া দেওয়া এবং তারা বাংলাদেশকে কোথায় নিয়ে গেল পুরো পৃথিবীর কাছে! তো এই আন্দোলনের বিপক্ষে ছিল ছাত্রলীগ। তারা ছিল ফ্যাসিবাদের মূল ফুটসোলজার।'
বিগত ১৫ বছরে ছাত্রলীগের কর্মকান্ডের সমালোচনা করে তিনি বলেন, 'তারা যেটা করেছে, ফ্যাসিবাদের বয়ান তৈরি করেছে। অনেকে ছাত্রলীগ কর?ত এজন্য যে একটা চাকরি পাবে। আপনি পুরো চাকরি ব্যবস্থায় বৈষম্য তৈরি করে রেখেছেন। আমার গ্রামের যে ছেলেটা ছাত্রলীগ করে, তার চাকরি হয়েছে। অন্য যে ছেলেটা পড়ুয়া, তার কোনো চাকরি হয় না।
'তাদের (ছাত্রলীগ) চাকরি হয়েছে পুলিশে, তাদের চাকরি হয়েছে গোয়েন্দা সংস্থায়। পুরো জাতিকে তারা জিম্মি করে রেখেছিল। আপনি ছাত্রলীগ করবেন, এটা আপনার টিকিট টু হ্যাভেন। বাকিদের জীবন হেল। পুলিশের লোক যখন ভেরিফিকেশনে আসছে, তাদের আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগের ছেলেরাই বলছে, এই ছেলেটা বিএনপি করে, তাকে চাকরি দেবেন না।'
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পুলিশের আগ্রাসী কর্মকান্ডের পেছনেও ছাত্রলীগের ভূমিকা ছিল উলেস্নখ করে প্রেস সচিব বলেন, 'আন্দোলনে পুলিশ যে এত গাঁটছড়া বেঁধে নামল এবং আমাদের ছোটভাইদের ওপর নির্বিচারে গুলি মারল। আপনি খোঁজ নিয়ে দেখেন এদের ব্যাকগ্রাউন্ড ছাত্রলীগ।
'ভয়াবহ একটা পুলিশ শাস্ত্র তৈরি হয়েছিল এবং এটার মেইন উপাদানটা এসেছে ছাত্রলীগ থেকে। বাংলাদেশে যাতে এটা না হয়, বাংলাদেশকে নিরাপদ করতে হলে শিক্ষাঙ্গনকে নিরাপদ করতে হবে।'
ক্যাম্পাসগুলো যাতে সন্ত্রাসীদের আখড়া না হয় তার জন্য অন্তর্বর্তী সরকার সচেষ্ট জানিয়ে তিনি বলেন, 'ক্যাম্পাসগুলোকে কোনোমতেই যেন সন্ত্রাসীদের আখড়া না বানাতে দেওয়া হয়, সেজন্য আমরা চেষ্টা করছি এবং সামনে যে সরকার আসে তাদেরও চেষ্টা করতে হবে। আমাদের সবাইকে অঙ্গীকারাবদ্ধ হতে হবে।'
বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার জন্য ক্যাম্পাসগুলোকে নিরাপদ করার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, 'আমাদের সরকার বা আমরা চাই, বাংলাদেশের শিক্ষাঙ্গন নিরাপদ হোক। বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার জন্য আমরা আমাদের শিক্ষাঙ্গনকে নিরাপদ করতে হবে। যাতে আমাদের ছেলেমেয়ে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় আরও বেশি মনোযোগ দিতে পারে।'
তিনি বলেন, 'তারা যেন পৃথিবীর যে কোনো একটা শিক্ষার্থীর সঙ্গে তারা যেন কম্পিট কর?তে পারে। তারা যেন সগর্বে তার দেশকে এগিয়ে নিতে পারে। এটার জন্য আমাদের আইডিয়াল একটা শান্তিপূর্ণ ক্যাম্পাসের পরিবেশ আমাদের তৈরি করতে হবে।'
'আমাদের ছেলেমেয়ে বাংলাদেশকে গড়ার অনুপ্রেরণা তারা যেন ক্যাম্পাস থেকে পায়। ক্যাম্পাসগুলো যেন আইডিয়াল ডিবেটের একটা জায়গা হয়।'