বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫, ৫ আষাঢ় ১৪৩২

চন্দনাইশে মোগল স্থাপত্যের 'খাঁন মসজিদ' ও ২২ কবর

মোহাম্মদ কমরুদ্দিন, চন্দনাইশ (চট্টগ্রাম)
  ২০ এপ্রিল ২০২১, ০০:০০
চন্দনাইশে মোগল স্থাপত্যের 'খাঁন মসজিদ' ও ২২ কবর
চন্দনাইশে মোগল স্থাপত্য খাঁন মসজিদের পাশে ৩৫৪ বছর আগের ২২ কবর -যাযাদি

যুগ যুগ ধরে চন্দনাইশ উপজেলার খাঁন জামে মসজিদটি মোঘল স্থাপত্যের স্মৃতি বহন করছে। উপজেলার হাশিমপুর ইউনিয়নের বাগিচাহাট সংলগ্ন চট্টগ্রাম-কক্সবাজার আরকান সড়কের কোলঘেঁষে মসজিদটি অবস্থিত। এছাড়াও দক্ষিণ পাশে সীমানা প্রাচীর দিয়ে ঘেরা চত্বরে রয়েছে ২২টি কবর।

খাঁন মসজিদের উত্তর পাশে একটি কক্ষে সংরক্ষিত আছে মহানবী হজরত মুহাম্মদ মোস্তাফা (স.) ও বড় পীর আবদুল কাদের জিলানী (র.)-এর পবিত্র পায়ের চিহ্ন। এটি দেখার জন্য প্রতিদিন দক্ষিণ চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে শত শত ধর্মপ্রাণ মুসলমান নামাজ আদায় করতে ছুটে আসেন এখানে।

ইতিহাস পর্যালোচনা করে জানা যায়, মসজিদের দক্ষিণ পাশে যে কবরগুলো রয়েছে, তা প্রায় ৩৫৪ বছর আগের। ১৬৬৬ খ্রিষ্টাব্দে মোঘল আমলে চট্টগ্রামের দোহাজারীর সাঙ্গু নদীর তীর পর্যন্ত সীমানা নির্ধারণে পরিচালিত অভিযানে নিহত হয়ে মসজিদের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন উচ্চ পদস্থ ২২ মোগল সেনা। সেই সময় ওই কবস্থানের নাম রাখা হয় বাগ-ই-শাহ বা বাদশাহদের বাগান। সেই থেকে স্থানটির নাম বাগিচাহাট না ে পরিচিতি লাভ করে।

উলেস্নখ্য, চট্টগ্রামের ফৌজদার ওয়াশিকা ছিলেন এই অঞ্চলের বসতি স্থাপনকারী জমিদার। সুফি সাধক আধু খাঁর তরবারির বীরত্বে মুগ্ধ হয়ে তাকে চট্টগ্রাম নগরীতে খাঁন মঞ্জিলে দাওয়াত করেন। আধু খাঁ দোহাজারীর দুর্গে পৌঁছে তার তরবারির হাতলটি চট্টগ্রামের ফৌজদার ওয়াশিকার কাছে স্ব-সম্মানে পাঠিয়ে দেন। বীরত্বের পুরস্কার হিসেবে ফৌজদার ওয়াশিকা পবিত্র মক্কা নগরী থেকে আনা মহানবী (সা.)-এর পায়ের চিহ্ন সংবলিত পাথর উপহার দেন আধু খাঁকে। সেই সঙ্গে আরও দেন হজরত আব্দুল কাদের জিলানী (র.)-এর পায়ের চিহ্ন। আধু খাঁ সেই পবিত্র উপহারগুলো স্থাপন করেন তারই বাগানবাড়ী বাগিচাহাট খান মসজিদে। যা আজও সেখানে সংরক্ষিত আছে। ৫০০ বছর আগে এগুলো সংগ্রহ করেছিলেন বিশিষ্ট ইসলাম প্রচারক ও সুফি সাধক হজরত শেরে জামান খান (র.)। তিনি পবিত্র মদিনা শরিফ থেকে বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর কদম এবং হাত মোবারকের ছাপ সংবলিত পাথর সংগ্রহ করে নিয়ে আসেন। তা ওয়াশিকার মাধ্যমে হাশিমপুর ইউনিয়নের বাগিচাহাট খান শাহী মসজিদের ভেতরে স্থাপন করেন আধু খাঁ। তা আজও এলাকাবাসীর কাছে হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর কদম মোবারক হিসেবে পরিচিত। প্রতিদিন অসংখ্য আশেকে রাসুল ওই কদম মোবারক জিয়ারত বা দর্শনের জন্য সেখানে গিয়ে থাকেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে