দেশের সীমান্তবর্তী উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় নভেম্বরের শুরুতেই কুয়াশার ঘনঘটা শুরু হয়েছে। ঘাসের ডগায় জমছে শিশিরবিন্দু। এসব দেখে শীতকাল মনে হলেও এখন চলছে হেমন্তকাল। ঘন কুয়াশা আসন্ন শীতের বার্তা নিয়ে হাজির হয়েছে উত্তরের এই জনপদে।
শনিবার ভোরে কুয়াশাছন্ন এই উপজেলার সীমান্তঘেঁষা বিভিন্ন এলাকায় এমন চিত্র দেখা যায়। তেঁতুলিয়া প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সকাল ৯টায় দেশের সর্বনিম্ন ২০.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা বেড়েছে। হেমন্তের শুরুতেই এই অঞ্চলে ভোরে ঘন কুয়াশা, দিনে গরম রাতে শীত অবস্থা বিরাজ করছে। এই পরিস্থিতিতে 'বিরূপ আবহাওয়া' বলছেন আবহাওয়া সংশ্লিষ্টরা।
স্থানীয়রা জানান, উত্তরের এই
অঞ্চলের কাছেই হিমালয় পর্বত ও কাঞ্চনজঙ্ঘার অবস্থান হওয়ায় শীত দ্রম্নত অনুভূত হয় এই জনপদে। পর্বতমালা ছুঁয়ে আসা হিমেল হাওয়া আর ঘন কুয়াশার চাদরে ঢেকে থাকে শীতকালের বেশিরভাগ সময়।
আবহাওয়াবিদদের মতে, বৈশ্বিক আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে হেমন্তের শুরুতে মৌসুমি বায়ু কম সক্রিয় থাকায় এবং উত্তরীয় বায়ুর কিছুটা প্রভাব থাকায় শেষ রাতে বেশ ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। বিশেষ করে মৌসুমি বায়ু যখন বাংলাদেশের ওপর আর সক্রিয় থাকবে না, তখন হালকা ধরনের শীত পড়বে।
শনিবার সকালে স্থানীয় হাসান আলী ও রাজিউল ইসলাম জানান, 'ভোর থেকেই ঘন কুয়াশা। গাছগাছালিতে শিশিরবিন্দু দেখতেছি। অনেকটাই শীত অনুভূত হচ্ছে। মনে হচ্ছে শীত এবার তাড়াতাড়ি নামবে ও বেশি হবে। দিনে গরম বেশি হওয়ায় কাজে-কামে তাদের একটু সমস্যা হচ্ছে।'
পরিবেশকর্মী মাহমুদুল ইসলাম মামুন বলেন, 'হেমন্তের শুরুতেই মাঠে-ক্ষেতখামারে শিশির পড়ছে। এ যেন জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াল অশনি সংকেত! তবু মানুষের পরিমিতিবোধ নেই, সবুজায়ন সৃজনে আগ্রহ নেই। সবাইকে পরিবেশ ও জলবায়ু নিয়ে ভাবতে হবে, সচেতন হতে হবে। এই অঞ্চলের অবস্থান হিমালয়ের পাদদেশে হওয়ায় এখানে আগেই শীত নামে। কুয়াশা দেখে মনে হচ্ছে, দ্রম্নতই শীত পড়তে যাচ্ছে।'
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ বলেন, 'গত কয়েকদিন ধরে তাপমাত্রা উঠানামা করছে। সকালে হঠাৎ কুয়াশায় ঢেকে যাচ্ছে চারপাশ। শনিবার সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ২০.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এখন দিন যত যাবে, তাপমাত্রা তত কমতে থাকবে।'