বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ১৭ বৈশাখ ১৪৩২
আলোচনা সভায় খন্দকার মোশাররফ

সরকারকে ব্যর্থ করতেই অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে

যাযাদি রিপোর্ট
  ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
সরকারকে ব্যর্থ করতেই অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে স্বৈরাচার পতন ও গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন -যাযাদি

অন্তর্বর্তী সরকার যাতে ব্যর্থ হয়, তার জন্য সবরকমের অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে উলেস্নখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ভারত থেকে শুরু করে আমাদের এখানকার কিছু লোক সারাবিশ্বে বাংলাদেশের বদনাম করছে, মানহানি করছে। তাদের একটাই উদ্দেশ্য, এখানে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করা।

এদিকে, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ভারত হঠাৎ করেই বাংলাদেশের বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগেছে বলে মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, যারা এমন আধিপত্যবাদী মানসিকতা পোষণ করে তাদের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে চাই না। ভারত যদি তাদের আচরণ পরিবর্তন না করে তাহলে তাদের সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষ আগামীতে ব্যবসা করবে কি না, সেটা ভাবা হবে।

শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে 'স্বৈরাচার পতন ও গণতন্ত্র দিবস' উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় খন্দকার মোশাররফ এবং গুলশানে দেশীয় পণ্য বিক্রি কার্যক্রমের এক অনুষ্ঠানে রুহুল কবির রিজভী এসব কথা বলেন। পৃথক দুটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে যথাক্রমে '৯০-এর ডাকসু ও সর্বদলীয় ছাত্রঐক্যের নেতারা এবং ঢাকা মহানগর উত্তর কৃষকদল।

ছোটখাটো সমস্যা নিয়ে নানা রকম ষড়যন্ত্র চলছে বলে অভিযোগ তুলে স্বৈরাচার পতন ও গণতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, 'বাংলাদেশে কি হিন্দু সম্প্রদায় তিন মাস ধরে বসবাস করে, নাকি স্বাধীনতার পর থেকে অত্যন্ত সম্প্রীতির মধ্য দিয়ে তারা বসবাস করে?'

ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, 'এখানে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান বলতে কিছু নেই। এ দেশের নাগরিকের পরিচয় বাংলাদেশি। অতএব সবাই বাংলাদেশি। কেন এই ভেদাভেদ? ১৮ কোটি বাংলাদেশি ঐক্যবদ্ধ থাকলে কোনো দেশই ষড়যন্ত্র করে সফল হতে পারবে না।'

দেশ থেকে পালিয়ে গিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপির এই নেতা। তিনি বলেন, তারা চেষ্টা করবে, বাংলাদেশে একটা অশান্তি সৃষ্টির জন্য, বিভেদ সৃষ্টির জন্য।

যত দ্রম্নত সম্ভব সংস্কার করার দাবি জানান খন্দকার মোশাররফ হোসেন। সংস্কারের ক্ষেত্রে নির্বাচনের ক্ষেত্রে, নির্বাচনের পদ্ধতির ক্ষেত্রে এবং নির্বাচনের একটি রোডম্যাপ দেওয়া অগ্রাধিকার হওয়া উচিত বলেন তিনি।

অন্তর্র্বর্তী সরকারকে নিরপেক্ষ উলেস্নখ করে বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, 'বিএনপি এই অন্তর্র্বর্তী সরকারকে সমর্থন করেছে। এ জন্য সমর্থন করেছে, একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিয়ে, জনগণের হাতে ক্ষমতা দিয়ে এই সরকারকে বিদায় হতে হবে। এর মধ্যে বিগত ১৫ বছরে যে অন্যায়, অত্যাচার হয়েছে; সর্বক্ষেত্রে সংস্কার করার জন্য বিএনপি এই সরকারকে সমর্থন করে।'

অন্তর্র্বর্তী সরকারকে সহযোগিতা করতে হবে বলে সভায় উলেস্নখ করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমান উলস্নাহ আমান। অন্তর্র্বর্তী সরকার ও স্বাধীনতার বিরুদ্ধে চক্রান্ত শুরু হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। চক্রান্ত মোকাবিলায় ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে আমান উলস্নাহ বলেন, নির্বাচনের পর বিএনপি ক্ষমতায় এলে জাতীয় সরকার গঠন হবে।

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মো. হাবিবুর রহমান হাবিব, জহির উদ্দিন স্বপন, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির প্রমুখ। সভা সঞ্চালনা করেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম।

অন্যদিকে, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ভারত হঠাৎ করেই বাংলাদেশের বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, যারা এমন আধিপত্যবাদী মানসিকতা পোষণ করে তাদের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে চাই না। ভারত যদি তাদের আচরণ পরিবর্তন না করে তাহলে তাদের সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষ আগামীতে ব্যবসা করবে কি না, সেটা ভাবা হবে।

শুক্রবার রাজধানীর গুলশানে দেশীয় পণ্য বিক্রি কার্যক্রমের এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, 'বাংলাদেশের জনগণ যে সরকার চায়, ভারত তাদের পছন্দ করে না। তারা মনে করে পেঁয়াজ, রসুন, আদা রপ্তানি বন্ধ করে দিলে বাংলাদেশের মানুষ না খেয়ে মরবে। তারা মনে করে এসব পণ্য উৎপাদন আমাদের দেশ করতে পারবে না।'

বিএনপির এ নেতা আরও বলেন, 'তারা (ভারত) হয়তো মনে করেছে পণ্য রপ্তানি বন্ধ করে দিলে বাংলাদেশের মানুষ আর কোনো দেশ থেকে আমদানি করতে পারবে না। বাংলাদেশের মানুষ ডলার খরচ করে ভারতে চিকিৎসা নিতে যায়। কলকাতার হোটেলগুলোতে হাহাকার শুরু হয়েছে গেছে। যারা এত ঘৃণা পোষণ করে তাদের দেশে মানুষ যেতে চায়ও না।'

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের সমালোচনা করে তিনি বলেন, 'রিপাবলিক বাংলা টিভি বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকা ভারতের বলে দাবি করছে। তারা যদি এই দাবি করে বাংলাদেশের মানুষও বিহার-উড়িষ্যা নিজেদের দাবি করবে। সাম্প্রদায়িকতার ধোঁয়া তুলে বাংলাদেশে আধিপত্য কায়েম করতে চায় ভারত। এজন্য তাদের কোনো প্রতিবেশী তাদের সঙ্গে নেই।'

ঢাকা মহানগর উত্তর কৃষকদল আয়োজিত অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য উজ্জ্বল, স্বেচ্ছাসেবক দলের জাহিদ হোসেন, গুলশান থানা কৃষকদলের আহ্বায়ক মিরাজুর রহমান সোহাগ, যুগ্ম আহ্বায়ক ইমরান খান ও সদস্যসচিব রাহুল বিশ্বাস উপস্থিত ছিলেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে