লম্বা ক্যারিয়ারে এমন অভিযোগ কখনো উঠেনি সাকিব আল হাসানের বিপক্ষে। ক্যারিয়ারের সায়াহ্নে থাকা সেই সাকিবের বোলিং ত্রম্নটিপূর্ণ অ্যাকশনের কারণে নিষিদ্ধ করেছে ইসিবি।
বোলিং অ্যাকশন অবৈধ প্রমাণিত হওয়ায় সাকিব আল হাসানকে বরখাস্ত করেছে ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি)। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ক্রিকেট বিষয়ক ওয়েবসাইট 'ক্রিকইনফো'। তাতে জানানো হয়েছে, বোলিং অ্যাকশনে পাস না করা পর্যন্ত ইসিবি আয়োজিত কোনো প্রতিযোগিতামূলক টুর্নামেন্টে অংশ নিতে পারবেন না সাকিব।
প্রায় ১৩ বছর পর গত সেপ্টেম্বরে ইংল্যান্ডে কাউন্টি খেলতে গিয়েছিলেন সাকিব। সমারসেটের বিপক্ষে সারের হয়ে মাত্র একটি ম্যাচ খেলেন তিনি। সেই ম্যাচের প্রথম ইনিংসে ৪ উইকেট ও পরে দ্বিতীয় ইনিংসে ৫ উইকেট শিকার করেন সাকিব। তাতেই তার বোলিং নিয়ে প্রশ্ন তোলেন আম্পায়াররা।
এরপর লিগ কর্তৃপক্ষ জানায়, ইংল্যান্ডের ঘরোয়া ক্রিকেট বা কাউন্টিতে খেলতে হলে বোলিং অ্যাকশন পরীক্ষায় পাস করতে হবে সাকিবকে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক যে, বাঁহাতি টাইগার অলরাউন্ডার সে পরীক্ষায় পাস করতে পারেননি। লাফবরো ইউনিভার্সিটির ফল ঘোষণার পর ১০ ডিসেম্বর থেকেই সাকিবের বোলিং নিষিদ্ধ হওয়ার সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়ে গেল।
বোলিংয়ের অধিকার ফিরে পেতে সাকিবকে পুনরায় পরীক্ষা দিতে হবে। ক্রিকেটের নিয়ম অনুসারে, বোলিংয়ের সময় স্পিনাররা তাদের কনুই সর্বোচ্চ ১৪ ডিগ্রিতে ভাঙতে পারেন। সাকিবকেও প্রমাণ করতে হবে, তিনিও কনুই ১৪ ডিগ্রির কম ভেঙে বোলিং করতে পারেন।
প্রশ্ন হচ্ছে ইসিবি আয়োজিত কাউন্টি বা অন্য টুর্নামেন্টে বল করতে না পারলে কি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট বল করতে পারবেন সাকিব? বিপিএল বা অন্য টুর্নামেন্টেও কি পারবেন বল করতে?
এ ক্ষেত্রে দুঃসংবাদ শুনতে হচ্ছে সাকিবকে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তো বটেই বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেট ছাড়া আর কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টেও বল করতে পারবেন না তিনি।
আইসিসির সন্দেহজনক ও ত্রম্নটিপূর্ণ বোলিং নিয়ে থাকা নীতিমালার ১১.৩ অনুচ্ছেদে বলা আছে, 'কোনো জাতীয় ক্রিকেট ফেডারেশন একজন বোলারকে তাদের ঘরোয়া ক্রিকেটে যদি বোলিং নিষিদ্ধ করে আর সেই নিষেধাজ্ঞা যদি স্বীকৃত পরীক্ষাগারে মানসম্মত বিশ্লেষণী বিধি অনুযায়ী করা হয়, সেক্ষেত্রে আইসিসি সেটা আমলে নিয়ে আরোপ করবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে।'
অন্যান্য ঘরোয়া টুর্নামেন্টের বেলাতেও যে এটা প্রয়োগ হবে তাও লেখা আছে অনুচ্ছেদে, 'সব জাতীয় ক্রিকেট ফেডারেশন ও তাদের অধীনস্থ ঘরোয়া ক্রিকেটেও একই নোটিশ স্বয়ংক্রিয়ভাবে কার্যকর হবে বাড়তি কোনো আনুষ্ঠানিকতা ছাড়া।'
পেশাদার ক্রিকেটে দীর্ঘ সময় পার করেছেন সাকিব আল হাসান। অলরাউন্ডারের তকমা লাগিয়ে জাতীয় দল ছাড়াও খেলেছেন বিশ্বের প্রথম সারির প্রায় সব ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে। সাকিবের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শুরু হয়েছে ২০০৬ সালে। যেখানে এখন পর্যন্ত ৪৪৭টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন তিনি। শিকার করেছেন ৭১২ উইকেট।