গত কয়েকদিন নানা অপ্রীতিকর ঘটনার পর স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে রাজধানীসহ পুরো দেশ। বাজারে কমতে শুরু করেছে তরকারি ও মাছ-মুরগির দাম। তবে এখনো ঊর্ধ্বমুখী আম, পেয়ারা, পেঁপেসহ দেশি ফলের দাম। বাজারে সরবরাহ কমার অজুহাতে বেড়েছে এসব পণ্যের দাম।
শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ভরা মৌসুমেও দেশি ফল সাধারণের নাগালের বাইরে, যা অন্য বছরের একই সময়ে প্রায় অর্ধেক দাম ছিল। এদিন বাজারে ল্যাংড়া বড় সাইজের আমের দাম চাওয়া হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা। ছোট আকারের ল্যাংড়া আম বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায়। এক সপ্তাহ আগেও ল্যাংড়া বড় আম ১৫০ টাকা, ছোট আম ১২০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল।
বারি আম এক সপ্তাহ আগে ৮০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন এ আম বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৫০ টাকায়। সুরমা ফজলি এক সপ্তাহ আগেও ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়। ফজলি আম সপ্তাহে আগে ৯০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়।
দাম বেড়েছে লটকন, ড্রাগন, পেয়ারা ও পেঁপের দাম। এক সপ্তাহ আগে লটকন বিক্রি হয়েছে ১২০ টাকায় এখন ১৬০ থেকে ১৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ড্রাগন ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন বাজারে এ ফলটি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকার মধ্যে। কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে পেয়ারা বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকার মধ্যে। কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা বেড়ে পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৫০ টাকায়।
তবে দাম অপরিবর্তি রয়েছে আনারস, আমড়া, জামবুরার (বাতাবি লেবু) এবং কাঁঠালের। রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে আকারভেদে প্রতি জোড়া আনারস বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৮০ টাকায়। প্রতি কেজি আমড়া বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকায়। প্রতি পিস জামবুরা (বাতাবি লেবু) বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে। তবে ছোট আকারের জামবুরা কিছু কিছু এলাকায় ৩০ টাকায়ও বিক্রি হতে দেখা গেছে।
বাজারে হু হু করে মৌসুমি ফলের দাম বাড়া নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে। বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে সরবরাহ কমে গেছে এ কারণে দাম বেড়েছে ফলের। ক্রেতারা বলছেন, কারফিউকে পুঁজি করে সুযোগ সন্ধানী ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়েছে বেশি মুনাফার আশায়।
এ বিষয়ে সেগুনবাগিচা বাজারের ক্রেতা বোরহান উদ্দিন বলেন, এক সপ্তাহ আগেও ফলের দাম কম ছিল। সড়কে বিশৃঙ্খলা থাকাকালীনও দাম কমেছিল আম, পেয়ারাসহ অন্য ফলের। এখন কারফিউকে ইসু্য বানিয়ে দাম বাড়ানো হয়েছে। এখানে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট কাজ করছে এর পেছনে।
তবে এ ক্রেতার অভিযোগ মানতে নারাজ বিক্রেতা তারিক আবেদিন। তিনি বলেন, অনেক গাড়ির মালিক পণ্যসহ ভয়ে ঢাকায় আসতে চাচ্ছেন না। এতে বাজারে পণ্যের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। পাইকারিতে দাম বেশি হওয়ার প্রভাব পড়েছে খুচরা পর্যায়ে।