সোহানার বয়স পাঁচ বছর আর তার ছোট ভাইয়ের বয়স দেড়। সংসারে একমাত্র আয়ের উৎস ছিলেন বাবা। পরের জমিতে শ্রমিকের কাজ করেই চলত স্বামী-স্ত্রী আর দুই সন্তানের সংসার। অভাব অনাটন থাকলেও সুখের আশায় দিন ভালোই কাটত তাদের। এরই মধ্যে ২৪ জানুয়ারি সোমবার সকালে গলায় রশি বাঁধা অবস্থায় তার বাবার মরদেহ স্থানীয় একটি খাল থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।
স্বামীর মৃত্যুর পর ছোট্ট সোহানা আর মেহেদীকে বুকে জড়িয়ে সন্তানদের অজানা ভবিষ্যৎ ভেবে ডুকরে ডুকরে কাঁদছে মা জোসনা। বাড়িজুড়ে চলছে শোকের মাতম। বিভিন্ন মাধ্যমে এমন সংবাদ জানার পর নিহতের দুই সন্তানের দায়িত্ব নিয়েছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগ নেতা ইঞ্জিনিয়ার আনোয়ার পারভেজ সাগর। বৃহস্পতিবার সকালে তাদের বাড়িতে গিয়ে পরিবারের খোঁজখবর নেন। এ সময় নিহতের স্ত্রী জোসনার হাতে দুই সন্তানের জন্য খাবার, জামাকাপড় এবং নগদ পাঁচ হাজার টাকা তুলে দেন। এছাড়া আগামী দিনগুলো সোহানা মেহেদীর লেখাপড়া ও নিহত পির আলীর পরিবারের ভরণপোষণের দায়িত্ব নেন তিনি।
নিহত ব্যক্তির নাম পির আলী। তিনি ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার কাষ্টভাঙ্গা ইউনিয়নের সামছুল হকের ছেলে ও ওয়ার্ড যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তিনি ওই গ্রামের দুটি স্পর্শকাতর মামলার প্রধান সাক্ষী ছিলেন। বিভিন্ন সময় আসামিরা তাকে প্রাণনাশের হুমকি দিত। নিজের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে এক মাস আগে ৪ ডিসেম্বর কালীগঞ্জ থানায় একটি জিডিও করেছিলেন।
নিহত পির আলীর স্ত্রী জোসনা খাতুন জানান, সাংসারে কোনো গোলযোগ ছিল না। সে কারও ক্ষতিও করেনি। আমার স্বামী নাইট গার্ডের কাজ করত। সেখান থেকে মাসে ১৫০০ টাকা পেত। পাশাপাশি পরের ক্ষেতে কাজ করে সংসার চলত। আয়ের একমাত্র পথ এখন বন্ধ, আমি বাচ্চাদের নিয়ে কোথায় গিয়ে দাঁড়াব। বাচ্চাদের নিয়ে কীভাবে বেঁচে থাকব বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
যাযাদি/ এস