শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

কিশোরগঞ্জে হত্যা মামলায় ৩ জনের ফাঁসি, যাবজ্জীবন ১

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
  ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ২১:২০

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলায় সাবেক ইউপি সদস্য হত্যা মামলায় তিনজনের ফাঁসি ও একজনকে যাবজ্জীবন কারাদ- দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক এ রায় দেন।

একই সঙ্গে যাবজ্জীবন কারাদ-প্রাপ্ত আসামিকে ১ লাখ টাকা আর্থিক জরিমানার আদেশ দিয়েছেন বিচারক। রায় ঘোষণার আগে একজন অভিযুক্ত মৃত্যুবরণ করায় মামলা থেকে আগেই অব্যাহতি দেয় আদালত। এছাড়া রায় ঘোষণার সময় অন্য আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

মৃত্যুদ- প্রাপ্তরা হলেন, কটিয়াদী উপজেলার মধ্য ভাট্টা এলাকার মৃত সিন্দু ভূঁইয়ার পুত্র মোঃ ফোরকান ভূঁইয়া (৪৮), জমশেদ ভূঁইয়ার পুত্র মোঃ শাহেদ ভূঁইয়া (৩৪), মৃত ধলু ভূঁইয়ার পুত্র মো: এ্যাংগু ভূঁইয়া (৫৮)। যাবজ্জীবন কারাদ-প্রাপ্ত আসামি হলেন একই এলাকার জমশেদ ভূঁইয়ার পুত্র মো: মোস্তফা ভূঁইয়া (৪৬)।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ থেকে জানা গেছে, পূর্ব শত্রুতার জেরে ২০১৩ সালে ২৯ আগস্টে রাত ৯টার দিকে কটিয়াদী উপজেলার ভাট্টা নতুন বাজার হতে বাজার করে প্রতিবেশি লোকজনের সাথে গল্পগুজব করতে করতে বাড়িতে ফিরছিলেন। মৃত্যুদ-প্রাপ্ত আসামি ফোরকান ভূইয়ার বাডির উত্তর পার্শ্বে কাচা রাস্তায় পৌঁছামাত্রই ফোরকান, জমশেদ, শাহেদ ও এ্যাংগুসহ অজ্ঞাত নামা ৫/৭ জন লোক দা, লাঠি ছুড়া, চাপাতি, লোহার রড ইত্যাদি নিয়ে পথরোধ করে। এসময় মৃত্যুদ-প্রাপ্ত আসামি ফোরকান ভূইয়া হুকুম দেন, শালার পুতের জীবন শেষ করে দে। এ হুকুম পাওয়ার সাথে সাথে সকলেই পূর্ব পরিকল্পিতভাবে হামলা করে। আসামিদের হাতে থাকা দা, চাপাতি দিয়ে ফোরকান, জমশেদ, শাহেদ ও এ্যাংগু খুন করার জন্য রতনের মাথায় এলোপাতারি কুপিয়ে মারাত্মক রক্তাক্ত জখম করে।

রতন মাটিতে পড়ে গেলেও তারা হাতে থাকা লোহার রড দিয়া পেটাতে থাকে। এতে রতনের শরীরের বিভিন্ন স্থানে কেচা নিলা ফোলা জখম হয়। পরে রতনকে উদ্ধার করে প্রথমে ভাগলপুর জহিরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার অবস্থা অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করানো হয়।

রতন হাসপাতালে ভর্তি থাকার সময় চাচাতো ভাই আনার ভূঁইয়া বাদী হয়ে এ ঘটনায় কটিয়াদী মডেল থানায় ৩০ আগস্ট একটি মামলা দায়ের করেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় হামলার ৬ দিন পরে ৫ সেপ্টেম্বর রতনের মৃত্যু হলে এ মামলা হত্যা মামলায় রুপান্তরিত হয়। তদন্ত শেষে কটিয়াদী মডেল থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক রাখাল দেবনাথ ২০১৪ সালের ৮ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালত মঙ্গলবার এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর (ভারপ্রাপ্ত) আবু সাঈদ ইমাম বলেন, মামলার রায়ে আমরা আনন্দিত। এ রায়ের মাধ্যমে আবারও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

আসামি পক্ষের স্বজনরা বলেন, আমরা উচ্চ আদালতে এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করব। আমাদের আত্মীয়রা এ হত্যাকান্ডে জড়িত নন। রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন পাবলিক প্রসিকিউটর (ভারপ্রাপ্ত) আবু সাঈদ ইমাম এবং আসামিপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন আইনজীবী আজিজুল হক মিন্টু। যাযাদি/ এম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে