রাজধানীর বেইলি রোডে বহুতল ভবনে অগ্নিকাণ্ডে নিহত বুয়েট শিক্ষার্থী লামিসার গ্রামের বাড়ি ফরিদপুর শহরের ঝিলটুলীতে বইছে শোকের মাতম। লামিসা বুয়েটের মেকানিক্যাল ডিপার্টমেন্টের দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যায়নরত ছিলেন। ভিকারুন্নেসা থেকে এসএসসি ও হলিক্রস থেকে এইচএসসি পাশ করেন লামিসা।
দুই বোনের মধ্যে লামিসা বড়। ছোট বোন রাইসা এবছর ভিকারুন্নেসা কলেজ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে।
লামিসার বাবা নাসিরুল ইসলাম শামীম। তিনি এডিশনাল ডিআইজি হিসেবে হেডকোয়ার্টার আর এন্ড সিপিতে কর্মরত রয়েছেন। লামিসার মাতা আফরিনা মাহমুদ মিতু ২০১৮ সালে মারা যান। ঢাকার অফিসার্স ক্লাবে দুই মেয়েকে নিয়ে বসবাস করতেন নাসিরুল ইসলাম।
এদিকে শুক্রবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে লামিসার মরদেহ শহরের দক্ষিন ঝিলটুলীর বাড়িতে আনা হয়। পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের আহাজারিতে পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে। বাদ জুম্মা শহরের চকবাজার জামে মসজিদে জানাজা শেষে আলীপুর কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হবে।
নামাজে জানাজায় অংশ নেন ফরিদপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য এ কে আজাদ, অতিরিক্ত ডিআইজি মো: আলিমুজ্জামান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হক, সাধারণ সম্পাদক শাহ মো: ইশতিয়াক আরিফ সহ প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ।
পারিবারিক সূত্র জানায়, বই মেলা থেকে বান্ধবীদের সাথে কাচ্চি খেতে গিয়েছিল লামিসা। অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত হলে লামিসা তার বাবাকে ফোনে জানিয়েছিল, এরপর থেকে তার মোবাইল বন্ধ ছিল। পরে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিতসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন।
নিহত লামিসার চাচা রফিকুল ইসলাম সুমন জানান, বৃহস্পতিবার রাতে বই মেলা ঘুরে বান্ধবীদের সাথে বিরিয়ানি খেতে যায় লামিসা। সেখানে অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত হলে লামিসা তার বাবাকে ফোন করে বলে ‘বাবা আমি আটকা পড়েছি, আমাকে বাঁচাও’, এরপর আর কোনো কথা হয়নি লামিসার সাথে। একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও লামিসার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।
তিনি আরো জানান, ছোট বেলা থেকেই খুবই শান্ত প্রকৃতির মেয়ে লামিসা। ওর মা মারা গেছে ৬বছর আগে। বড় বোন হিসেবে সবার খেয়াল রাখতো লামিসা। ওর এভাবে চলে যাওয়া কোনো ভাবেই মেনে নিতে পারছিনা।
যাযাদি/ এসএম