নির্বাচন সংক্রান্ত একটি নথি নিয়ে রির্টানিং কর্মকর্তার রুমে বসে আলোচনা করছিলেন শরীয়তপুর সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও রির্টানিং কর্মকর্তা। এসময় জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌসুলী (জিপি) আলমগীর মুন্সী ওই রুমে গেলে নথিটি উল্টিয়ে রাখেন নির্বাচন অফিসার। বিষয়টি ভালো ভাবে নেননি জিপি আলমগীর মুন্সী। এঘটনার একদিন পরে ওই নির্বাচন অফিসারকে রির্টানিং কর্মকর্তার সামনেই অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে মারধর করতে উদ্যত হয়ে লাঞ্চিত করেছেন জিপি আলমগীর মুন্সী। বিষয়টি নিয়ে জিপির বিরুদ্ধে থানায় দায়ের করা হয়েছে মামলা।
শরীয়তপুর সদর উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার (১৪ মে) বিকেলে নির্বাচন সংক্রান্ত একটি নথি নিয়ে সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসার বিকাশ চন্দ্র দে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে অনুষ্ঠিতব্য শরীয়তপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকতা ও অতিরিক্ত জেলা প্রসাশক (রাজস্ব) সাইফুদ্দিন গিয়াসের রুমে বসে আলোচনা করছিলেন। এসময় ওই রুমে জিপি আলমগীর মুন্সী প্রবেশ করলে নথিটি উল্টিয়ে রাখেন নির্বাচন অফিসার বিকাশ চন্দ্র দে। এঘটনার একদিন পর বুধবার বিকেলে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের পূর্ব পাশ দিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে যাওয়ার সময় জিপি আলমগীর মুন্সী নির্বাচন অফিসার বিকাশ চন্দ্র দেকে ডাক দিয়ে থামান।
এরপর কেন তিনি নথিটি উল্টিয়ে রাখলেন এমন প্রশ্ন তুলে তাকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে মারধর করতে উদ্যত হোন। বিকাশ চন্দ্র দে এঘটনার প্রতিবাদ না করে রির্টানিং কর্মকর্তার রুমে চলে যাওয়ার সময় সিঁড়িতেই দেখা হয়ে যায় রিটানিং কর্মকর্তা সাইফুদ্দিন গিয়াস, সহকারী রিটানিং কর্মকর্তা মো. মাইনউদ্দিন, এনডিসি সোহেল রানা ও ম্যাজিষ্ট্রেট অভিজিৎ সূত্রধরের সঙ্গে।
রির্টানিং কর্মকর্তাদের সিঁড়িতে পেয়ে নিচে নেমে জিপি আলমগীর মুন্সীর বিষয়টি তাদেরকে বলাতে একটু পাশে দাঁড়িয়ে থাকা জিপি আলমগীর মুন্সী আবারও ক্ষিপ্ত হয়ে যান। এসময় রির্টানিং কর্মকর্তাসহ অন্যান্যদের সামনেই অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে নির্বাচন অফিসারকে মারতে উদ্যত হোন জিপি আলমগীর মুন্সী।
পরবর্তীতে বিষয়টির বিস্তারিত জেলা নির্বাচনকে অফিসারকে অবগত করেন বিকাশ চন্দ্র দে। জেলা নির্বাচন অফিসার বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানিয়েছেন। এঘটনার বিচার দাবি ও নিরাপত্তা চেয়ে পালং মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছেন উপজেলা নির্বাচন অফিসার বিকাশ চন্দ্র দে।
বিষয়টি নিয়ে জেলা নির্বাচন অফিসার আব্দুল মান্নান বলেন, বিষয়টি সারা বাংলাদেশের অফিসারদের জন্য দুঃখজনক। এঘটনায় মামলা দায়ের করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও রির্টানিং কর্মকর্তা সাইফুদ্দিন গিয়াস বিষয়টি নিয়ে বলেন, বিষয়টি আমি সম্পূর্ণ অবগত। যা ঘটেছে, তা দুঃখজনক। এবিষয়ে আইনগতভাবে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
পালং মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেজবাহ উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে জিপি আলমগীর মুন্সীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নির্বাচন অফিসারকে গালাগালি করে মারধর করতে উদ্যত হওয়ার বিষয়টি নিয়ে শরীয়তপুর জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌসুলী (জিপি) আলমগীর মুন্সী বলেন, আপনি যে অভিযোগের কথা বলছেন, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। ওনার সঙ্গে আমার এমনিতেই কথা হয়েছে। যারা উপস্থিত ছিল বলতেছেন, তারাও জানেন ওনার সঙ্গে আমি কী কথা বলেছি। ওনার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।
যাযাদি/ এস