মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২ আশ্বিন ১৪৩১

মিঠাপুকুরে সাবেক এমপির বাসভবন সহ উপজেলা পরিষদ ভবনে আগুন

মিঠাপুকুর (রংপুর) প্রতিনিধি
  ০৪ আগস্ট ২০২৪, ১৯:১৩
ছবি-যায়যায়দিন

রংপুরের মিঠাপুকুরে দেশব্যাপী কোটা বিরোধী আন্দোলনের অংশ বিশেষ ছাত্রদের ডাকা অসহযোগ আন্দোলন কর্মসূচীতে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের ঘটনা ঘটেছে। এসময় আন্দোলনকারীরা সাবেক এমপি এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ, এইচএন-আশিকুর রহমানের বাসভবন সহ মিঠাপুকুর উপজেলা পরিষদ চত্বরে অবস্থিত বিভিন্ন সরকারি স্থাপনা এবং দপ্তরে অগ্নি সংযোগ করেন।

রবিবার (৪-আগস্ট ) সকাল ১১ টার পর থেকে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী উপজেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আন্দোলনকারীরা স্লোগান নিয়ে পায়ে হেঁটে ঢাকা রংপুর মহাসড়কের মিঠাপুকুর আন্ডারপাসের নীচে অবস্থান নেয়। এসময় আন্দোলনকারীরা থানা ঘেরাও করে রাখে এবং থানার ভিতরে প্রবেশের চেষ্টা করে।

পরিস্থিতি বেগতিক দেখে মিঠাপুকুর থানা পুলিশ আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনা করে। পরে দুপুর ১২ টার পরে আন্দোলনকারীদের একাংশ উপজেলা চত্বরে প্রবেশ করে উপজেলা পরিষদ ভবনে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে এবং উপজেলা পরিষদ ভবনের নীচের গেইট ভেঙে মোটরসাইকেল সহ বিভিন্ন মালামালে আগুন লাগিয়ে দেয়। ঘটনার সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার- বিকাশ চন্দ্র বর্মন সহ অনেক সরকারি কর্মকর্তা ভিতরে আটকা পড়েছিলেন। পরে তিনি সহ আটককৃতরা কৌশলে পালিয়ে যান।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আন্দোলনকারীরা একে একে উপজেলা পরিষদ ভবন, উপজেলা নির্বাচন অফিস, মৎস্য অফিস,সমবায় কর্মকর্তার কার্যালয়, পরিসংখ্যান অফিস, খাদ্য অফিস, প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সহ বেগম রোকেয়া অডিটোরিয়াম এবং উপজেলা আনসার ভিডিপি অফিসে আগুন দেয়। নাশকতাকারীদের দেয়া আগুনে মূহুর্তেই রনক্ষেত্রে পরিনত হয় মিঠাপুকুর উপজেলা পরিষদ চত্বর। দু-একটি সরকারি দপ্তর বাদে সব পুড়ে ছাই।

এদিকে মিঠাপুকুর উপজেলা পরিষদে আগুন দেওয়ার পর নাশকতাকারীরা সাবেক এমপি এইচএন- আশিকুর রহমানের বাসায় আগুন দেয়। তবে উপস্থিত অনেকের দাবি, আগুন দেওয়ার পূর্বে এমপির বাসায় লুটপাট করা হয়েছে।ভিতরে মূল্যবান যেসমস্ত জিনিসপত্র ছিলো,তা বের করে নিয়ে যেতে দেখা গিয়েছে অনেককে। কিছুক্ষণ পরেই চেংমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, রেজাউল কবির টুটুল এবং মিঠাপুকুর থানা চত্বরে জব্দকৃত একটি ট্রাকে আগুন দেয় নাশকতাকারীরা।

ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে সরকারি কোনো কর্মকর্তা কিংবা সরকার দলীয় জনপ্রতিনিধি এবং আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের কোন দায়িত্বশীল নেতা এখনো কোনো মন্তব্য বা বিবৃতি না দিলেও, মিঠাপুকুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফেরদৌস ওয়াহিদ জানান, নাশকতাকারীদের প্রধান টার্গেট ছিলো, মিঠাপুকুর থানা ঘেরাও করে অগ্নি সংযোগ এবং লুটপাট করে জানমালের ক্ষতি করা। মিঠাপুকুর থানা পুলিশ দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছেন।

তবে ঘটনার সময় নাশকতাকারীরা সাংবাদিকদের উপর চড়াও হয়েছে এবং কয়েকজন সাংবাদিককে মারধর এবং মোবাইল কেড়ে নিয়ে ভেঙে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ রিপোর্ট লেখা অবধি বিভিন্ন স্থাপনায় এখনো দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে।

যাযাদি/ এম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে