সোমবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৫ ভাদ্র ১৪৩১

পুলিশের গুলিতে আহত শিক্ষার্থীর পাঁচ দিন পর মৃত্যু

দিনাজপুর প্রতিনিধি
  ০৯ আগস্ট ২০২৪, ২২:৩৫
ফাইল ছবি

দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক রাহুল ইসলাম (১৮) গুলিবিদ্ধ ও টিয়ার সেলের ধোয়ায় মস্তিষ্ক বিকৃত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।

মৃত্যুর সাথে পাঁচ দিন যুদ্ধ করে অবশেষে হার মানতে হলো দিনাজপুরের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক রাহুল ইসলামকে।

আজ শুক্রবার রাত সাড়ে ৮ টার দিকে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউ তে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

রাহুল ইসলামের মৃত্যুর খবর শুনে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দিনাজপুর জেলা সমন্বয়ক একরামুল ইসলাম আবির সহ দিনাজপুরের ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কারীরা ছুটে আসেন।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক রাহুল ইসলাম দিনাজপুর জেলা সদরের রানীগঞ্জ এহিয়া হোসেন ডিগ্রী কলেজের ইন্টারমিডিয়েট দ্বিতীয় বর্ষের বাণিজ্য বিভাগের শিক্ষার্থী ও দিনাজপুর সদর উপজেলার ফাজিলপুর ইউনিয়নের নমিরপাড়া গ্রামের মোসলেম উদ্দিনের ছেলে।

রাহুল ইসলামের মৃত্যুর খবর শোনার পর তার ছোট ভাই কান্নায় একেবারে ভেঙ্গে পড়েন। আত্মনাদ করে বারবার বলতে থাকেন ভাই আমাকে একা রেখে চলে গেল। আমি কিভাবে একা থাকবো কথা বলতেই অজ্ঞান হয়ে পড়ছে তার ছোট ভাই।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক একরামুল হক আবির, বলেন ৪ আগস্ট দিনাজপুরের পলিটেকনিক্যাল মোড় থেকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের আন্দোলনের মিছিলের প্রথম সারিতে অবস্থান করে স্লোগান দিচ্ছিল রাহুল ইসলাম।

দিনাজপুর জজকোট এলাকায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সাথে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে পুলিশের গুলি রাহুল ইসলামের পায়ে লেগে যায়। পরে উত্তেজিত ছাত্র-জনতা পুলিশের উপর পাল্টা প্রতিরোধ করে তোলার একপর্যায়ে পুলিশ দ্বিতীয় দফায় টিয়ার সেল, সাউন্ড গ্রেনেড সহ বিভিন্ন অস্ত্র ব্যবহার করে। একপর্যায়ে টিয়ার সেলের গ্যাস রাহুল ইসলামের মুখের সামনে ছুটে গেলে তার ধোয়া নাকে মুখে প্রবেশ করে। একপর্যায়ে গুরুতর আহত অবস্থায় মাটিতে পড়ে যায়। আন্দোলনকারীরা কয়েকজন রাহুল ইসলামকে উদ্ধার করে দিনাজপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে সেখানে তার অবস্থা আশংকা জনক হলে তৎকালীন দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিয়ে আসা হয়। চিকিৎসকরা প্রথমে চিকিৎসা দিতে বিলম্ব করে পরে এক পর্যায়ে তোপের মুখে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও পুলিশের গ্রেফতারের আতঙ্ক থাকায় রাহুল ইসলাম এক পর্যায়ের মেডিকেল থেকে পালিয়ে বাড়িতে চলে যায়।

গতকালকে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে দ্বিতীয় বার আবার দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দ্বিতীয় দফা চিকিৎসকেরা রাহুল ইসলামকে বাঁচানোর জন্য এক পর্যায়ে ডাক্তাররা বোর্ড বসিয়েছিলেন কিন্তু তার অবস্থা একেবারে আশঙ্কাজনক হয়ে পড়ায় রাত সাড়ে আটটার দিকে তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।

তিনি আরো বলেন তার পরিবারের সাথে কথা বলে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে লাশ বাড়িতে নেওয়া হবে এবং পরিবারের সাথে আলোচনার করেই শহীদের মর্যাদা প্রদান করেই তাকে দাফন কাজ সম্পন্ন করা হবে।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে