কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বর্জ্যে ও পাহাড়ি পানি এসে মাছকারিয়া ও লম্বাশিয়া এলাকার শত শত একর বুরো চাষাবাদের পাকা ধান নষ্ট হয়ে পড়েছে। সর্বনাশা দৃশ্য দেখে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েছে।
সরজমিনে দেখা যায়, গত শুক্রবার বৃহস্পতিবার ও বুধবার দফা দফায় বৃষ্টি হয়েছে। এই বৃষ্টির ফলে রাজাপালং ইউনিয়নের ০৬নং ওয়ার্ডের মাছকারিয়া লম্বাশিয়া এলাকায় জলাবদ্ধতা নিমজ্জিত হয়েছে। এই বৃষ্টির ফলে কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ময়লা আবর্জনার বর্জ্য জমিতে চলে আসে। এতেে প্রায় ৫ শতাধিক একর চাষাবাদ বিস্তীর্ণ জমিতে সয়লাব হয়ে ব্যাপক ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
গ্রামবাসীরা জানান, লম্বাশিয়া, মাছকারিয়ার বিস্তীর্ণ প্রায় ৫ শত একর চাষাবাদ জমি খালে বাঁধ দিয়ে বিগত ২০১৭ সালের আগে স্থানীয় কৃষকেরা বোরো চাষাবাদ, মৌসুমী শাক- সবজি খেত করে জীবন জীবিকা নির্বাহ করতো। কিন্তু গত ৬ বছর ধরে এ খাল দিয়ে রোহিঙ্গাদের শত শত টন ময়লা ও বর্জ্যের কারণে কারণে বর্ষা মৌসুমে চাষাবাদ করা যাচ্ছে না।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল হক মেম্বার বলেন, খালের দু'পাড়ে উজানে সমতলে, পাহাড় ও টিলায় সারি সারি আশ্রিত রোহিঙ্গাদের বসতি স্থাপন করা হয়েছে। এসব রোহিঙ্গাদের দৈনন্দিন ব্যবহার্য ময়লা-আর্বজনা, মূল-মূত্রসহ নানা রকমের বর্জ্য এ খাল দিয়ে ভেসে আসছে। এতে খালের পানি কুচকুচে কালো হয়ে দূর্গন্ধ ছড়িয়ে চাষাবাদ, সবজি চাষ তো দূরের কথা পরিবেশ বিপন্ন হয়ে টেকা দায় হয়ে পড়ছে বলে জানান স্থানীয় লোকজন। উখিয়ার কুতুপালং, বালুখালী, থাইংখালী, পালংখালী এলাকার অন্তত সাত হাজারের মতো পরিবারের প্রায় ২০ হাজারের মতো স্থানীয় লোকজন বহুমুখী সমস্যা ও সংকটে মূখে পতিত হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আশরাফ আলী ক্ষোভের সূরে বলেন, ২০১৭ সালের আগে খালটি এলাকাবাসীর কাছে আর্শীবাদ ছিল। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে এটি স্থানীয় লোকজনের জন্য অভিশাপে রূপান্তরিত হয়ে রোহিঙ্গাদের বিশ্রী বর্জ্যের কারণে এ খাল বর্তমানে ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে উঠেছে। এছাড়াও গত ৬ বছর ধরে মাছকারিয়ার ৫ শত একর জমিতে চাষাবাদে অনিশ্চয়তা রয়েছি। বজ্র নিষ্কাসনে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন।
স্থানীয় মেম্বার হেলাল উদ্দিন জানান, পানিতে ডুবে যাওয়ায় বুরো মৌসুমের শত শত একর জমির পাকা ধানের শস্য নষ্ট হয়ে গেছে। কৃষকরা সেই পাকা ধান আর ঘরে তুলতে পারবে না। অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে।
যাযাদি/ এসএম