কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে অবৈধভাবে পুরোপুরি বন্ধ হয়েছে বালু উত্তোলন । ফলে বালু উত্তোলন কেন্দ্রিক ১/২ হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে অর্থ কষ্টে ভুগছেন। এছাড়াও বালুর অভাবে নির্মাণ কাজ স্থবির হয়ে পড়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ইতিপূর্বে ভলগেট দ্বারা ব্রহ্মপুত্র নদের বিভিন্ন স্থান থেকে অবৈজ্ঞানিক উপায়ে অবৈধভাবে বালুর উত্তোলন হয়ে আসছিল। এ কারণে নদী ভাঙ্গন, নদীর গতি প্রবৃত্তি, পরিবেশ বিপর্যয় সহ নানাবিধ সমস্যা দেখা দেয়।
বিষয়টি অবগত হবার পর কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক নুসরাত সুলতানার নির্দেশে চিলমারী উপজেলা প্রশাসন এবং কুড়িগ্রাম জেলা সম্মিলিত শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য জোটের নেতৃবৃন্দ অবৈধভাবে বালু উত্তোলন এবং পরিবহন বন্ধ করার জন্য অধিকতর তৎপর হয়ে ওঠে। ফলে চিলমারীর ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।
এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম জেলা সম্মিলিত শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য জোটের আহ্বায়ক আয়নাল হক এবং সদস্য সচিব আমিনুর রহমান জানিয়েছেন, ‘আমরা জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে যে দিকনির্দেশনা পেয়েছি, সেই মোতাবেক অবৈধভাবে বালু পরিবহন বন্ধ করার ব্যবস্থা নিয়েছি। বালু পরিবহন বন্ধ করার পর শ্রমিকরা বেকার হয়ে পড়েছে। এই কর্মহীন শ্রমিকদের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের উচিত কিছু একটা ব্যবস্থা করা।
এ ব্যাপারে চিলমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সবুজ কুমার বসাক জানিয়েছেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। বর্তমানে চিলমারী উপজেলায় থানা পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। যার ফলে ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করা সম্ভব হয়েছে।’
কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, ‘চিলমারীর ব্রহ্মপুত্র নদের বালু দ্বারা নির্মাণ কাজ হয়ে থাকে। সেই বালু সরবরাহ বন্ধ থাকায় এই জেলার নির্মাণ কাজ স্থবির হয়ে পড়েছে। এই জটিল পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠার জন্য জেলা প্রশাসনের উচিত একটি বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করা।’
এ ব্যাপারে কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক নুসরাত সুলতানা বলেন, ‘রাজারহাটের তিস্তা নদীতে বৈধ বালু মহাল রয়েছে। কিন্তু স্থানীয় ব্যক্তিরা সেই বালু উত্তোলন করতে দিচ্ছে না বলে অভিযোগ পেয়েছি। উক্ত বৈধ বালু মহাল থেকে বালু উত্তোলন করা সম্ভব। এর বাইরে অবৈধ উপায়ে শুধু চিলমারীর ব্রহ্মপুত্র নদ নয়; অন্য কোথাও থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন করা যাবে না।’
জেলা প্রশাসক নুসরাত সুলতানা আরো বলেন,‘ চিলমারীর ব্রহ্মপুত্র নদের দুটি পয়েন্ট সহ মোট ছয়টি স্থানে বৈধ বালু মহাল করার প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রস্তাবিত সাতটি বালু মহাল চালু করার।’