শনিবার, ২১ জুন ২০২৫, ৭ আষাঢ় ১৪৩২

চট্টগ্রামে ভারী বৃষ্টিতে জলজট, সড়কে ভোগান্তি

চট্টগ্রাম ব্যুরো
  ১৮ জুন ২০২৫, ১৬:২৯
চট্টগ্রামে ভারী বৃষ্টিতে জলজট, সড়কে ভোগান্তি
ছবি: যায়যায়দিন

চট্টগ্রাম নগরীতে গতকাল মঙ্গলবার থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি হলেও আজ বুধবার (১৮ জুন) ভোর থেকে শুরু হয়েছে মুষলধারে বৃষ্টি।

এর ফলে নগরীর জিইসি মোড়, আগ্রাবাদ, চৌমুহনী, বাকলিয়া, রাহাত্তারপুল, চকবাজার এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।

পানিতে তলিয়ে গেছে এসব এলাকার বিভিন্ন সড়ক। জলাবদ্ধতার কারণে স্থানীয় বাসিন্দারাসহ কর্মস্থলের উদ্দেশে বের হওয়া মানুষ ভোগান্তিতে পড়েন।

পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে মোট ১০৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এ পরিস্থিতি আগামী কয়েকদিন অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।

কারণ মৌসুমি বায়ু সক্রিয় রয়েছে এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় রয়েছে, যা ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের কারণ হিসেবে কাজ করছে।

পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস কর্মকর্তা বশির আহমেদ বলেন, ‘গতকাল ১২ টা থেকে আজ দুপুর ১২টা পর্যন্ত চট্টগ্রামে ৭৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে।

এর মধ্যে ৬৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে আজ বুধবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত। বৃষ্টিপাত আরও তিনদিন হতে পারে। চট্টগ্রামে পাহাড় ধ্বসের সর্তকর্তা জারি করা হয়েছে।’

নগরের আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকার বাসিন্দা আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, আজকের অতি ভারী বৃষ্টির কারণে পানি জমা হয়েছে, যা খুব স্পষ্ট।

কিন্তু গতকালও এই এলাকায় জলাবদ্ধতা হয়েছিল, যদিও শহরের অন্যত্র তখন এমন পরিস্থিতি ছিল না। বৃষ্টির সময় এই এলাকায় গাড়ি চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে যায়, ফলে মানুষের যাতায়াতে বিঘ্ন ঘটে।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের উপ-প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা প্রণব কুমার শর্ম্মা বলেন, ‘কাতালগঞ্জ, কাপাসগোলা, মুরাদপুরে এন মোহাম্মদ প্লাস্টিকের সামনে কিছু পানি উঠেছিল। জিইসি মোড় থেকে ওয়াসার দিকে যাবার সময় যে থলি (নিচু) জায়গাটা আছে, সেখানে পানি জমে গিয়েছিল। বৃষ্টি কমার পর ১৫-২০ মিনিটের মধ্যে পানি নেমে গেছে।’

উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম নগরের দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতা সমস্যা দূর করতে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) বিভিন্ন বড় প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এর মধ্যে সিডিএর মেগা প্রকল্পসহ মোট চারটি প্রকল্পের মাধ্যমে নগরীর পানির নিকাশা উন্নত করার কাজ চলছে, যার জন্য মোট বাজেট ধরা হয়েছে ১৪ হাজার ৩৯৯ কোটি টাকা।

এই প্রকল্পগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় একটি হচ্ছে ৩৬টি খালের খনন ও সংস্কার, যার জন্য আলাদা বাজেট হিসেবে বরাদ্দ রয়েছে ৮ হাজার ৬২৬ কোটি টাকা। এই প্রকল্পের কাজের মেয়াদ আগামী বছরের জুন মাসে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

এখন পর্যন্ত প্রকল্পের অগ্রগতি প্রায় ৮৪ শতাংশে পৌঁছেছে। ৩৬টি খালের মধ্যে ২৫টির কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে, আর ছয়টি খালের কাজ ৯০ শতাংশের বেশি সম্পন্ন। বাকী পাঁচটি খালের কাজ এখনও ৯০ শতাংশের নিচে রয়েছে।

তবে নগরীর কাতালগঞ্জ, পাঁচলাইশ ও মুরাদপুর এলাকায় অবস্থিত হিজড়া খালের খনন ও সংস্কার কাজ এখনও শেষ হয়নি। এই খালটির অবস্থা এখনও সংকটজনক।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে