জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি ডাঃ সৈয়দ আবদুল্লাহ মোঃ তাহের বলেছেন, ৫৪ বছরে স্বাধীনতার এই সময়ে বাংলাদেশ বার বার লাইনচ্যুত হয়েছে। মাঝে মধ্যে লাইনে ফিরে আসার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু স্থায়ীভাবে এই যাত্রাপথ নিরাপদ হয়নি। এই যাত্রাপথ মানুষের জন্য সম্মৃদ্ধ ও সুপথ বয়ে আনেনি।
৫ আগস্টের পর একটি সুযোগ আসছে, মানুষের ভিতরে একটি চেতনা তৈরি হয়েছে। একটি আস্থা তৈরি হওয়ার সুযোগ হয়েছে। একটি মৌলিক পরিবর্তন আনতে হবে। গতানুগতিক ধারার রাজনীতি, অর্থনৈতিক ধারার নেতৃত্ব এর বিকল্প একটি নীতিকথা ভিত্তিক, টেকসই এবং দীর্ঘমেয়াদী পরিবর্তনের জন্য এখনই তার উপযুক্ত সময়। আপনারা জানেন যে, বর্তমান অন্তবর্তী সরকার কিছু মৌলিক পরিবর্তনের জন্য একটি সংস্কার কমিশন গঠন করেছে। ৩২টি দলের সাথে পৃথকভাবে আলোচনা করেছে। এখন সম্মিলিতভাবে আলোচনা চলছে। মোট ১৭৭টি জায়গায় পরিবর্তনের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। এরমধ্যে ১২২টিতে সকল দল ঐক্যমত হয়েছে। যেসব মৌলিক বিষয়ে এখনো ঐক্যমত তৈরি হয়নি, সেসব বিষয়ে সকল দলকে একসাথ করে দিনের পর দিন আলোচনা চলছে। সকাল ১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত প্রায় প্রতিদিনই আমরা আলোচনা করি। এই যে কর্মযজ্ঞ এটার প্রধান কারণ হচ্ছে, বাংলাদেশের ভবিষ্যতকে আগামী প্রজন্মের বসবাসের উপযোগী করে, মাথা উচু করে দাঁড়ানোর মতো, শিরদাঁড়া শক্তি নিয়ে একটি স্বাধীন সার্বভৌম নৈতিকতা ঠিক রেখে একটি জাতি গঠন করা।
তিনি আরও বলেন, আমাদের দুর্ভাগ্য ৫৪ বছরে আমরা সেই রকম একটি কাঠামো তৈরি করতে পারি নাই। কতগুলো বিষয়ে আমাদের মধ্যে ঐক্যমত নেই। আমাদের জাতীয়তা কি? আমরা কি বাঙালী, বাংলাদেশী বা মুসলিম জাতীয়তাবাদী এ বির্তকের এখনো সমাধান হয়নি। এভাবে আমাদের আত্মপরিচয়ের ক্রাইসিস সঙ্কট চরম পর্যায়ে।
দলীয় পরিচয়ে চৌদ্দগ্রামের মানুষকে দেখবো না এমন মন্তব্য করে ডাঃ তাহের আরও বলেন, আগামী নির্বাচনে আল্লাহর ইচ্ছায় এবং আপনাদের ভোটে নির্বাচিত হলে আমি কোন দুর্নীতি করবো না এবং বৈষম্যহীন চৌদ্দগ্রাম গড়ে তুলবো। চৌদ্দগ্রামের উন্নয়নে আমরা সকলেই ঐক্যবদ্ধ।
চারটি বিষয়ে রাষ্ট্রের সাথে জামায়াতে ইসলামী একমত দাবি করে সাবেক এমপি ডাঃ তাহের বলেন, চারটি বিষয়ে আমরা রাষ্ট্রের সাথে ঐক্যমত। ১. বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় এখানে কোন আপোষ নেই। কারো রক্তচক্ষুকে আমরা ভয় করি না। ২. একটি টেকসই ওয়ার্কবেল ডেমোক্রেসি গড়ে তুলতে হবে। ৩. একটি সুষ্ঠু নির্বাচন অর্জন করা অপরিহার্য ও ৪. দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গঠন। কারণ, বাংলাদেশ থেকে যদি শুধু দুর্নীতি চলে যায়, আমরা তিন বছরে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হতে পারবো। দুর্নীতিবাজরা এই গরীব মানুষের বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার বিদেশে পাচার করছে। দুর্নীতি সাথে জড়িত ব্যক্তি যদি জামায়াতে ইসলামী হউন, আমরা তার ফাঁসি দাবি করবো। মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলার কোন অধিকার তার নেই।
তিনি বুধবার রাতে চট্টগ্রাম নগরীর লাভ লেইন মোড়ে স্মরণিকা কমিউনিটি সেন্টারে চট্টগ্রামস্থ চৌদ্দগ্রামবাসীদের সংগঠন ‘চৌদ্দগ্রাম ফাউন্ডেশন’ এর ঈদ পূণর্মিলনী, মিলনমেলা ও মেজবানী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। অনাড়ম্বর ও ঝাঁকঝমকপূর্ণ এই অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার প্রায় ২ হাজার লোকের সমাগম ঘটে। দীর্ঘদিন পর এমন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পেরে আগত সবার মাঝে উচ্ছ্বাস-উদ্দীপনা দেখা গেছে।
চট্টগ্রামস্থ চৌদ্দগ্রাম ফাউন্ডেশনের সভাপতি ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আলহাজ¦ মোঃ সাদেকের সভাপতিত্বে, বিশিষ্ট শ্রমিকনেতা মকবুল আহমেদ, সাবেক ছাত্রনেতা আবদুল কাইয়ুম মানিক, ব্যবসায়ী নুরুল আমিনের পরিচালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমীর নজরুল ইসলাম, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর আলাউদ্দিন শিকদার, মহানগরী সেক্রেটারী অধ্যক্ষ নুরুল আমিন, চৌদ্দগ্রাম উপজেলা জামায়াতের আমীর মাহফুজুর রহমান, সাবেক আমীর ভিপি শাহাব উদ্দিন, চৌদ্দগ্রাম পৌরসভা জামায়াতের আমীর মাও. মোঃ ইব্রাহিম, হাবের সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব মোঃ শাহআলম, ঢাকাস্থ চৌদ্দগ্রাম ফাউন্ডেশনের সেক্রেটারী আইয়ুব আলী ফরায়েজী, বিশিষ্ট্য শিল্পপতি মহিউদ্দিন আহমেদ ভূঁইয়া নঈম, কনকাপৈত ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন মজুমদার, বিশিষ্ট ইলেকট্রিক ব্যবসায়ী শাহ আলম মজুমদার, নূরুল আবছার, একেএম মমিনুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম, দুলাল মিয়া, হাজী মোঃ এয়াছিন, বিশিষ্ট ব্যাংকার মোঃ ইলিয়াছ, ডাইনামিক গ্রুপের চেয়ারম্যান মোঃ জসিম উদ্দিন, ডাঃ মঞ্জর আহমেদ সাকি, শাখাওয়াত হোসেন শামীম, যুব নেতা কাজী সাইফুল ইসলাম, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শফিউল ইসলাম জিয়া, নুরুল আলম, আবদুল্লাহ আল মামুন, আবদুল হান্নান, পাটোয়ারী সাইফুল ইসলাম, ফখরুল ইসলাম, সাইফুল্লাহ রায়হান, মনির উদ্দিন বাপ্পি ও আবদুর রহমান ফয়সাল প্রমুখ।